| বিকাল ৩:০৫ - মঙ্গলবার - ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সিলেটে মসজিদ পুনর্নির্মাণে ভারতীয় বাহিনীর বাধা, সীমান্তে উত্তেজনা

বাংলাদেশের সিলেটের বিয়ানীবাজারের গজুকাটা সীমান্ত এলাকায় ২০০ বছরের পুরনো মসজিদ পুনর্নর্মাণ কাজে বাধা দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এ নিয়ে সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

 

সীমান্ত এলাকার নো-ম্যান্স ল্যান্ডে বাঙ্কার খনন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ভারতীয় বিএসএফ। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি জওয়ানরাও সীমান্তে শক্তি বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে।

 

বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. শাহ আলম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, ভারতীয় বাহিনী জিরো লাইনের ১৫০ গজের ভেতরে প্রবেশ করে কোনো ধরনের বাধা প্রদান করতে পারে না। তারা সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে ২০০ বছরের পুরনো মসজিদ পুনর্নির্মাণ কাজে বাধা প্রদান করেছে।

 

দেখা যায়, বিয়ানীবাজার উপজেলার গজুকাটা সীমান্ত এলাকার ১৩৫৭নং পিলারের ভিতরে বাংলাদেশ অংশে গজুকাটা গ্রামের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ২০০ বছরের পুরনো পাকা ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এলাকাবাসী পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেন।

 

দুবাগ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আফতাব উদ্দিন বলেন, ২০১৮ সালে মসজিদ নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রামবাসী নেওয়ার পর তারা বিজিবির সহায়তা চান।

 

 

তৎকালীন বিজিবি-৩২ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার বিএসএফের কমান্ডারের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে মসজিদ নির্মাণের সিদ্ধান্ত হলে তারা নির্মাণ কাজ শুরু করেন।

 

কিন্তু নির্মাণ কাজের নিচের অংশের পিলারসহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষে ছাদ ঢালাইয়ের জন্য প্রস্তুতির একপর্যায়ে বিএসএফ সরাসরি বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করে মসজিদ নির্মাণ কাজে বাধা প্রদান করে।

 

এদিকে দীর্ঘ তিন বছর পর গত সপ্তাহে বিজিবি-৫২ এর সঙ্গে বিএসএফের বৈঠকে মসজিদটি পুনর্নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা হয় এবং তা করতে বিএসএফ বাধা প্রদান করবে না বলে আশ্বস্ত করে। এতে মসজিদ নির্মাণের কাজ ফের শুরু করলে শনিবার বিকালে বিএসএফ তাতে বাধা প্রদান করে।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ নিয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানালেও বিএসএফ তাতে সায় না দিয়ে সীমান্ত এলাকায় শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি বাঙ্কার খনন করে শক্ত অবস্থান নেয়। বিজিবি পাল্টা অবস্থান নিয়ে তাদের জবাবের প্রস্তুতি হিসেবে সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করছে।

 

মসজিদের ইমাম হাফিজ বিলাল আহমদ জানান, বিএসএফের বাধার পর থেকে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে এলাকাবাসী জানিয়েছেন, যে কোনো মূল্যে তারা মসজিদ নির্মাণ করতে প্রস্তুত রয়েছেন।

 

দুবাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, ২০০ বছরের প্রাচীন এই মসজিদ নির্মাণ কাজে আমাদের সহযোগিতা রয়েছে। বিএসএফ মসজিদ নির্মাণ কাজে বাধা প্রদান ও নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ায় ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

 

এ বিষয়ে বিজিবি-৫২ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. শাহ আলম সিদ্দিকী যুগান্তরকে জানান, বিএসএফ সীমান্তের ১৫০ গজের ভেতর মসজিদ নির্মাণ কাজে কোনোক্রমেই বাধা প্রদান করতে পারে না। বিএসএফ এখানে বাধা দিয়ে অন্যায় করছে।

 

তিনি বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে যে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে তারা প্রস্তুত রয়েছেন।

 

তিনি আরও জানান, গজুকাটা সীমান্তসহ তার আওতাধীন সব এলাকায় বিজিবির শক্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

 

সুত্রঃ যুগান্তর

সর্বশেষ আপডেটঃ ৮:৫৫ অপরাহ্ণ | মার্চ ২৩, ২০২১