| দুপুর ২:৫০ - বৃহস্পতিবার - ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

পরকীয়া প্রেমিকার হাতে ৫ টুকরা হলেন যুবক

বয়স্ক স্বামী আর তাই এক যুবককে পরকীয়ার জন্য জুটিয়ে নেন স্ত্রী। অনেকদিন ধরেই সেই যুবকের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে আসছেন প্রেমিকা। সম্পর্কের টানাপোড়েনে প্রেমিককেই হত্যা করে হাত পা কেটে পুরো লাশটি ৫ টুকরো করে বাসায় ফেলে রাখেন। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে প্রেমিকা শাহনাজ পারভীনকে।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর স্বামীবাগের কে এম দাস লেন এলাকার একটি বাড়ির চারতলায় এই ঘটনা ঘটেছে।

 

পুলিশ জানিয়েছে, নিহত প্রেমিকের নাম সজিব হাসান (৪০)। ওই প্রেমিকার স্বামী বয়স্ক হওয়ায় সজিবের সঙ্গে তিনি অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলে দাবি করছেন। প্রেমিকার বয়স আনুমানিক বয়স আনুমানিক ৪৫ থেকে ৪৭ এর মধ্যে।

 

ওয়ারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। এই ঘটনা ওই প্রেমিকাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সম্প্রতি তাদের অবৈধ সম্পর্কে ভাটা পড়ায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করছেন গ্রেফতারকৃত প্রেমিকা শাহনাজ পারভীন। তিনি বিবাহিতা।

 

ওয়ারী ডিভিশনের (ডিসি) শাহ ইফতেখার আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ওই চারতলা থেকে সজীবের পাঁচ খণ্ড মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। আটক নারীর সঙ্গে সজীবের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। ওই নারী বুটিকের কাজের কথা বলে প্রায়ই সজীবের বাসায় যেতেন।

 

প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, টাকা-পয়সার বিষয় নিয়ে সজিবের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে ছুরি দিয়ে ওই নারীকে আঘাত করেন সজিব। এতে ওই নারীর হাত কেটে যায়।

 

পরে পারভীন ছুরি কেড়ে নিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে সজীব ঘটনাস্থলে মারা যান। পরে তার দুই পা, দুই হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে ফেলেন। আমরা সংবাদ পেয়ে সজিবের মরদেহ উদ্ধার করি। ’ বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

 

অন্যদিকে ওই নারী পুলিশের কাছে অভিযোগ করে বলেছেন, ড্রেসে পুঁথি বসানো এবং বাসায় এসে কিছু ড্রেস দিয়ে যাওয়ার সুবাদে সজিব ওই নারীর বাসায় আসা-যাওয়া করতেন। এ সুযোগে সজিবের সঙ্গে তার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়।

 

বিষয়টি নিয়ে এর আগে সজিবকে বেশ কয়েকবার সতর্কও করেছেন ওই নারী। এরপরও সজিব থেমে থাকেননি। বরং তার মেয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের আশায় বারবার বাসায় যাওয়া-আসা করতেন। এ অবস্থায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি কাপড়-চোপড় ব্যাগে ভরে নিয়ে ওই নারী কাউকে না জানিয়ে সজিবের বাসায় ওঠেন। এরমধ্যে ওই নারীর স্বামী স্ত্রীকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে থানায় জিডি করেন।

 

বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ওই নারী তার স্বামীকে ফোন করে বলেন, ‘আমি কে এম দাস রোডের এই বাসায় আছি। এখানে মহাবিপদে আছি। তুমি এসে আমাকে নিয়ে যাও।

 

ওই নারীর স্বামী থানায় আগেই জিডি করেছিলেন তাই তিনি থানা পুলিশকে জানান যে, তার স্ত্রী কল করে সহায়তা চেয়েছে। তখন পুলিশ তার স্বামীকে নিয়ে ওই বাসায় গিয়ে দেখেন, পাঁচ টুকরো মরদেহের সামনে ওই নারী বসে আছেন।’

 

মরদেহ উদ্ধারের সময় ছিলেন ওয়ারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তরিকুল হাসান সোহাগ। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আটক নারীর সঙ্গে সজীবের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। কে এম দাস লেনে তার বাসা। সজীবও কে এম দাস লেনে থাকতেন। বুটিকসের কাজের কথা বলে সজীবের বাসায় প্রায় ওই নারী আসতেন।’

 

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি টাকা-পয়সা নিয়ে সজীবের সঙ্গে ওই নারীর ঝগড়া হয়। একইসঙ্গে ওই নারী ও তার মেয়ের সঙ্গে সজীবের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ নিয়েও সজীব ও ওই নারীর মনোমালিন্য দেখা দেয়। আজকে ঝগড়া এক পর্যায়ে সজিব প্রথমে ওই নারীকে ছুরিকাঘাত করেন। এতে ওই নারীর হাত কেটে যায়।

 

পরে ওই নারী সজিবের কাছ থেকে ছুরি কেড়ে নিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে সজিব ঘটনাস্থলে মারা যান। পরে তার দুই পা, দুই হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে ফেলে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৯:২২ অপরাহ্ণ | ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১