| সকাল ১০:৪৮ - বুধবার - ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২৮শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

পেটের দায়ে নয়, বিকৃত যৌনকামনা পূরণেই এই ভিক্ষুকের জীবন

দুমুঠো ভাত জোগাড় করতে ঘুরে বেড়াতে হয় দিকবেদিক, পেটের দায়ে অনেকে পেশা হিসেবে বেছে নেন ভিক্ষাবৃত্তি। সারাদিনে যা আসে তা দিয়েই কোনোরকমে চলে একজন ভিক্ষুকের জীবন। কিন্তু ভিক্ষাবৃত্তিকে নেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন ৬২ বছরের এনামুল হক বুলু।

 

ভিক্ষুকের ছদ্মাবরণে সড়কে চলাফেরা করা নারী-শিশু, স্কুল-কলেজের ছাত্রী, তরুণী ও যুবতীদের যৌন হয়রানি করাই ছিল এনামুলের মূল লক্ষ্য। প্রতিদিন বিকৃত যৌনকামনা চরিতার্থ করার জন্যই এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত চষে বেড়াতেন।

 

এনামুল হক বুলু নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালীনগর গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে। তবে তিনি রাজশাহী মহানগরীর পাচানীর মাঠ শেখের চক এলাকায় পরিবার নিয়ে সেলিমের বাসায় ভাড়া থাকেন। তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।

 

নগরীর সাহেব বাজার আরডিএ মার্কেট এলাকায় রয়েছে তার ছেলের বড় দোকান। এত কিছু থাকতেও সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট, আরডিএ মার্কেট ও সোনাদীঘির মোড়সহ বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় ভিক্ষা করতেন এনামুল হক বুলু।

 

বয়স বাড়লেও এনামুলের মানসিক কোনো সমস্যা নেই। নেই কোনো শারীরিক প্রতিবন্ধিতাও। কেবল বিকৃত যৌনকামনা পূরণের জন্যই তিনি এ কাজটি করতেন। সোমবার ভোরে মহানগরীর পাচানীর মাঠ এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে এনামুলকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।

 

গ্রেফতারের পর এনামুলকে সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। এ সময় প্রেস ব্রিফিং করেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস।

 

তিনি বলেন, ওই ভিক্ষুকের একটি ভিডিও ক্লিপ রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিষয়টি পুলিশেরও নজরে আসে। এরপর তাকে গ্রেফতারের জন্য মাঠে নামে পুলিশের একটি চৌকস দল।

 

 

 

বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের পর রোববার রাতভর তাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হয়। শেষ পর্যন্ত সোমবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে মহানগরীর পাচানীর মাঠ শেখের চক এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে এনামুলকে গ্রেফতার করা হয়।

 

এরপর এনামুলকে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই ভিক্ষুক রাস্তায় চলাচলকারী নারী-শিশুদের অভিনব কায়দায় যৌন হয়রানি করে আসছিলেন। ভিক্ষাবৃত্তির ছদ্মাবরণে তিনি নারী-শিশুদের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিতেন।

 

এটি ছিল এনামুলের বিকৃত যৌনাচার। তাকে গ্রেফতারের খবরে এরই মধ্যে একজন ভুক্তভোগী নারী বোয়ালিয়া থানায় এসে তাকে শনাক্ত করেছেন।

 

তার বিরুদ্ধে ওই নারী যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগও করেছেন।

 

এ কারণে তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। এছাড়া সড়কে যৌন হয়রানি করার ভিডিও ফুটেজটি এরই মধ্যে প্রমাণস্বরূপ পুলিশের হাতে রয়েছে।

 

রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মন জানান, এনামুল একজন সচ্ছল মানুষ। বৃদ্ধ হলেও হাঁটতে-চলতে তার কোনো সমস্যা নেই। এছাড়া অন্য কোনো প্রতিবন্ধিতারও তথ্য মেলেনি।

সর্বশেষ আপডেটঃ ১:২৭ অপরাহ্ণ | জানুয়ারি ২৬, ২০২১