| বিকাল ৩:৩৭ - বুধবার - ২৭শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৩ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ১৬ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

ময়মনসিংহে অচেতন করে পর পর সাত বাড়িতে লুটপাট, খোয়া যাচ্ছে টাকা ও স্বর্ণালংকার

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল রাজিবপুর ইউনিয়নে রাতের আঁধারে বাড়ি বাড়ি ঘটছে লুটপাটের ঘটনা, খোয়া যাচ্ছে টাকা ও স্বর্ণালংকার। আর লুটপাটের জন্য সেসব বাড়ির লোকদের করা হচ্ছে অচেতন। তবে কীভাবে অচেতন হচ্ছেন সে হিসেব মিলাতে পারছেন না ভুক্তভোগীরা।

 

তিন দিনে সাতটি বাড়িতে হানা দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। দুটি বাড়িতে সফল হতে না পারলেও পাঁচটি বাড়িতে চালানো হয়েছে ব্যাপক লুটপাট। তবে অপরাধীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী, বাসিন্দাদের মাঝে ছড়াচ্ছে আতঙ্কও।

 

জানা যায়, ঘটনার শুরু ১০ জানুয়ারি রাতে। রাজিবপুর ইউনিয়নের রাজারামপুর গ্রামের চানু মেম্বারের বাড়ির লোকজন সন্ধ্যা নামতেই অচেতন হয়ে পড়েন।

 

এরপর রাত ১২টার দিকে কিছুটা জ্ঞান ফিরলে তারা দেখতে পান দরজা খোলা, আলমারির তালা ভাঙা। তিনটি কক্ষ থেকে লুটপাট করা হয়েছে পাঁচ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার।

 

বাড়ির সদস্য রোবাইয়া ইয়াসমিন বলেন, দুপুরের খাওয়ার পর থেকেই আমার ও মায়ের শরীর দুর্বল হয়ে যায় ও ঘুম ঘুম অনুভব করি। এ অবস্থাতেই আমরা বাড়ির অন্যান্য কাজকর্ম সারি। তবে সন্ধ্যা হতেই কখন কীভাবে ঘুমিয়ে পড়ি তা বলতে পারি না।

 

পরে আমার ভাই নূরে আলম সিদ্দিকী বাবলু বাড়িতে ফিরে দেখেন ঘরের দরজা খোলা। ভেতরের জিনিসপত্র এলোমেলো। নেই জমি কেনার জন্য রাখা প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালংকার।

 

ওই রাতেই একই কায়দায় লুটের ঘটনা ঘটে পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ মাইজহাটি গ্রামের রোকন উদ্দিন ভূঁইয়ার বাড়িতে ও মগটুলা ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামের নেসার উদ্দিনের বাড়িতে।

 

পরদিন ১১ জানুয়ারি বিল খেরুয়া গ্রামে ঘটে ফের একই ঘটনা। এদিন তারা হানা দেয় স্থানীয় এক ব্যাংক কর্মকতা আবুল খায়ের ও এক কৃষক গোলাম মহিউদ্দিনের বাড়িতে।

 

এরপর ১৪ জানুয়ারি মাইজহাটি এলাকায় ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বাবুলের বাড়িতে চলে লুটপাট, অচেতন করা হয় আক্রাম হোসেন নামে এক স্কুল শিক্ষকের পরিবারকেও।

 

প্রত্যেকটি ঘটনায় অচেতন ছিল বাড়ির সব সদস্য। ভুক্তভোগীরা বলছেন, কীভাবে তারা সবাইকে অচেতন করা হচ্ছে তা কোনোভাবেই বুঝে উঠতে পারছেন না।

 

দেখা গেছে, লুটপাট হওয়া প্রতিটি বাড়িতেই ফেলে যাওয়া হয়েছে লবণ, হলুদ, মরিচ ও ধনিয়ার গুঁড়া। বাড়ির পাশের জঙ্গলে ফেলে যাওয়া সেসব গুঁড়ার আলামতও মিলেছে। তবে এর রহস্য উদঘাটন করতে পারছে না কেউ।

 

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আলিম ফকির বলেন, মনে হচ্ছে স্থানীয় কোনো চক্র এখানে কাজ করছে। যারা এসব বাড়িতে আনাগোনা করে তাদের ছাড়া তো এটি সম্ভব হবে না। বাইরে থেকে কাউকে আনলেও মূল কাজটি স্থানীয় কিছু লোকজনই করছে। তাদেরকে শনাক্ত করতে পারলেই রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।

 

এ ব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে ওইসব বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কীভাবে এসব ঘটনা ঘটছে, তা আমরা আমাদের মতো করে তদন্ত করে দেখছি।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৯:৩৯ অপরাহ্ণ | জানুয়ারি ২৩, ২০২১