ময়মনসিংহের কিশোরী তানিয়া গৃহকর্মীর কাজে গিয়ে ফিরলেন লাশ হয়ে
দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে সবার বড় তানিয়া (১৭)। অভাবের সংসারে দিনমজুর বাবা অসুস্থতার কারণে কয়েক মাস ধরে কাজে যেতে না পারায় সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে মাসে ছয় হাজার টাকা বেতনে ঢাকায় গৃহকর্মীর কাজ নেন তানিয়া।
তবে, সাড়ে তিন মাস যেতেই বাড়িতে লাশ হয়ে ফিরলেন তানিয়া। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের মারুয়াখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ জানায়, সাড়ে তিন মাস আগে মাসে ছয় হাজার টাকা বেতনে ঢাকার বনানীর এক বাসায় গৃহকর্মীর কাজে যান তানিয়া। পাশের গ্রামের আবদুল কাদির বনানীর ওই বাসায় তাকে কাজে নিয়ে যান। কাজে যোগ দেয়ার পর গত আড়াই মাস আগে তার বাবাকে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন তানিয়ার গৃহকর্ত্রী। পরে আর টাকা পাঠাননি তিনি।
এর মধ্যে গত শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে গৃহকর্ত্রী বদরুন নাহার ফোনে তানিয়ার বাবা তোতা মিয়াকে বলেন, ‘আপনার মেয়ে খুব অসুস্থ, দ্রুত ঢাকার বনানীতে আসেন।’
খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ঢাকার পথে রওয়ানা দেন। কিন্তু গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকায় যেতেই বিকেলে আবারও ফোন আসে তানিয়ার বাবার ফোনে। তাদের বলা হয় তানিয়াকে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে।
ওই সময় তানিয়ার বাবা তাদের অবস্থানের কথা জানালে সেখানেই তাদের অপেক্ষা করতে বলা হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে একটি অ্যাম্বুলেন্স এসে থামে পরিবারটির কাছে। ভেতরে ছিল তানিয়ার নিথর দেহ। সঙ্গে ছিলেন গৃহকর্ত্রী বদরুন নাহার।
সেখান থেকে গৃহকর্ত্রী বদরুন নাহার পালিয়ে যেতে চাইলেও কৌশলে তাকে তানিয়াদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে শনিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে স্থানীয়রা বদরুন নাহারকে আটক করে পুলিশে খবর দেন।
পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় বদরুন নাহারকেও আটক করে পুলিশ।
মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন করে আঠারবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এস আই মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘নিহতের বাম কান ফোলা। নাক ও কান দিয়ে রক্ত বের হওয়ার আলামত পাওয়া গেছে। তবে শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল কাদের মিয়া বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আটক গৃহকর্ত্রীকে ৫৪ ধারায় রোববার আদালতে পাঠানো হবে।’
সুত্রঃ জাগো নিউজ