বালু মহলের রয়্যালিটির নামে অতিরিক্ত আদায়
বালুবাহি ট্রাক পরিবহন অনির্দিষ্ঠকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা
ডেস্ক রির্পোট: নেত্রকোনা দূর্গাপুরে দীর্ঘদিন যাবৎ বালু মহলের ইজারাদারদের স্বেচ্ছাচারিতায় রয়্যালিটির নামে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে ১০/১৫ গুন বেশি হারে রয়্যালিটি নেয়ায় সকল বালুবাহী ট্রাক গাড়ি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করেছে সংশ্লিষ্ঠরা।
ময়মনসিংহ জেলা মটর মালিক সমিতি, ময়মনসিংহ জেলা মোটরযান কর্মচারী ইউনিয়ন, নেত্রকোনা জেলা ট্রাক কাভার ভ্যান ট্যাংক লরি মালিক সমিতি, নেত্রকোনা জেলা মোটরযান কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, র্দীঘদিন যাবৎ নেত্রকোনা দূর্গাপুরের বালু মহলে ইজারাদারগণ সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে ১০/১৫ গুন বেশি হারে রয়্যালিটি গ্রহন করে আসছে। যে কারনে অত্রাঞ্চলের বালুর দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধিতে অত্রাঞ্চলের মূল্যবান এই সম্পদটি বাজারজাতে বাধার কারনে এর সাথে সংশ্লিষ্ট নির্মাণ শিল্প বালু শ্রমিক, পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা দারুন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
রয়্যালিটির নামে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার প্রতিবাদ করলে বিভিন্নভাবে পরিবহন শ্রমিকরা লাঞ্চিত ও অত্যাচারের সম্মুখীন হচ্ছে। ফলে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে দীর্ঘদীন যাবৎ অসন্তোষ বিরাজ করছে।
ময়মনসিংহ জিলা মটর মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সাহা বলেন, বিষয়টি সমাধোনে গত ৮ জুলাই ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রত্যাশিত সমাধান না পাওয়ায় নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের চারটি সংগঠনের মালিক-শ্রমিকরা বালুবাহি গাড়ী চালানোর অপারগতা প্রকাশ করে।
গত ১২ জুলাই এ চারটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মতামত ও সিদ্ধান্তে ১৫ জুলাই থেকে নেত্রকোনা দূর্গাপুরের সকল বালুবাহী ট্রাক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলা মটর যান কর্মচারী ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক আদব আলী জানান, ময়মনসিংহ জিলা মটর মালিক সমিতি, ময়মনসিংহ জেলা মটর কর্মচারী ইউনিয়ন, নেত্রকোনা জেলা ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-ট্যাংক লরী মালিক সমিতি ও নেত্রকোনা জেলা মটর যান কর্মচারী ইউনিয়ন আমরা যৌথভাবে বৈঠক করি।
বিষয়টি নিস্পত্তি করতে ও সরকার নির্ধারিত হারে রয়্যালিটি গ্রহনের জন্য গত ১৫ জানুয়ারি এবং ১৭ জুন পর পর দুই বার নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেই। নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলেও এখনোও এর সমাধান হয়নি। যে কারণে মালিক-শ্রমিকদের অসন্তোষ ও চাপের মুখে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
নির্ধারিত রয়্যালিটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার ও স্থানীয় এক শ্রেনির অসাধু মহল হাতিয়ে নিচ্ছে বিরাট অঙ্কের টাকা। প্রতি বালু ভর্তি ট্রাক সাড়ে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা রয়্যালিটি, আমদানী-রপ্তানী সমিতি দুইশত টাকা, স্থানীয় স্কুল প্রাঙ্গন সড়ক ব্যবহারে তিনশত টাকা ও স্থানীয়দের আধিপত্যের নামে দুইশত টাকা এবং প্রাপ্তি স্বাক্ষর বিহীন কোন স্লিপ না দেয়ায় বালু উত্তোলন থেকে গন্তব্য পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অন্যায়ভাবে অহেতুক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অসাধু মহল।
এ নিয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিক অসোন্তষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। সরকার ও সংশ্লিষ্ঠ মহল বিষয়টি সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিবে এমন প্রত্যাশা সকলের।