| সকাল ৯:৫৪ - শনিবার - ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ময়মনসিংহের উৎপাদন ও চাষ হচ্ছে নিষিদ্ধ পিরানহা

লোক লোকান্তরঃ  ময়মনসিংহের ত্রিশাল ও ভালুকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চাষ করা হচ্ছে বিক্রি নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ। এ মাছগুলো রাক্ষুসে স্বভাবের হয়।

 

বাংলাদেশের পরিবেশের সঙ্গে পিরানহা ও আফ্রিকান মাগুর মাছ সংগতিপূর্ণ নয়।  অন্য মাছ ও জলজ প্রাণীদের খেয়ে ফেলে। দেশীয় প্রজাতির মাছ তথা জীববৈচিত্র্য জন্যও এগুলো হুমকি স্বরূপ।

 

এ কারণে সরকার ও মৎস্য অধিদপ্তর আফ্রিকান মাগুর ও পিরানহা মাছের পোনা উৎপাদন, চাষ, বংশ বৃদ্ধিকরণ,বাজারে ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে। গত ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের জুন মাসে আফ্রিকান মাগুরের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

 

মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ময়মনসিংহের ত্রিশাল, ভালুকা ও কুমিল্লার বিভিন্ন অঞ্চলের ডোবা বা পুকুরে পিরানহার উৎপাদন ও চাষ করা হচ্ছে।

 

আর আফ্রিকান মাগুরের চাষ হচ্ছে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর ও নারায়ণগঞ্জের অব্যবহৃত পরিত্যক্ত ডোবা ও নালায়।

 

বিক্রির উপযুক্ত হলে ট্রাকযোগে এসব মাছ দেশের বিভিন্ন মাছের আড়ত ও বাজারে পাঠানো হয়। এ রাক্ষুসে পিরানহা বাজার ভেদে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি ও আফ্রিকান মাগুর বাজারভেদে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

 

বিভিন্ন বাজার থেকে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত অঞ্চলের বাজারগুলোতে কিছু অসাধু বিক্রেতা এসব মাছ বিক্রি করছেন। আর এই মাছে ক্রেতারা হচ্ছেন সাধারণ ও নিম্ন ম্যধ্যবিত্তরা।

 

দেশি বা থাই রুপচাঁদা অথবা ‘সামুদ্রিক চান্দা’ নামে পিরানহা আর দেশি মাগুর বলে ছোট আকারের আফ্রিকান মাগুর বিক্রি করতে দেখা গেছে বিভিন্ন হাট বাজারে।

 

 

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি বাজারে দেখা যায়, পিরানহা মাছের সরবরাহ প্রতিটি বাজারে কম বেশ বিক্রয় হচ্ছে। পিরানহা মাছ সম্পর্কে সাধারণ মানুষ কিছুই জানেন না।

 

ঢাকা- সিলেট মহাসড়কের আউশকান্দি- হীরাগঞ্জ বাজার, বাংলা বাজার, সৈয়দপুর বাজার, ইনাতগঞ্জ, শেরপুর, নবীগঞ্জসহ আরো অনেকে হাট বাজারে মাছ বিক্রেতারা দেদারছে বিক্রয় করে আসছেন।

 

মাছ কিনতে আসা মুদি ব্যবসায়ী মখতব মিয়া, বৃক্ষচাষী আব্দুল গনি (ওসমানী), ডাক্তার পলাশ চৌধুরী, ওয়ার্কসপ ইঞ্জিনিয়ার হুমায়ূন, ব্যবসয়ী রাজু আহমদ, হাজী চাঁদ মিয়া, আল আমিন, ক্বারী আব্দুল কাইয়ুম, শ্রমিক নেতা লিটন মিয়াসহ আরো অনেকেই বিভিন্ন হাট বাজার থেকে রুপচাঁদা মাছ কম দাম হওয়ায় ক্রয় করে নিয়ে আসছেন।

 

এই মাছের কেজি কত জানতে চাইলে মাছ বিক্রেতারা বলেন, ২০০ টাকা কেজি। এতে কেউ ১৭০, ১৮০ ও ১৫০ টাকায় মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। পরে জানা যায় এগুলো পিরানহা।

 

এনিয়ে কয়েকজন মাছ বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই এলাকায় কয়েক মাস ধরে প্রায়ই আফ্রিকান মাগুর ও পিরানহা মাছ বিক্রিয় করা হচ্ছে। দাম কম বলে নিম্ন আয়ের মানুষ এসব মাছ কিনেছেন।

 

কোন আড়ত থেকে এসব মাছ নিয়ে এসেছেন জানতে চাইলে বলেন শেরপুর আড়ত থেকে তারা এই মাছগুলো আনেন। পিরানহা মাছে খেলে বা বিক্রয় করলে কি হয় তা তাদের জানা নেই।

 

কয়েকজন বিক্রেতা জানান, এই মাছ বিক্রয়ে যে নিষেধ, তা তারা জানেন না। তবে আশপাশের মাছ বিক্রেতাসহ আরো অনেকেই বলেন, প্রায় দিনই বিভিন্ন হাট বাজারে এই পিরানহা মাছ বিক্রিয় হচ্ছে। কম দাম হওয়ায় ও রূপচাঁদা মাছ মনে করে এই পিরানহা মাছ বাজার থেকে ক্রয় করে রান্না করেছেন অনেকেই।

 

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি।

 

নবীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আছাদ উল্লাহ’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই মাছ অনেক ক্ষতিকর তা অনেকেই জানেন না। যদি কোনো খবর পাই যে, পিরানহা মাছ কোনো বাজারে বা আড়তে বিক্রয় হচ্ছে তাহলে আমরা তাৎক্ষণিক প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সুত্রঃ কালের কণ্ঠ

সর্বশেষ আপডেটঃ ৯:৩০ অপরাহ্ণ | জুন ০৫, ২০২০