ময়মনসিংহে চাল চুরির ঘটনায় একজনের জেল, ৫ মামলা ও গ্রেফতার ৩
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ময়মনসিংহে করোনা ভাইরাসও থামাতে পারছেনা অসহায় দরিদ্রদের চাল চুরি। একের পর এক চুরির ঘটনা বেড়েই চলছে। গৌরীপুর , তারাকান্দা, মুক্তাগাছা উপজেলায় এধরনের চাল চুরির ঘটনা সামনে এসেছে।
১৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার গৌরীপুরে কালোবাজারে চাল বিক্রির অভিযোগে ডিলারসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ১৭০ কেজি চাল জব্দ করা হয়েছে। এঘটনায় গৌরীপুর খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিপ্লব কুমার সরকার বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্র জানা যায়, বৃহস্পতিবার ২টি প্লাস্টিকের বস্তায় বোকাইনগর ইউনিয়নের কালিবাড়ীর রফিক মিয়ার পুত্র মোঃ রিয়াজ মিয়া (২০) ও লুটন রাজবরের পুত্র মহেশ রাজবর (৪৫) চাল নিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেঁজুতি ধর ও গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বোরহান উদ্দিন বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
তারা জানায় যে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ডিলার কালীপুর মধ্যম তরফের হাবিবুর রহমানের পুত্র মোঃ মাহবুবুর রহমান শাহিন (৪৫) ও বোকাইনগর ইউনিয়নের মেম্বার বালুচড়া গ্রামের আবু সাঈদ সাহেদের পুত্র স্বপন মিয়ার কাছ থেকে এনেছে। এরপর অভিযান চালিয়ে পুলিশ ডিলার শাহীন, রফিক ও মহেষকে গ্রেফতার করে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আরো জানান, অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ইউপি সদস্য স্বপন মিয়ার ও ডিলার মাহবুবুর রহমান শাহিনের পরস্পর যোগসাজসে সরকার কর্তৃক দরিদ্র ও অসহায় ব্যক্তিদের বিপর্যয়কালীন সময়ে জীবন রক্ষার্থে সরকারি কোষাগার হইতে ভর্তুকি দিয়া ১০ টাকা কেজি মূল্যের বিতরণের জন্য প্রদত্ত চাল কালোবাজরে পাচার করে বেশি দামে বিক্রি করছিলো।
গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বোরহান উদ্দিন জানান, মোঃ রিয়াজ মিয়া (২০), মহেশ রাজবর (৪৫), মাহবুবুর রহমান শাহিন (৪৫) ও মোঃ স্বপন মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে স্বপন মিয়া ছাড়া ৩জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বপনকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
মাহবুবুর রহমান শাহীন জানান, মেম্বার স্বপন মিয়া মহেষকে ১৮টি কার্ড দিয়ে পাঠায়। সেই কার্ডের চাল ক্রয় করেছে রিয়াজ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেঁজুতি ধর জানান, ঘটনাস্থল থেকে ১৭০ কেজি চাল জব্দ করা হয়েছে।
অপরদিকে তারাকান্দায় অভিযান পরিচালনা করে গালাগাও বাজারের চাল ব্যবসায়ী এমদাদুলের ঘর থেকে ১৪ বস্তায় ৬৩০ কেজি চাল জব্দ করে। তার বাড়ি জেলা সদরের চর বড়বিলা গ্রামে। সে শ্বশুড়বাড়ি থেকে ব্যবসা করছিল। এমদাদুল পলাতক রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে তারাকান্দা থানার ওসি আবুল খায়ের জানান।
এদিকে বুধবার মুক্তাগাছায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ১০ টাকা কেজির ১১ বস্তা চাল আত্মসাতের দায়ে দাওগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজনু সরকারের ছোট ভাই ওএমএস ডিলার গুলশান সরকারকে ৩ দিনের জেল ও ৩০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবিদুর রহমান এ শস্তি প্রদান করেন।
এছাড়া ৪৭ বস্তা চাল আত্মসাতের অভিযোগে দাওগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার উদ্দিন মামুন ও ২১ বস্তা চাল আত্মসাতের অভিযোগে তারাটি ইউনিয়নের দুই ডিলার কথিত আওয়ামীলীগ নেতা ফরিদ ও শফিকুল ইসলাম বিপ্লবের নামে মামলা হয়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা সুফি আফজালুর আলম বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। গুলশান সরকারকে জেলে পাঠানো হয়েছে।