| রাত ১০:১৮ - শনিবার - ১৩ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৩০শে চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ৩রা শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

মিরাজের কাছে ধরাশায়ী হয়ে ফলোঅনে উইন্ডিজ

লোক লোকান্তরঃ  উইকেট থেকে দারুণ সহায়তা পাচ্ছেন স্পিনাররা। বল টার্ন কম করলেও ভীষণ স্কিড করছে। এর পুরো ফায়দা লুটছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

 

তার বল পড়তেই পারছেন না সফরকারী ব্যাটসম্যানরা। বলির পাঁঠা হয়ে একে একে ফিরছেন তারা। ১১১ রাত করেই শেষ হয় উইন্ডিজ ইনিংস। তৃতীয় দিনের খেলার শুরুর এক ঘন্টারও কম সময়ে গুটিয়ে যায় সফরকারীদের উইন্ডিজ। মেহেদী হাসান মিরাজ ১৬ ওভার বল করে ৫৮ রানের বিনিময়ে নিয়েছেন ৭ উইকেট।  বাকি ৩ উইকেট নিয়েছেন টাইগার কাপ্তান সাকিব আল হাসান।

 

দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উইন্ডিজের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। চলছে তৃতীয় দিনের খেলা।

 

প্রথমবারের মতো প্রতিপক্ষকে ফলোঅন করালো বাংলাদেশ

১৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে একবারই প্রতিপক্ষকে ফলোঅনে ফেলার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেটা ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে। সেবার অবশ্য জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন করায়নি স্বাগতিকরা। ফলে ইনিংস ব্যবধানে জেতার সুযোগও হয়নি।

 

এক মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিপক্ষকে ফলোঅনে ফেলার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। এবার প্রতিপক্ষ উইন্ডিজ। জিম্বাবুয়েকে না করালেও এবার উইন্ডিজকে ঠিকই ফলোঅন করাচ্ছে বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে ১৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইনিংস ব্যবধানে জেতার হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশকে।

 

সাকিব-মিরাজের ঘূর্ণিতে ১১১ রানে থামলো উইন্ডিজ

মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসানের স্পিন ঘূর্ণিতে ১১১ রানেই গুটিয়ে গেল উইন্ডিজ। দশটি উইকেট ভাগ করে নিয়েছেন মিরাজ-সাকিব। মিরাজের ঝুলিতে জমা পড়েছে সাতটি আর সাকিব নিয়েছেন তিনটি উইকেট।

 

শেষ আঘাত সাকিবের

উইন্ডিজের শেষ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফেরালেন সাকিব। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন শেরমান লুইস। কিন্তু বল তার ব্যাট ফাঁকি দিয়ে আঘাত হানে প্যাডে। আবেদন জানাতেই সাড়া দেন আম্পায়ার। যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন শেরমান। কিন্তু তবুও বাঁচতে পারেননি তিনি।

মিরাজের সাত আর সাকিবের তিন উইকেটে উইন্ডিজ গুটিয়ে গেল ১১১ রানেই।

 

টানা তিন ওভারে উইকেট নিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অফ স্পিনারকে উড়ানোর চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন কেমার রোচ।

মিরাজকে স্লগ করে লং অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন কেমার রোচ। কিন্তু টাইমিং হয়নি। অনায়াসে বুটি তালুবন্দী করেন লিটন দাস। এটা মিরাজের ষষ্ঠ উইকেট। এ নিয়ে ক্যারিয়ারের চতুর্থবারের মতো ছয় উইকেট পেলেন মিরাজ।

 

টানা দুই ওভারে মেহেদী মিরাজের উইকেট। ডানহাতি এই অফস্পিনারের বলে কাট করেছিলেন দেবেন্দ্র বিশু। বল গিয়ে লাগে সোজা সিলি পয়েন্টে সাদমানের বুকে। সেখান থেকে জমে যায় হাতে। সাজঘরে ফিরে যান বিশু। এটা মিরাজের পঞ্চম উইকেট। ১৮ টেস্টে এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো পাঁচ উইকেট হলো তার।

 

আগের বলেই এলবিডব্লিউর আবেদন জানিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আম্পায়ার সাড়া দেননি। তবে পরের বলে আর বাঁচতে পারেননি তিনি। মেহেদী মিরাজের বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে গেছেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান শিমরন হিটমেয়ার। এই ইনিংসে এটা মিরাজের চতুর্থ শিকার।

আউট হওয়ার আগে ৫৩ বলে ৩৯ রান করেন হিটমেয়ার। তার আউটের মধ্য দিয়ে ভাঙ্গে ৫৭ রানের জুটি।

 

মাহমুদউল্লাহর বীরত্বে বাংলাদেশের ৫০৮

সহঅধিনায়কের ব্যাটে চড়ে প্রথম ইনিংসে ১৫৪ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে স্কোরকার্ডে ৫০৮ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ১৩৬ রান। টেস্টে এটাই তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। এ ছাড়া ৩৯ বলে ৬ চারে ৮০ রান করেন অধিনায়ক সাকিব।

এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো উইন্ডিজের বিপক্ষে পাঁচশ’ রান করল বাংলাদেশ। ২০১২ সালে এই শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই উইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৫৫৬ রান করেছিল বাংলাদেশ দল।

 

বাংলাদেশ একাদশ: সৌম্য সরকার, সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক, মোহাম্মদ মিথুন, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, লিটন দাস, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান।

 

উইন্ডিজ একাদশ: ক্রেইগ ব্রাথওয়েট (অধিনায়ক), কাইরন পাওয়েল, শাই হোপ, শিমরন হিটমেয়ার, রোস্টন চেজ, সুনীল আম্ব্রিস, শেন ডওরিচ, শেরমান লুইস, জোমেল ওয়ারিকেন, কেমার রোচ ও দেবেন্দ্র বিশু।

 

সর্বশেষ আপডেটঃ ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ | ডিসেম্বর ০২, ২০১৮