নিজ মেয়েকে যৌনপল্লীতে বিক্রি করায় বাবার কারাদণ্ড
লোক লোকান্তরঃ নিজ মেয়েকে যৌনপল্লীতে বিক্রির দায়ে বাবার সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। সোমবার দুপুরে যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক অমিত কুমার দে এ সাজা দেন।
সাজাপ্রাপ্ত শরিফুল ইসলাম (৪৩) যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার মৃত মো. বাবুর ছেলে। তিনি বর্তমানে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাঘারপাড়া উপজেলার ফুল মিয়ার মেয়ে সুফিয়া বেগমের সঙ্গে আসামি শরিফুলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের একটি মেয়ে সন্তান হয়।
মেয়ে জন্মের এক বছর পর পারিবারিক বিবাদের কারণে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে সুফিয়া খাতুন মেয়েকে নিয়ে তার বাবার বাড়িতে চলে যান।
বিবাহ বিচ্ছেদের ১৫ বছর পর গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি শরিফুল তার প্রাক্তন স্ত্রী সুফিয়া বেগমের বাড়িতে যান। তিনি বাবার দাবিতে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ১৬ বছরের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে চলে আসেন।
এরপর মেয়েকে আর ফেরত দেননি শরিফুল। অনেক খোঁজ-খবর করে মেয়ে ও শরিফুলকে কোথাও খুঁজে পাননি সুফিয়া।
ওই ঘটনার আট মাস পর বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির (বিএনডাব্লিউএলএ) সহযোগিতায় ওই মেয়েকে ফরিদপুরের একটি যৌনপল্লী থেকে উদ্ধার করা হয়। শরিফুল নিজের মেয়েকে গত বছরের ২২ মার্চ ওই যৌনপল্লীতে নিয়ে বিক্রি করে দেন।
এ বিষয়ে শরিফুলকে আসামি করে মেয়ের নানা ফুল মিয়া বাঘারপাড়া থানায় মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী (পিপি) ইদ্রিস আলী জানান, বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নানাবাড়ি থেকে মেয়েকে নিয়ে যান শরিফুল। পরে তাকে ফরিদপুরের একটি যৌনপল্লীতে নিয়ে বিক্রি করে দেন।
এরপর বিএনডাব্লিউএলএ’র সহযোগিতায় পুলিশ ওই মেয়েটিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে। এ ঘটনায় বাঘারপাড়া থানায় একটি মামলা হয়।
ওই মামলায় শরিফুলকে আদালত সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। মেয়েটি বর্তমানে বিএনডাব্লিউএলএ’র আশ্রয়ে রয়েছে।
বিএনডাব্লিউএলএ’র যশোরের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট নাসিমা খাতুন জানান, অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। এরপর আমাদের শেল্টার হোমে রেখে তাকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে। দেড় বছর ধরে মেয়েটি আমাদের আশ্রয়ে রয়েছে।