| বিকাল ৩:০৬ - বৃহস্পতিবার - ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

পাঁচটি কাজ কোরআনে কারিমের হক আদায়ে

লোক লোকান্তরঃ   আল্লাহতায়ালা দুনিয়াতে যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন মানুষকে সৎ পথের দিশা দেওয়ার জন্য। এরই ধারাবাহিকতায় হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শেষ নবী হিসেবে পাঠিয়েছেন এবং মানুষকে সৎ পথে আহ্বান করার জন্য তার ওপর শেষ কিতাব কোরআনে কারিম নাজিল করেছেন।

 

কোরআনে কারিম মানুষকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য নাজিল করা হয়েছে। মুসলমানদের কর্তব্য হলো- কোরআনে কারিম যথাযথভাবে তেলাওয়াত করা এবং কোরআনের দেখানো পথে জীবন পরিচালনা করা।

 

ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, পবিত্র কোরআনের ওপর ইমান, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও কোরআনে কারিমের অর্থ বোঝা- বিশেষ করে নিজ নিজ দৈনন্দিন জীবনের করণীয় বর্জনীয় সম্পর্কে কোরআনের নির্দেশনা জানা, কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমল করা ও কোরআনের পয়গাম অপরের কাছে পৌঁছে দেওয়া তথা পারিভাষিক অর্থে কোরআনের প্রতি দাওয়াতি কাজ সবার দায়িত্ব।

 

কোরআনে কারিমের এ বিষয়গুলো মনে-প্রাণে বিশ্বাস করলে আমরা দাবি করতে পারব- আমরা কোরআনে বিশ্বাসী। অনেক মুসলিম রয়েছেন যারা কোরআনকে এভাবে বিশ্বাস করেন না। পার্থিব রীতি অনুযায়ী তাদের পরিচিতি মুসলিম হলেও আল্লাহতায়ালার কাছে তারা মুসলিম নন।

 

আবার কিছু মুসলিম আছেন, যারা কোরআনকে সম্মানের চোখে দেখেন- তবে সন্দেহ পোষণ করেন যে, কোরআনের এত বিধি-নিষেধ মেনে চললে পার্থিব জীবনে সফলতা অর্জন হবে কিনা? এরা কোরআনকে সম্মান দেখানোর পরও কোরআনের প্রতি যথাযথ ইমান না থাকার কারণে তাদেরও কোরআনের প্রতি বিশ্বাসী বলা যাবে না।

 

ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, কোরআনের প্রতি সঠিকভাবে ইমান আনলে কোরআনের প্রতি ইমান আনার হক আদায় হবে এবং সেই ইমানই আমাদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।

 

কোরআনের প্রতি ইমানের হক আদায়ের সঙ্গে সঙ্গে তা তেলাওয়াতের, অনুধাবনের, অনুসরণের, প্রচারের হকগুলোর প্রতি আমাদের সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে। একমাত্র কোরআনের হক আদায়ের মাধ্যমেই ইহকাল ও পরকালের সফলতা ও মুক্তি অর্জন সম্ভব।

 

বর্ণিত বিষয়গুলো বিবেচনাপূর্বক কোরআন-হাদিসের আলোকে ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, কোরআনে কারিমের হক আদায়ে ৫টি কাজ জরুরি। কাজগুলো হলো-

 

শ্রবণ করা

এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখো এবং নিশ্চুপ থাকো, যাতে তোমাদের ওপর রহমত হয়।’ -সূরা আল আরাফ: ২০৪

 

যথাযথভাবে কোরআন তেলাওয়াত করা

যথাযথভাবে কোরআন তেলাওয়াত করার বিষয়ে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি যাদেরকে গ্রন্থ দান করেছি, তারা তা যথাযথভাবে পাঠ করে। তারাই তৎপ্রতি বিশ্বাস করে। আর যারা তা অবিশ্বাস করে, তারাই হবে ক্ষতিগ্রস্ত।’ -সূরা বাকারা: ১২১

 

কোরআনে কারিম মুখস্থ করা

কোরআনে কারিম মুখস্থ করার বিষয়ে ইরশাদ হচ্ছে, ‘বরং যাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হয়েছে, তাদের অন্তরে এটা (কোরআন) তো স্পষ্ট আয়াত। কেবল বে-ইনসাফরাই আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে।’ -সূরা আনকাবূত: ৪৯

 

কোরআন নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করা

এ বিষয়ে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।’ -সূরা সোয়াদ: ২৯

 

কোরআনের ওপর আমল করা

কোরআনের ওপর আমল করার বিষয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা মনোনিবেশ সহকারে কথা শুনে, অতঃপর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই বুদ্ধিমান।’ -সূরা জুমার: ১৮

 

আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক মুসলমানকে কোরআনের হক আদায়ের প্রতিটি স্তর সফলতার সঙ্গে অতিক্রম করার তওফিক দান করুন। আমিন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ | এপ্রিল ২৭, ২০১৮