| বিকাল ৪:১১ - রবিবার - ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২৫শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বৈশাখী মেলার শেষ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ময়মনসিংহের কুমার পাড়া

ফুলবাড়িয়া ব্যুরো :  বাঙালী উৎসবের সবচেয়ে বড় উৎসব বাংলা নববর্ষ। এ উপলক্ষে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। এটিতে কুমার পাড়ার কারিগররা বেশি ব্যস্ত থাকেন এদিনটির অপেক্ষায়। পহেলা বৈশাখ মেলা শুরু হলেও এটি পুরো মাস চলেও জৈষ্ঠ্য মাসে চলে- বৈশাখী মেলা নামে।

 

বিভিন্ন পাড়া, মহল্লা ও বাজারগুলোতে বসবে এ উৎসব। এ উৎসবে সকল বয়সের মানুষ যোগ দেয়। ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার মৃৎশিল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে তাদের ব্যস্ততা।

 

উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ১২৬টি ওয়ার্ড ও একটি পৌরসভায় কতটি মৃৎশিল্প পাড়া রয়েছে তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও সবচেয়ে বেশি পুটিজানা ও কুশমাইল ইউনিয়নে কুমার পাড়া দেখা গেছে।

 

সরেজমিনে ঘুরে মৃৎশিল্পীর কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন স্থান থেকে এঁটেল মাটির কাঁদা সংগ্রহ করেছেন তারা। নানা প্রজাতির পশু-পাখি, জন্তু, খেলার সামগ্রী বানিয়ে সেটি রোদে শুকানোর জন্যে বাড়ীর আশ-পাশের খোলা আকাশের নিচের জায়গা নির্বাচন করেছেন।

 

আর এ কাজে সহযোগিতা করছেন বাড়ীর অন্যান্য সদস্যরা। পুরুষের পাশাপাশি বাড়ির বৌ-ঝিরা এসব কাজে হাত লাগিয়ে সৌন্দর্য্য আনয়নের চেষ্টা করেন। শুকানো শেষে এসব কাজ আকর্ষনীয় করতে বিভিন্ন রঙে রাঙিয়ে দেয়া হচ্ছে। রং তুলিতে উঠতি বয়সের মেয়েদের সহযোগিতাও কম নয়।

 

তবে এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় মৃৎশিল্পীদের পরিশ্রম বেশি হচ্ছে। তবুও তারা পূর্ব পুরুষদের পেশাটি ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। যদিও নতুন প্রজন্মদের কাছে এ পেশাটি তেমন পছন্দের নয়। তবে তাদের কষ্টের তুলনায় প্রাপ্যতা অনেক কম বলে জানা গেছে।

অনেক পাড়ায় অনেকে পেশাটি পরিবর্তন করেছেন। কিন্তু মুরব্বীরা এ পেশা ত্যাগ করতে পারেন নি। সর্বোপরি তাদের পাড়ায় এখন বিরামহীন সময় অতিবাহিত করছে।

 

মৃৎ শিল্পী নারায়ন কর্মকার জানান, মাটির জিনিস তৈরি করতে তাদের নানা দূর্ভোগ পোহাতে হয় যেমন- তাদের তৈরিকৃত জিনিসটি শুকাতে প্রায় ৫/৬ দিন সময় লাগে কিন্তু আবহাওয়া খারাপ হয়ে গেলে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরাতে গেলে ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। প্রখর রোদ না হলে শুকাতে আরও বেশি সময় লাগে। অনেক জীব-জানোয়ার থেকে নিরাপদে রাখতে পাহারার ব্যবস্থা করতে হয়।

 

সুবল চন্দ্র সাহা জানান, অতীতে টাকার মুল্য যখন বেশি ছিল তখন মাটির তৈরি জিনিসের দাম কম ছিল, কিন্তু এহন টাকার দাম দস্তা কিন্তু মাটির জিনিসের দাম তুলনামুলকভাবে বাড়েনি। মানুষ মনে করে মাটির তৈরি জিনিস দাম আর কত?

 

সুকুমার চন্দ্রপাল বলেন, আমাদের মাটির তৈরী সৌখিন সামগ্রী ও শিশুদের বিভিন্ন রকমের খেলনা রাজধানী ঢাকা-ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল সহ দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে পাইকারী বিক্রেতারা কিনে নিয়ে যায়। আমরাও স্থানীয় মেলায় ও বাজারে বিক্রি করে থাকি।

 

একটি মাটির ঘোড়া ২০ থেকে ৬০ টাকা, হরিণ ১৫থেকে ২৫ টাকা, কলসি ৬০ থেকে২৫ টাকা, ফুলদানী ৮০থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। এসব মাটির তৈরী সামগ্রী বিক্রি করে এ সময় আমাদের সংসারে কিছুটা হলেও সচ্ছলতা ফিরে আসে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ১২:৪৩ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ০৮, ২০১৮