| সকাল ৬:০২ - শনিবার - ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২০শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

আগামী ১২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী’র হাতে ব্রহ্মপুত্রের খনন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

লোক লোকান্তরঃ  এশিয়া মহাদেশের গুরুত্বপূর্ণ দীর্ঘতম নদ পুরনো ব্রহ্মপুত্র খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। এক সময়ের খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্রকে আবারও প্রাণ ফেরাতেই এই পরিকল্পনা।

 

২৮৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রহ্মপুত্র নদের মধ্যে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের চিকাজানী ইউনিয়নের খোলাবাড়ির চর থেকে টোক পর্যন্ত ২২৭ কিলোমিটার খননে নেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ব্রহ্মপুত্রসহ দেশের ৭টি নদ-নদী খননে ৫ হাজার ৯শ কোটি টাকার ডিপিপি ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত করেছে।

 

ময়মনসিংহ বিভাগসহ এই অঞ্চলের নাগরিকদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ব্রহ্মপুত্র নদ খননের। আগামী ১২ এপ্রিল ময়মনসিংহ সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রহ্মপুত্র নদের খনন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার জিএম সালেহউদ্দিন।

 

বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইদুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিপ্রায় অনুসারে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার, পুনর্ভবা, সোয়াতোলাই, বুড়িশ্বর ও পায়রাসহ দেশের সাত নদ-নদী ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে খনন করা হবে। এজন্য পাঁচ হাজার ৯শ কোটি টাকার ডিপিপি ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত হয়েছে।

 

তার মধ্যে শুধু ব্রহ্মপুত্র নদের দেওয়ানগঞ্জের চিকাজানী ইউনিয়নের খোলাবাড়ির চর যমুনার উৎসমুখ থেকে গফরগাঁও উপজেলার সীমান্ত টোক পর্যন্ত ২২৭ কিলোমিটার খননে তিন হাজার ৩শ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এ ছাড়াও ব্রহ্মপুত্র নদের উৎসমুখে ঝিনজিরাম নদীর কিছু অংশ ড্রেজিং করা হবে। এই প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদারকে কাজ দেওয়া হবে।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্রের তলদেশে কমপক্ষে ৩০০ ফুট প্রশস্ত এবং শুকনো মৌসুমে কমপক্ষে ১২ ফুট পানির গভীরতা বিদ্যমান রেখে খননকাজ সম্পন্ন করা হবে। খনন সম্পন্ন হলে কলকাতা সমুদ্র বন্দর থেকে পণ্যবাহী ভ্যাসেল জাহাজ কুড়িগ্রামের চিলমারী দিয়ে ব্রহ্মপুত্রে প্রবেশ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দরে এসে পৌঁছবে। এতে পণ্য পরিবহনে সময় ও খরচ দুটোই সাশ্রয় হবে।

 

ব্রহ্মপুত্র খনন হলে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা যাবে; মিঠা পানিতে দেশীয় নানা প্রজাতির মাছের উৎপাদন বাড়বে; আশপাশে সেচ সুবিধা বৃদ্ধি পাবে; নদপাড়ের মানুষ বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে; পরিবেশ রক্ষাসহ এই নদ থেকে নানা সুফল পাবে ময়মনসিংহ, কুড়িগ্রাম ও কিশোরগঞ্জ জেলার কয়েক কোটি মানুষ। এ ছাড়াও উত্তর-পূর্ব ভারতের সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত নাগাল্যান্ড, মনিপুর, মিজোরাম, আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয় ও অরুণাচল প্রদেশে খুব সহজে এবং কম খরচে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন করা হবে।

 

নৌপরিবহন সচিব মো. আবদুুস সামাদ গত ১৬ মার্চ ব্রহ্মপুত্র নদের উৎসমুখ পরিদর্শন করেন। সেখানে ৬ কিলোমিটার জুড়ে প্রায় ১০ ফুট উচ্চতার চর জেগে ব্রহ্মপুত্র প্রায় পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। এ সময় জামালপুরের জেলা প্রশাসক কবির আহমেদ ও জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নব কুমার চৌধুরী এবং বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

সুত্রঃ আমাদের সময়

 

সর্বশেষ আপডেটঃ ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ | মার্চ ২১, ২০১৮