অশ্লীল কার্যকলাপের জন্য ১১ যুগলের জরিমানা, ৩২ জনকে মুচলেকা নিয়ে ছাড়
লোক লোকান্তরঃ কুষ্টিয়ার পৌর শিশু পার্কে অশ্লীল কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ১১ জোড়া প্রেমিক প্রেমিকার কাছ থেকে জরিমানা আদায় ও মুচলেকা নিয়ে অবিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হানের নির্দেশে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ অভিযান চালানো হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ প্রতীম শীল, এবিএম আরিফুল ইসলাম, ফারিয়া সুলতানা ও এমএম মুহাইমিনুল আল জিহান। আদালতসুত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া শহরের শহীদ জিয়াউর রহমান শিশু পার্কটি শিশুদের পরিবর্তে বখাটে ও প্রেমিক যুগলদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে।
অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সেখানে নিয়ে গেলে বিড়ম্বনার শিকার হন। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সেখানে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। এসময় অর্ধশতাধীক প্রেমিক যুগলসহ তরুন-তরুনীকে পুলিশের সহায়তায় আটক করা হয়।
পরে পার্ক চত্বরে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ১৮৬০ এর দ-বিধি ২৯৪ ধারা মোতাবেক তাদের ১১ জোড়া প্রেমিক-যুগলকে ৫১হাজার টাকা জরিমানা আদায় ও মুচলেকা নিয়ে অবিভাবকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও ৩২ জনকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এসময় কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই তারিকের নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্স উপস্থিত ছিল।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও এনডিসি শরীফ উল্যাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এই শিশু পার্কটি নামে মাত্রই শিশু পার্ক এখানে। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে এই পার্কে আসতো। শুধু তাই নয়, অসামাজিক কার্যকলাপেও জড়িত থাকার অভিযোগ ছিলো দীর্ঘদিনের।
এমন সব অভিযোগ জেলা প্রশাসকের নজরে আসলে তারই নির্দেশনার আলোকে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করলে তারা দোষ শিকার করলে তাদের বিভিন্ন অংকে অর্থদন্ডে দন্ডিত ও মুচলেকা দিয়ে অভিভাবকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
তবে শিশু পার্কে এসব অনৈতিক কাজ মেনে নেওয়া হবে না বলে উল্লেখ করে তিনি জানান, মাঝে মাঝেই এমন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে। এদিকে প্রশাসনের এ অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে শহরের সুশীল সমাজ।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া শহরের শহীদ জিয়াউর রহমান শিশু পার্কটি শিশুদের পরিবর্তে বখাটে ও প্রেমিক যুগলদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। এই পার্কটির আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের ব্যাপারে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ উদাসীনতা ছিলেঅ দীর্ঘদিনের। নামে শিশুপার্ক হলেও শিশুদের জন্য নেই কোন রাইডস ও বিনোদনের সুবিধা।
দিনের বেলায় কিছু বখাটে যুবক ও অসংখ্য প্রেমিক যুগলদের অযাচিত ঘোরাঘুরি আর সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকার ও নির্জনতায় ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করে পার্কটিতে। এবং পার্কে শিশুদের পরিবর্তে দীর্ঘদিন ধরে শহরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে এসে যুবক-যুবতীরা অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত হবার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভ্রাম্যমান আদালত হানা দেয়।