| সকাল ৬:২৮ - শনিবার - ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২০শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

গাজীপুরে ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

লোক লোকান্তর: গাজীপুরে ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার করা নবজাতকটি মারা গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে নবজাতকটি মারা গেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

 

১৯ অক্টোবর সোমবার রাত ১ট ২০ মিনিটের দিকে শিশুটি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। লক্ষীপুরা এলাকার গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

 

১৯ নভেম্বর রবিবার দুপুরে ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার করা নবজাতকটিকে চিকিৎসার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিলো। এসময় শিশুটিকে পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।

 

এ বিষয়ে ওই হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাক্তা প্রণয় ভূষণ প্রিয়.কমকে বলেন, ‘শিশুটিকে হাসপাতালে আনার পর তার শ্বাসকষ্ট ছিল। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা ও ফোলা ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছিল। ওই সময়ে সরকারি এ্যাম্বুলেন্স না থাকায় নবজাতকটি উদ্ধারকারি পোষাক কারখারখানার কর্মী রেখা বেগম নিয়ে গেছে।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আধা ঘন্টার মত হাসপাতালের বাইরে ছিলাম। আমাকে না জানিয়েই আমার স্টাফরা তাদের কাছে দিয়ে দিয়েছি। তবে আমি মোবাইলে রেখা বেগমকে বাচ্চাটিকে ঠিকমত চিকিৎসা করাতে বলেছি।’

 

‘আমি সামান্য একজন গার্মেন্টসকর্মী। আমার কাছে টাকা পয়সাও নাই। বাইরের এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকা নেয়ার সামর্থ নাই। সরকারি এ্যাম্বুলেন্সের জন্য ডাক্তারকে অনেক অনুরোধ করেছি। পাইনি। বাধ্য হয়ে বাসায় এনে তেলমালিশ আর ছেঁকা দেয়ার পর কিছুটা সুস্থবোধ করছিলো। সামান্য পরিমাণ দুধ খেয়েছিল শিশুটি।’

 

পরে রাত ১২টার পর অবস্থার অবনতি ঘটার ফলে রাত ১টা ২০ মিনিটের দিকে শিশুটি মারা যায় বলে জানান রেখা বেগম। এ বিষয়ে জেলার সমাজ কল্যাণ বিভাগের উপ-পরিচালক  বলেন, ‘এ সকল শিশু রাষ্ট্রের তত্ববধানে চিকিৎসা ও লালন পালনের কথা। এভাবে অবহেলা করে জীবিত শিশুকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়াটা মোটেও ঠিক হয়নি।’

 

গাজীপুর আদালতের পিপি এড. মোঃ হারিছ উদ্দিন জানান, শিশুটি উদ্ধারের পর যেহেতু থানায় জিডি করা হয়েছিল এবং চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তখন সে রাষ্ট্রীয় দায় দায়িত্বের আওতায় এসেছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিৎ ছিল তাদের নিজেদের হেফাজতে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। এ ক্ষেত্রে তারা উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে।

 

এ বিষয়ে ওই হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডাক্তার মো. কমর উদ্দিন  বলেন, ‘আরএমও এ বিষয়ে আমাকে কোন তথ্য জানায়নি। তার সাথে কথা বলে দেখছি।’

 

উল্লেখ্য, এক পোশাক শ্রমিক দম্পতি গত ১৯ নভেম্বর রবিবার গাজীপুরের তিন সড়ক এলাকার একটি ডাস্টবিন থেকে ক্ষুধার্ত বিড়ালের মুখ থেকে কন্যা শিশুটিকে উদ্ধার করে।

 

এরপর গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এ বিষয়ে জয়দেবপুর থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছিল।

সর্বশেষ আপডেটঃ ১০:৫০ অপরাহ্ণ | নভেম্বর ২০, ২০১৭