| রাত ১২:৪৩ - বৃহস্পতিবার - ৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ২১শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১লা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ময়মনসিংহের নিহত জঙ্গি জেএমবি’র সুইসাইডাল স্কোয়াডের সদস্য, ৪টি তাজা বোমা নিষ্ক্রীয়, আটক-৭

নিজস্ব প্রতিবেদক: ময়মনসিংহের ভালুকা হবিরবাড়ি ইউনিয়নের কাশর গ্রামে রবিারের সন্ধ্যায় বোমা বিস্ফোরণে এক জঙ্গি নিহতের ঘটনার ২২ ঘন্ট৬া পর উদ্ধার অভিযান পুলিশ সুপার সমাপ্ত সোমবার বিকালে ঘোষনা করেছে ।

 

নিহত জঙ্গি মোহাম্মদ আলম প্রামাণিক জেএমবি’র সুইসাইডাল স্কোয়ার্ডের সদস্য ও বোমা বিশেষজ্ঞ এবং কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিটের মোস্ট ওয়ান্টেড আসামী। তিন দফায় তাকে ধরার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী। পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম জানান ভালুকার এই আস্তানাটি ছিলো জঙ্গীদের বোমা তৈরীর কারখানা, এখান থেকেই সারাদেশে আসন্ন ঈদে বোমা সরবরাহের করা হতো বলে পুলিশ ধারনা করছে।

 

অভিযানে বিপুল পরিমান শক্তিশালী বোমা তৈরীর সরঞ্জাম ও বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়। সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটায় ঘটনাস্থলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন ময়মনসিংহের পলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম।

 

এদিকে রবিবার বোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে ওই জঙ্গি নিহতের ঘটনায় সন্ধ্যা থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী ওই বাড়িটি ঘিরে রাখার পর ঢাকা থেকে কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিটের বোমা নিষ্ক্রীয় দলের সদস্যরা আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পৌঁছে বিকাল সাড়ে তিনটায় উদ্ধারকাজ সমাপ্ত করে।

 

জঙ্গি আস্তানা থেকে নিহত জঙ্গির রক্তাক্ত ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে। এসময় ওই ঘরটি থেকে ১টি গ্রেনেড, ২টি প্রেসার কুকার বোমাসহ ৪টি শক্তিশালী তাজা বোমা, বিপুল পরিমান বোমা তৈরীর সরঞ্জাম ও বিস্ফোরক দ্রব্য পুলিশ উদ্ধার করে। পরে বোমা নিষ্ক্রীয় দলের সদস্যরা সবগুলো বোমা নিষ্ক্রীয় করেছে।

এদিকে বোমা বিস্ফোরণে নিহত জঙ্গির নাম-পরিচয় পুলিশ পেয়েছে নিহত জঙ্গীর নাম মোহাম্মদ আলম প্রামানিক,তার বাড়ি নাটোরের সদর উপজেলার তেলকুপি গ্রামে। বিস্ফোরণের পর নিহত জঙ্গীর স্ত্রী পারভিন বেগম দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যাবার আড়াই ঘন্টার মধ্যে পুলিশ হবিরবাড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আটক করে ।

 

এছাড়া বাড়ির মালিক আজিম উদ্দিন, তার স্ত্রী ও দুই পুত্রকেও জিঞ্জাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছে।রবিবার সন্ধ্যার দিকে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের কাশর গ্রামের আজিম উদ্দিনের বাড়ির ভাড়াটিয়ার একটি ঘরে বিকট শব্দে বোমা বিস্ফোরিত হয়।

 

এতে ঘটনাস্থলেই বোমার আঘাতে মোহাম্মদ আলম প্রাণানিক (৩৫) নামে এক জঙ্গি মারা যায়। বোমায় তার দুই হাতের কব্জি ও দুই পা উড়ে গেছে। রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তার দেহ।

 

বোমার স্পিনটারে আহত হয় এক শিশু সন্তানও। স্ত্রী পারভিন বেগম এসময় ঘরের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যায়। পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে স্ত্রী পারভিন বেগম আহত শিশু এবং অপর সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে যাবার কথা বলে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে বাড়িটি ঘেরাও করে রাখে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজারো উৎসুক জনতা বাড়ির আশপাশে ভীড় জমায়।

 

রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি নিবাস চন্দ্র মাঝি, জেলা প্রশাসক খলিলুর রহমান, র‌্যাব-১৪ কমান্ডার লে. কর্ণেল শরিফুল হক, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

 

সোমবার সকালে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা থেকে কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিটের বোমা নিষ্ক্রীয় দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। ফলে ২২ ঘন্টার পর উদ্ধার কাজ পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম সমাপ্ত ঘোষণা করেন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৭:০২ অপরাহ্ণ | আগস্ট ২৮, ২০১৭