| ভোর ৫:২১ - রবিবার - ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ৪ঠা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ময়মনসিংহে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসুচীর উদ্বোধন

নিজিস্ব প্রতিনিধ : গণতন্ত্রের রক্ষায় সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কারো সাথে কোনোভাবে আপোষ করা হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, যত নির্বাচন হবে গণতান্ত্রিক পন্থায় যে সব আইন বিধিবিধান আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে সেই আলোকে আমরা নির্বাচন অনুষ্ঠান করবো কারো সাথে কোনো ভাবে আপোষ করবো না,সে ক্ষেত্রে সবার সহযোহিতা কামনা করেন তিনি।

 

সিইসি আরো বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের মুল ভিত্তি যে নির্বাচন সেটাকে গ্রহনযোগ্য উপায়ে ভালোভাবে সম্পন্ন করতে আমরা যেমন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। রাজিৈনতক দল গুলোর সাথে আগামী মাসের (আগষ্টের )তৃতীয় সপ্তাহে সংলাপ আহ্বান করবেন বলেও তিনি জানিয়েছেন। এছাড়া জাল ও ভূয়া ভোটার প্রসঙ্গে তিনি বলেন অতীতে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা ছিল না বর্তমানে ছবিযুক্ত ও চোখের কনিকাসহ টিপসহি সম্বলিত ভোটার তালিকা প্রণনয়ন করা হচ্ছে।

 

এতে কোন ধরনের ভূয়া বা নাম ঠিকানা বিহীন অপ্রাপ্তদের ভোটার হওয়ার সম্ভবনা নেই,তবে তালিকা প্রণয়নে নাম ও জন্ম তারিখ অথবা যে কোন ধরনের ক্রটি-বিচ্ছুতি ঘটতে পারে তা সংশোধিত করা হবে। তিনি আরো বলেন, ভোটার তালিকা প্রণনয়নে কেই দায়িত্ব হীনতা ও গাফিলতি করলে এমনকি ভোটার তালিকা প্রণনয়নে কোন গোষ্ঠি বা কেউ বাধাঁ প্রদান করলে তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আইনের ১৯৯১ সনের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ময়মনসিংহ টাউন হলের অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে আজ মঙ্গলবার ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসুচীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা একথা বলেন। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্য একটি সঠিক ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা, এবং সেই সঠিক ভোটার তালিকার মাধম্যে একটি অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন সম্পন্ন করা। যারা ভোটর তালিকা প্রণয়ন করবেন তারা দায়িত্ববোধ থেকে নির্ভূল তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশানার কৃষিবিদ মোজাম্মেল হক, রেঞ্জ ডিআইজি নিবাস চন্দ্র মাঝি, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক কৃষিবিদ আরিফ আহমেদ খান, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহা. ইসরাইল হোসেন। এ সময় নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পঞ্চমবারের সারা দেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। ২০১৫ সালের পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। কমিশন আশা করছে বাদ পড়া ৩৫ লাখসহ নতুন ভোটাররা যুক্ত হবে নতুন তালিকায়। নতুন ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ চলবে ৯ আগস্ট পর্যন্ত। ২ জানুয়ারী খসড়া তালিকা প্রণয়নের পর চ’ড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ৩১ জানুয়ারী, যা ভোটার তালিকা অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, আমরা দুই ‘এমপি’ থেকে মুক্তি চাই, ‘মানি পাওয়ার’ ও ‘মাসল পাওয়ার’ এর হাত থেকে মুক্তি পেতে হবে। তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত প্রয়োজন। নির্বাচনের মাঠ কী পদ্ধতিতে লেভেল প্লেয়িং করা যায় সে ব্যাপারে সংলাপ হবে। সবার মতামত নেয়া হবে। গ্রহণযোগ্য হলে কমিশন প্রয়োগ করবে। দুর্বল ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হলে গণতন্ত্র প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়। গণতন্ত্র সমুন্নত না থাকলে আত্মমর্যাদা থাকে না। আমরা আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বিশ্বে পরিচয় দিতে চায় কমিশন।
তথ্য সংগ্রহকারিকারিদের নির্ভূলভাবে তথ্য সংগ্রহের আহবান জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার নির্ভূলভাবে তথ্য নিতে সংগ্রহকারিদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের পৃর্বশর্তই হলো নির্ভূল ভোটার তালিকা। কেউ যদি বাঁধা প্রদান করে বা কেউ যদি কাজে শিথীলতা দেখায় তবে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে জেল-জরিমানা করতে পিছপা হবো না। নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেজন্য সব ব্যবস্থা কমিশন নেবে বলেও জানান তিনি।
শহরের পন্ডিত পাড়ায় এক বাসায় নতুন দুই জন ভোটারকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে মাঠ পর্যায়ে হালনাগাদ ভোটার তালিকার কার্যক্রম শুরু করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। এ সময় নির্বাচন কমিশনারগণসহ বিভাগ ও জেলার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৪:১০ অপরাহ্ণ | জুলাই ২৫, ২০১৭