| ভোর ৫:৪৩ - রবিবার - ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ৪ঠা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ময়মনসিংহের চরাঞ্চলে ছাত্র-যুব সংগ্রাম পরিষদের সমাবেশে ঘোষণা

লোক লোকান্তর : বিকল্প প্রস্তাব মানা না হলে চরাঞ্চলবাসি জরিপ করতে দিবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন বসতভিটা রক্ষা কমিটির ছাত্র-যুব সংগ্রাম পরিষদ। শুক্রবার বিকেলে জয়বাংলা বাজারে ছাত্র-যুব সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত সমাবেশের বক্তারা এ ঘোষণা দেন।

 

বক্তারা বলেন, জনগণের দাবি উপেক্ষা করে জরিপ করার চেষ্টা করা হলে বিভাগীয় কমিশনারের অফিস ঘেরাও করা হবে। জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও বসতভিটা রক্ষা করা হবে বলেও দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
‘কয়েকজন সচিবের জমি বাঁচানোর জন্য নকসা পরিবর্তনের কথা সঠিক নয়’ বিভাগীয় কমিশনারের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বক্তারা বলেন, কয়েকজন সচিবসহ প্রভাবশালীদের জমি রক্ষা করে চরাঞ্চলের ৬০ হাজার মানুষকে উচ্ছেদের যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করা হবে।
আগামী ৯ জুলাই নবগঠিত ময়মনসিংহ বিভাগের নতুন শহর প্রতিষ্ঠাকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্পের প্রস্তাবিত এলাকার জরিপ প্রতিহত করতে চরাঞ্চলবাসি রাজপথে থাকবেন বলেও ঘোষনা দেন নেতৃবৃন্দ।
গত ২১ জুন বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বিভাগীয় কমিশনার জি এম সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘আপনারা হয়তো মনে করবেন যে, কয়েকজন সচিবের জমি বাঁচানোর জন্য ‘নকসা’ পরিবর্তন করা হয়েছে, আসলে তা সঠিক নয়। চায়নামোড় এলাকা ভূমিকম্প ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় এবং মারাত্মক ট্রাফিক জ্যামের কথা চিন্তা করেই নকসাটি পরিবর্তন করা হয়।’
বসতভিটা রক্ষা কমিটির ছাত্র-যুব সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত সমাবেশে কাজী রাশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বসতভিটা রক্ষা কমিটির আহবায়ক সৈয়দ মোশাররফ হোসেন বাচ্চু, যুগ্ম-আহবায়ক শহিদুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির সাদেকুল ইসলাম সবুজ, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন, গোলাম কিবরিয়া, সোহানুর রহমান সুমন, আরিফ ফয়সাল, পাপেল খান, জাহাঙ্গীর আলম, আতিকুল্লাহ, ফারুক হোসেন, রফিক আকন্দ, শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
জু’মার পর থেকেই শতশত মানুষ বিভিন্ন গ্রাম থেকে মিছিল সহকারে সমাবেশে যোগদান করেন। এসময় ‘মরবো তবুও বসতভিটা ছাড়বো না’, ‘পুর্বের নকশা বহাল করো, নদীর তীরে শহর গড়ো’, ‘বিকল্প প্রস্তাব মেনে নাও, নইলে মুখে বিষ দাও’, ‘আমরা সবাই চরের সেনা, ভয় করিনা বুলেট বোমা’, ‘যে যেখানে আছি ভাই, বিকল্প প্রস্তাবে শহর চাই’ ইত্যাদি শ্লোগান দেয়। সমাবেশ উপলক্ষে জয়বাংলাবাজারের সকল দোকান-পাট বন্ধ করে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।
বসতভিটা রক্ষা কমিটির আহবায়ক সৈয়দ মোশাররফ হোসেন বাচ্চু বলেন, প্রধানমন্ত্রীতে ভুল বুঝিয়ে বল প্রয়োগ করে আমাদের জমি অধিগ্রহণ করার চেষ্টা প্রতিহত করা হবে। এজন্য প্রশাসনই দায়ি থাকবে। তিনি বলেন, পুর্বের নকসা বহাল রেখে বিকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী জমি অধিগ্রহণের জন্য জরিপ করা হলে চরাঞ্চলবাসি সহযোগিতা করবে অন্যথায় জরিপ করতে দিবে না।

 

এব্যাপারে তিনি আবারো প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। উল্লেখ্য, ময়মনসিংহ বিভাগের উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রথমে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে এক হাজার দুইশত কুড়ি একর জমিতে নতুন শহর গড়ার নকশা প্রণয়ন করা হয়। পরে বিশেষ মহলের প্রভাবে ওই নকশা বাতিল করে নতুন নকশা অনুযায়ি চার হাজার ৩৬৬ একর ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপর থেকেই চরাঞ্চলের মানুষ উচ্ছেদের আশঙ্কায় বসতভিটা রক্ষার দাবিতে বিগত দশ মাস ধরে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদানসহ লাগাতার কর্মসুচী পালন করে আসছেন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ১২:৩৭ পূর্বাহ্ণ | জুলাই ০১, ২০১৭