| সকাল ৯:৪৩ - শুক্রবার - ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৪ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ময়মনসিংহে অনাবাদি জমিতে মটরশুটি আবাদ, খরচের চেয়ে সাতগুন বেশি লাভ

আজহারুল হক, গফরগাঁও:   ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে এবার ১৫০ হেক্টর জমিতে মটরশুটি আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার রৌহা, বাগুয়া ও পুকুরিয়া এলাকায় অনাবাদি প্রায় ২৫ হেক্টর জমিতে মটরশুটির আবাদ হয়েছে।

 

উপজেলা জুড়ে চলছে মটরশুটি মাড়াইয়ের ধুম। এবার বাম্পার ফলন হওয়ায় চলতি মৌসুমে অন্তত দুই শতাধিক কৃষক ব্যাপক লাভবান হয়েছেন।

 

সালটিয়া ইউনিয়নের বাগুয়া গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন সরকার ও সালটিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, এ অঞ্চলের কৃষকরা মূলত ধান চাষের উপর নির্ভরশীল। পানির সমস্যার দরুন বাগুয়া, জন্মেজয়, রৌহা ও পুখুরিয়া গ্রামের প্রায় ২৫ হেক্টর জমি বছরের অধিকাংশ সময়েই অনাবাদি থাকত। এ অবস্থায় কৃষি বিভাগের অনুপ্রেরনায় মটরশুটি আবাদ শুরু করি। ফলনও হয় বাম্পার। এর পর থেকে ধান চাষ বাদ দিয়ে এ চার গ্রামের কৃষকরা মটরশুটি আবাদ শুরু করি। মটরশুটি আবাদে অর্ধশতাধিক কৃষকের জীবনে এনে দেয় নতুন গতি। এবার ফলনও হয়েছে বাম্পার।

 

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১৫০ হেক্টর জমিতে মটরশুটি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হলেও তা ছাড়িয়ে অনেক বেশি জমিতে মটরশুটি আবাদ হয়েছে।

 

উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার সালটিয়া ইউনিয়ন ছাড়াও টাঙ্গাব ও দত্তের বাজার ইউনিয়নে মটরশুটি আবাদ হয়েছে। এ তিনটি ইউনিয়নের অন্তত দুই শতাধিক কৃষক ফলন ভাল হওয়ায় আশাতীত লাভবান হয়েছেন।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এস ফারহানা হোসেন বলেন, এ উপজেলায় পূর্বে মটরশুটির আবাদ তেমন একটা হতো না। তবে কম খরচে প্রচুর লাভ হওয়ায় দিন দিন কৃষকরা মটরশুটি আবাদের দিকে ঝুকে পড়ছে।

 

বাগুয়া গ্রামের আবুল হোসেন জানান, তিনি এবার দেড় এরক জমিতে মটরশুটি আবাদ করেছেন। এতে ৫০ কেজি বীজ লেগেছে। প্রতি কেজি বীজ ক্রয় করেছেন ৪০ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও এক হাজার টাকার সার ও হালচাষ বাবদ খরচ হয়েছে ১৭’শ টাকা। সর্বসাকূল্যে খরচ হয়েছে ৪৭’শ টাকা।

 

তিনি আশা করছেন প্রতি একরে অন্তত ৩৪ মন মটরশুটি হবে। বর্তমানে বাজারে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে মটরশুটি বিক্রি হচ্ছে। এ দাম অব্যাহত থাকলে দেড় একর জমি থেকে উৎপাদিত মটরশুটি নূনতম ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করা যাবে। উৎপাদন ও শ্রমিক খরচ ব্যতিত যার পুরোটাই লাভ।

 

সালটিয়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম দের এক একর, আঃ কাদির এক একর, ইউসুফ আলী এক একর, বেলায়েত হোসেন এক একর, সোহরাব মিয়া আধা একর, দেলোয়ার হোসেন আধা একর ও হাসেম মিয়া আধা একর মটরশুটি আবাদ করেছেন।

 

তারা জানান, জমিতে মটরশুটির আবাদ অত্যন্ত ভাল হওয়ায় আশা করছি প্রতি একরে ৩২ মন করে উৎপাদিত হয়েছে। প্রতি একরে উৎপাদিত মটরশুটি বাজার ভাল থাকলে অন্তত ৭৫ থেকে ৮০ হাজার টাকা বিক্রি হবে। যা খরচের তুলনায় ৬ থেকে ৭ গুন বেশি লাভ হয়। তাদের মতো টাঙ্গাব ও দত্তের বাজার ইউনিয়নে আরো শতাধিক কৃষক মটরশুটির আবাদ করেছেন। সবজি চাষ লাভ হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি ও জীবন যাত্রার মান বদলাতে শুরু করেছে।

 

ছবিঃ সংগৃহীত

সর্বশেষ আপডেটঃ ১:৩২ অপরাহ্ণ | মার্চ ১২, ২০১৭