| সকাল ১০:১৭ - শনিবার - ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২০শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

শেরপুরে দুর্বৃত্তদের হামলায় দুজন আহত, মহাসড়ক অবরোধ

শেরপুর সংবাদদাতা:   শেরপুরে দুর্বৃত্তদের হামলায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান মডেল কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম হাসান খান ওরফে সুজন (৫২) গুরুতর আহত হয়েছেন।

 

৩ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শেরপুর-ঢাকা মহাসড়ক দুই ঘন্টা অবরোধ করে রাখেন। এসময় ওই মহাসড়কে সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে যাত্রী সাধারণ দুর্ভোগে পড়েন।
 

গত ২ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে শেরপুর জেলা শহরের মীরগঞ্জ এলাকায় হামলার এ ঘটনা ঘটে। আহত গোলাম হাসান বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (মচিমহা) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ পাঁচজনকে আটক করেছে।
 

আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে গোলাম হাসান শহরের চকবাজার এলাকায় অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় থেকে মোটর সাইকেলযোগে কসবা মোল্লাপাড়া এলাকার বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় শহরের মীরগঞ্জ এলাকায় ১৫-২০ জন যুবক তাঁর পথরোধ করে মোটর সাইকেল থেকে তাঁকে টেনে-হেঁচড়ে নামিয়ে ফেলে এবং বাঁশের চলা ও লাঠি দিয়ে তাঁকে বেদম মারপিট করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এসময় তাঁর ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। সংবাদ পেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও তাঁর কলেজের সহকর্মীরা হাসপাতালে ছুটে যান। পরে প্রাথমিক চিকিৎসাশেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ শুক্রবার ভোরে তাঁকে মচিমহায় স্থানান্তর করা হয়।
 

এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা ও কলেজ অধ্যক্ষ গোলাম হাসানের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে দলীয় নেতা-কর্মী ও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে তাঁরা আজ ৩ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার শেরপুর-ঢাকা মহাসড়কের কানাসাখোলা ও তারাকান্দি এলাকায় গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এসময় সড়কের দুপার্শ্বে দুই শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে এবং যাত্রী সাধারণ দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েন।
 

সংবাদ পেয়ে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন এবং র‌্যাব-১৪’র কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে আইনশৃক্সক্ষলা বাহিনীর কর্মকর্তারা এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন এবং দুই ঘন্টা পর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
 

অবরোধস্থলে উপস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ফখরুল মজিদ বলেন, গোলাম হাসান রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি (গোলাম হাসান) আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী চন্দন কুমার পালের পক্ষে নিরলসভাবে কাজ করেন। নির্বাচনে চন্দন পরাজিত হন। এর জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁর ওপর হামলা করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
 

জানতে চাইলে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোন মামলা দায়ের হয়নি। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। থানা হেফাজতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আহত গোলাম হাসানের শরীরে বাঁশের লাঠির একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তবে তিনি এখন শঙ্কামুক্ত বলে ওসি জানান।

 

ছবিঃ লোক লোকান্তর

সর্বশেষ আপডেটঃ ১:৫৮ অপরাহ্ণ | ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৭