| রাত ১:২০ - বৃহস্পতিবার - ৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ২১শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১লা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

গফরগাঁওয়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির ৭ সদস্যের মধ্যে ৪ জনেই ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা!

আজহারুল হক, গফরগাঁওঃ   ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে নতুন করে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য ৭০৮ জন আবেদন করেছেন। আবেদন কারীদের যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় থেকে ৭ সদস্যে যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করে দেয়। যাচাই-বাছাই কমিটির ৪ সদস্যেকে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখ করে গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় গফরগাঁও প্রেসক্লাবের সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের অপর একটি গ্রুপ মানব বন্ধন করতে চাইলে যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্যেদের বাধার মুখে তা পন্ড হয়ে যায়।

 

মানববন্ধনে ব্যর্থ হয়ে তারা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবী করেন মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দেয়ার নামে আবেদনকারীদের নিকট থেকে ১ থেকে ২ লাখ টাকা করে উৎকোচ নিচ্ছেন তারা। এ সময় দুই পক্ষের ঘন্টাব্যাপী চরম উত্তেজনা বিরাজ করে।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য মুক্তিযোদ্ধা আবু সাইয়িদ দাবী করে বলেন, নতুন করে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য গফরগাঁওয়ে ৭০৮ জন আবেদন করেন। এদের যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ময়মনসিংহ জেলা ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার আনোয়ার হোসেনকে সভাপতি, গফরগাঁওয়ের ইউএনও সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডুকে সদস্য সচিব, গফরগাঁও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কমান্ডার মো. সেলিম, ডেপুটি কমান্ডার মফিজ উদ্দিন, আলতাফ হোসেন রানা, মো. আলাউদ্দিন ও এম ফরিদুজ্জামান খানকে সদস্য করে একটি যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করে দেয়া হয়।

 

এই সুযোগে যাচাই-বাছাই কমিটির কতিপয় সদস্য আবেদনকারীদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রত্যকের নিকট থেকে ১ থেকে ২ লাখ করে টাকা উৎকোচ নিয়েছেন। এ অবস্থাই কমিটিতে থাকা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন, আলতাফ হোসেন রানা, আলাউদ্দিন ও ফরিদুজ্জামানকে অনতি বিলম্বে এদেরকে যাচাই-বাছাই কমিটি থেকে বাদ দেয়ার সংবাদ সম্মেলন থেকে দাবী জানান তারা।

 

অপরদিকে গফরগাঁও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ডেপুটি কমান্ডারের নেতৃত্বে যাচাই-বাছাই কমিটিতে থাকা সদস্যরা দুপুরে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন।

 

সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি কমান্ডার মফিজ উদ্দিন লিখিত বক্তব্য উল্লেখ করেন, গফরগাঁওয়ের কিছু বিপদগামী মুক্তিযোদ্ধা যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ডাকাতি পেশায় নিয়োজিত ছিল এরা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য বার বার অভিযোগ করে আসছে। তারা চায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে বাদ দিতে চাচ্ছে।

 

এ ব্যাপারে গফরগাঁও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার মো. সেলিম বলেন, যেহেতু যাচাই-বাছাই কমিটি মন্ত্রনালয় থেকে গঠন করে দেয়া হয়েছে তাই এখানে আমি কোন মন্তব্য করতে রাজি নই। কমিটির ব্যাপারে কারো অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, মন্ত্রনালয় ও জেলা ইউনিট কমান্ডে অভিযোগ করতে পারেন। আর কাউকে ডাকাত আখ্যায়িত করে বক্তব্য প্রদান করাটাও সমীচিন নয়।

 

কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডু বলেন, যাচাই-বাছাই কমিটির ব্যাপারে আমি কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৯:৪৮ পূর্বাহ্ণ | জানুয়ারি ২৮, ২০১৭