কবিতাঃ ঘুরে এলাম শাকিলদের বাড়ি
লোক লোকান্তরঃ কবিতা (ঘুরে এলাম শাকিলদের বাড়ি) লিখেছেন মান্নান ফরিদী।
কে বলে শাকিল নেই
শাকিল আছে এবং থাকবে-
আমি, তুমি ও তাদের মাঝে
যারা শাকিলকে নিয়ে ভাবে ও ভাবায়
নিশুতি রাতের তারার মাঝে
শাকিল উজ্জ্বল নক্ষত্র এক।
কবিতায় ও গল্পে শাকিল থাকবে
শাকিল থাকবে আমাদের শিরায়-উপশিরায়।
ব্রহ্মপুত্রের মিঠা জলে কিংবা বালুচরে
শাকিলের চরাচর ম্লান হবার নয়
বাঘমারা, জেলা স্কুল, আনন্দমোহন কলেজ,
ময়মনসিংহ শহর শাকিলের উপস্থিতি খুঁজে ফিরে
খুঁজে ফিরে গফরগাঁওয়ের দৌলতপুরবাসী
যেখানে শাকিলের পূর্ব পূরুষেরা জন্মেছিলেন।
রাজনীতির অন্ধাত্ব থেকে মুক্তির আহ্বানে
শাকিলের প্রসারিত হাত নিশ্চিহ্ন হবার নয়
ম্লান হতে পারে না
কবিদের প্রতি শাকিলের অফুরন্ত ভালবাসা।
কবি হেলাল হাফিজ, জেগে ওঠো
তোমার কাব্যে রচিত হোক-
শাকিলের শব যাত্রার গীতিনাট্য।
কাঁচিঝুলির ঈদগা মাঠে নেমে আসুক
শোকার্ত মানুষের ঢল।
বাঘমারার অলিতে গলিতে বেদনাহুত মানুষের হাহাকার
ধ্বনিত হচ্ছে শাকিলের জন্মদাতার কর্ণকুহরে
দীর্ঘশ্বাসে আচ্ছাদিত শাকিলদের বাড়ির আঙিনাটুকু
ফেলেছে নিঃশ্বাস নিদারুণ অভিমানে
পুত্র শোকে কাতর বাবার নিথর দেহ,
ফেল ফেল দৃষ্টি থমকে দিয়েছে অবুঝ শিশুর কান্না।
দৌলতপুরের উর্বর জমিতে বেড়ে ওঠা
হাফিজ উদ্দিন মুক্তারের সুযোগ্য সন্তান নিতান্তই সহজ-সরল
যে কণ্ঠ উকিল পাড়ায় গর্জে ওঠত
বজ্র কণ্ঠে কেঁপে ওঠত বক্তৃতার মঞ্চ
বাক্রুদ্ধো পিতা আজ বেদনায় নূহ্য।
পুত্র হারানোর শোক বইয়ে যে স্বাক্ষর চির অম্লান
যে বইয়ে নাম লিখলে পিতা হন হতভাগ্য
যার দীর্ঘশ^াসে বাতাস ভারি হতে হতে
তাবৎ পৃথিবী হয়ে যায় জ্বালাময় কাব্যের শরীর
তিনি হলেন আইন ব্যবসায়ী জহিরুল হক খোকা।
যে মায়ের কান্না থেমে গেলে
দিশে হারা হয়ে যায় আকাশের মেঘপুঞ্জ
সমুদ্রের মাতাল ঢেউগুলো হাই তোলে দারুণ আক্রোশে;
শুষ্ক মরুর বুকে পাথর সদৃশ্য চোখ দু’টো আজ
পুত্র শোকে কবিতার কথা বলে।
কবি, জাগো- ‘এখন যৌবন যার’
শব যাত্রার মিছিলে যাবার সময় হয়েছে তার।
লেখকঃ মান্নান ফরিদী, বাকৃবি, ময়মনিসিংহ