| রাত ১০:৪৬ - বৃহস্পতিবার - ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২২শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ময়মনসিংহ ব্রম্মপুত্র নদে পার্ক ঘাটে ভাসমান চটপটি-ফুচকা

ফাহিম মোঃ শাকিল:  চায়ের কাপে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা, ইচ্ছে হলে চটপটি-ফুচকা, বাদাম, ঝালমুড়ি সহ আরো কত কি। মাঠে খেলার ফাঁকে চা হাতে একটু বিশ্রাম অথবা পেট পুজা। কথা বলছি ময়মনসিংহ নগরীর অন্যতম প্রধান বিনোদন কেন্দ্র সার্কেট হাউজ পার্ক নিয়ে। একপাশে খেলার মাঠ আর অন্য পাশে ব্রম্মপুত্র নদ কে সাথে নিয়ে কালের চাহিদা মিটিয়েছে এই পার্ক। আর ছুটির দিন হলে তো কথাই নেই, লোকো সমাগমে পদ চিহ্ন পর্যন্ত রাখার ঠাই মেলেনা এখানে। এইগুলো এই মাস পরার আগের কথা।

 

বর্তমানে নেই চায়ের কাপে আড্ডা, ইচ্ছে হলেও পাবেন না চটপটি-ফুচকা, বাদাম, ঝালমুড়ি। আর লোকো সমাগম আগের থেকে অনেক কম। কারণ এখন পার্কে নেই কোন চায়ের স্টল, নেই কোন চটপটি-ফুচকার দোকান।

 

বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও পৌর শহরের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে নেয়া পদক্ষেপ গুলোর প্রথম শিকারে পরিণত হয়েছে এই পার্ক। গত মাসের ২৭ তারিখ পার্কের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। অবশ্য পার্কের মনোরম পরিবেশ ফিরিয়ে আনার এই পদক্ষেপ কে সাধুবাদ জানিয়েছে সুশীল সমাজ।

 

বর্তমানে সার্কেট হাউজ পার্ক নিয়ে বলতে গেলে, একপাশে খেলার মাঠ আর অন্য পাশে ব্রম্মপুত্র নদ। নদের ঐ পারে গ্রাম এই পারে শহর। নদের দু’তীরে কাশবন। সময় ঘনিয়ে আসায় কাশবনের ঘনত্ব এখন যদিও কম। মনোরম দৃশ্য। তবে লোকো সমাগম যে কমেছে তা মনতে হবে।

 

সুশীল সমাজের মতে, সব জায়গায় ভালো-মন্দ আছে। তবে অধিকতর ভালো বিষয়টিকে গ্রহন করা উচিত। পার্কে চায়ের কাপ আর লোকো সমাগমকে ঘিরে কিছু বখাটে জায়গা করে নিয়েছিল পার্কে। ইভটিজিং সহ অন্যান্য দুষ্ট কাজে তারা সোচ্চার ছিল। সঠিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য পার্কের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করায় সংশ্লিষ্টদের সাধুবাদ জানান তারা।

 

কিন্তু বিপাকে পরেছে পার্কের দোকানীরা। এখন তারা কোথায় যাবে কি করবে এই নিয়ে ভাবছে। পার্কে শতাধিক চটপটি-ফুচকা ও চায়ের দোকান ছিল। অর্থাৎ শতাধিক পরিবার পার্কে দোকানদারি করে সংসার চালাতো। এখন তারা বিপাকে। তাই আয়ের সন্ধানে কেউ কেউ নতুন পন্থা অবলম্বন করছে। ব্রম্মপুত্র নদে বুকে নৌকার উপর ভাসমান ভাবে বিক্রি করছে চটপটি-ফুচকা। ক্রেতারাও অন্য উপায় না পেয়ে ভিড়ছে সেইদিকে। শতাধিক দোকানের বিপরীতে ৪/৫ টি ভাসমান চটপটি-ফুচকার দোকান থাকায় ইনকাম ভালো হচ্ছে দোকানীদের। কিন্তু এইভাবে কতদিন!! দোকানীরাও জানে বেশি দিন এইভাবে দোকান করা সম্ভব না।

 

চটপটি-ফুচকা বিক্রেতা শামসু (জামাই) ও বিল্লাল জানান, এত বছর (অনেক বছর) যাবত আমারা এখানে দোকান চালাচ্ছি, আমাদের অন্য কোন জায়গা বা কর্মসংস্থান না করায় আমরা বেকার হয়ে পরেছি। ফলে কোন আয়-উপার্জন না থাকায় বাধ্য হয়ে নৌকায় করে চটপটি-ফুচকা বিক্রি করছি।

 

এর আগে পার্কে হকারদের জীবন-জীবিকা’র নিশ্চয়তার দাবিতে ময়মনসিংহ জেলা হকারস শ্রমিক সংঘ এর ব্যানারে বিক্ষোভ করে দোকানীরা।

 

আবার জানা গেছে, আগামীকাল শুক্রবার (১১ নভেম্বর) ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন, ময়মনসিংহ পৌরসভা ও ময়মনসিংহ ক্লিন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে পার্কে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু হবে। সুত্রে জানা যায়, এসময় সকল পোস্টার, ব্যনারও খুলে ফেলা হবে।

 

ছবিঃ লোক লোকান্তর

সর্বশেষ আপডেটঃ ৪:৫৬ অপরাহ্ণ | নভেম্বর ১০, ২০১৬