| সকাল ৭:০৬ - শনিবার - ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২০শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর ঐক্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত

 ঢাকা, ১৫ এপ্রিল, ২০১৬ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর ঐক্য এবং ভ্রাতৃত্ব, ন্যায়বিচার ও সাম্যের জন্য ইসলামী মূল্যবোধ অনুসরণের আহবান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।  সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে তাঁর জিরো টলারেন্সের নীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আন্তঃধর্ম সংলাপের মাধ্যমে ইসলাম বিদ্বেষ ও ভীতি প্রশমনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ইস্তাম্বুলে ১৩তম ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বিবৃতি পাঠ করেন।
বিবৃতিতে ১৯৭৪ সালে দ্বিতীয় ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সংহতির লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্য নিরসনে ওআইসি’র একটি কৌশল বা উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী একটি ওআইসি মানবিক কৌশল প্রণয়ন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ওআইসি সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং ওআইসি-২০২৫ প্রোগ্রাম অব এ্যাকশন বাস্তবায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য নির্মূলে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।
তিনি ওআইসি অগ্রাধিকারমূলক ও অবাধ বাণিজ্য ব্যবস্থা বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
শেখ হাসিনা প্যালেস্টাইন সমস্যার সমাধান এবং রোহিঙ্গাসহ মুসলিম সংখ্যালঘুদের সঙ্গে সংহতির ভিত্তিতে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে প্রায় ৩০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং ২০টির বেশী দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অংশগ্রহণে এই শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে। এতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ এখানে এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতি গ্রহনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ১২ ও ১৩ এপ্রিলের বৈঠকে যোগ দেন। ওআইসি পর্যবেক্ষক এবং ওআইসি ইনষ্টিটিউট ও সহযোগি সংস্থার প্রতিনিধিগণ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। মুসলিম বিশ্বের প্রেক্ষাপটে এ বছরে সম্মেলনে প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ন্যায়বিচার ও শান্তির জন্য ঐক্য ও সংহতি।
সম্মেলনে অভ্যন্তরীন সংঘর্ষ এবং ভ্রাতৃঘাতি গৃহযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাস এবং সহিংস চরমপন্থা, ইসলামভীতি, মানবতাবোধ এবং প্রাকৃতিক দুযোর্গ, মুসলিম সমাজের পশ্চাৎপদতা, ফিলিস্তিনি সমস্যা, দারিদ্র্যতা, উন্নয়ন বিষয়, এবং ওআইসির কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দ এ সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করে অভিন্ন সিদ্ধান্তে পৌঁছার জন্য এখানে মিলিত হয়েছেন। তারা মুসলিম উম্মাহ্র চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঐক্য এবং সংহতির ওপর গৃরুত্বারোপ করেছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসিপ তাইফ এরদোগানের নেতৃত্বে ওআইসি নেতৃবৃন্দ ফিলিস্তিন সংক্রান্ত প্রস্তাব, ওআইসি ২০২৫ : প্রোগ্রাম অব এ্যাকশন, চূড়ান্ত ইশতেহার এবং ইস্তাম্বুল ঘোষণা গৃহীত হয়েছে।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মায়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিষয়ে ওআইসি’র মিনিস্ট্রিয়াল কন্ট্রাক্ট গ্রুপের এক সভায় অংশ নেন এবং ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা ও মায়ানমারের নতুন সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়ার বিষয়ে গ্রুপের মধ্যে আলোচনা করেন।
ইসলামিক সলিডারিটি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (আইএসএফডি)-এর মহাপরিচালক ড. ওয়ালিদ আলওহাইব গত ১৩ এপ্রিল পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাকে আশ্বাস দেন যে, বাংলাদেশের দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্পসমূহে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
অন্যান্য নতুন প্রকল্পের ব্যাপারে সহায়তার আশ্বাস প্রদান করে মহাপরিচালক মূল লক্ষ্য দারিদ্র্য দূরীকরণে আইডিবি’র শাখা আইএসএফ-এর আওতায় বাংলাদেশে আরো শরিয়াভিত্তিক বিনিয়োগ আনার উপায় নিয়েও আলোচনা করেন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৯:২৮ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ১৫, ২০১৬