| ভোর ৫:০৫ - বুধবার - ২৪শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৯ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৭ই মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার প্রচেষ্টার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করলেন রাম মাধব

ঢাকা, ৫ মার্চ, ২০১৬ (বাসস) : ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব বাংলাদেশে গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার নিরন্তর প্রচেষ্টার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি তাঁর দলের আন্তরিক সমর্থনের কথা ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে গণতন্ত্র ও সংবিধান সমুন্নত এবং দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন সেটি প্রশংসনীয়। তাঁর এই কঠোর প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে বৃহৎ প্রতিবেশী আমরা তাঁর প্রচেষ্টায় সমর্থন জানাচ্ছি।
গতকাল সন্ধ্যায় এখানে স্থানীয় একটি হোটেলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিষয়ে এক সংলাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় রাম মাধব একথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দিল্লীর ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের (ইন্ডিয়া চ্যাপ্টার) সহ-সভাপতি সত্যন রায় চৌধুরী এবং ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের সমন্বয়ক এ এস এম শামসুল আরেফিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
বিজেপি’র অন্যতম শীর্ষ নেতা মাধব বলেন, গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার অর্থ বাস ও সরকারি সম্পত্তি পোড়ানো নয়। গণতন্ত্র বলতে স্বাধীনতা বুঝায় তবে তাদের এই স্বাধীনতা শর্তহীন নয় বরং তাদের স্বাধীনতা সাংবিধানিক কাঠামোর আওতায় নির্ধারিত।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা আমাদের এই লাইসেন্স দেয়নি যে আমরা সাংবিধানিক ব্যবস্থা ধ্বংস করবো… আমরা গণতন্ত্র ধ্বংস করবো। এই স্বাধীনতা আমাদের বাস পোড়ানো, সরকারি সম্পত্তি পোড়ানো এবং সহিংসতায় যুক্ত হওয়া অনুমোদন দেয় না।
গণতন্ত্র ও সংবিধান সুরক্ষায় শান্তি হচ্ছে ‘পরম অপরিহার্য’ একথা তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের সংবিধান অত্যন্ত সুলিখিত। আমাদের প্রয়োজন এই সংবিধান সুরক্ষা করা ও সমুন্নত রাখা।
আস্থা ও পারস্পরিক বোঝাপড়ায় বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে উল্লেখ করে রাম মাধব বলেন, একটি বৃহৎ দেশ, বৃহৎ গণতন্ত্র হিসেবে এবং বাংলাদেশ একটি বিপুল জনসংখ্যার দেশ হওয়ায় ভারতের জন্য এই সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, চার দশক পরে তিনি বুঝতে পেরেছেন, ভারত একটি বৃহৎ দেশ তবে বাংলাদেশের জন্য ‘বড় ভাই সুলভ’ নয়। আমাদের উন্নয়নের ধারা সম্পূরক… আমরা অত্যন্ত ভাল প্রতিবেশী… আমরা আমাদের সম্পর্ক উপভোগ করছি।’
বিজেপি নেতা বলেন, উভয় দেশের মধ্যে ভৌগোলিক, ভাষাগত, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক অভিন্ন বন্ধনের কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক প্রাকৃতিক।
বাংলাদেশ ও ভারত একে অপরের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, নিকট প্রতিবেশীর ধারণা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয় বরং এটি হচ্ছে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ কেবল ‘পাশে পাশে’ নয় বরং ‘সাথে সাথে’। আমাদের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন হবে সম্পূরক। আমরা একত্রে বেড়ে উঠবো এবং আমরা একত্রে কাজ করবো।’
বাংলাদেশকে অত্যন্ত প্রিয় প্রতিবেশী দেশ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের সম্পর্ক ক্রমাগত বলিষ্ঠ হচ্ছে, খেলাধুলা, সংস্কৃতি ও রাজনীতি সকল দিকে যোগাযোগের কারণে এটি হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উভয় দেশ ক্রিকেট খেলার আনন্দ উপভোগ করছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ক্রিকেট খেলা বিরাট আনন্দের বিষয়, এটি কোন যুদ্ধ নয়। রোববারের খেলা আমরা উপভোগ করবো।
বাণিজ্য ইস্যুতে বিজেপি নেতা বলেন, বাণিজ্যিক সম্পর্কের কোন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতি যেন অবিচার না হয়, সে জন্য ভারত বিষয়টি সবদিক থেকে নিশ্চিত করবে।
মাধব জ্বালানি খাতে সহযোগিতা এবং স্থল সীমান্ত চুক্তি (এলবিএ) স্বাক্ষর হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রী- হাসিনা ও মোদির নেতৃত্বে তারা আনন্দিত- তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধনে সক্ষম হয়েছেন।
কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. দীপু মনি, এম জে আকবর এমপি, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীনা সিক্রি, ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের পরিচালক অলক বনসাল ও স্বপন দাসগুপ্ত এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৭:৩০ অপরাহ্ণ | মার্চ ০৫, ২০১৬