| রাত ৪:০১ - বুধবার - ২৪শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৯ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৭ই মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

বাজিতপুরে বাল্য বিবাহের সেই কাজী ! প্রতারনার অভিযোগ

বাজিতপুর সংবাদদাতা,৩০ জানুয়ারি ২০১৬:  কিশোরগঞ্জে বাজিতপুর উপজেলার ৪ নং সরারচর ইউনিয়নের কাজী মোঃ আল-আমিনের বিরুদ্ধে দক্ষিন সরারচর গ্রামের দরিদ্র মাছ বিক্রেতা মোঃ ছেতু মিয়ার কাছ থেকে জানা যায়, গত ১৬/০১/২০১১ সনে উত্তর সরারচর গ্রামের মোঃ মুছা মিয়ার পুত্র মোঃ দ্বীন ইসলামের সাথে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেনমোহরে ও রেজিষ্টি কাবিনমূলে তাহার কণ্যা মোছাঃ নাজু বেগমের বিবাহ হয়। উক্ত কাবিন রেজিষ্টি করেছিলেন কাজী মাওলানা মোঃ মুতিউর রহমান এবং     সেই কাবিনের মূল রশিদ কপিটি কনের পিতাকে প্রদান করা হয়। ঘটনা ক্রমে গত ৩ মাস পূর্বে (১৫/১১/২০১৫ ইং তারিখে)  বর্তমান কাজী মোঃ আল- আমিনের নিকট হইতে মোঃ ছেতু মিয়া  কাবিনের একটি কপি সংগ্রহ করেন। একপর্যায়ে দেখাযায়, ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার স’লে ১ লক্ষ টাকা লেখা রহিয়াছে তার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা উসল রেখে বাকি ২৫ হাজার টাকা মূয়জ্জল এবং ২৫ হাজার টাকা মূয়াজ্জল লেখা রয়েছে। মোঃ ছেতু মিয়া তাহা দেখে অজ্ঞান হয়ে পরেন। এরপর স্থানীয় ইউ পি চেয়ারম্যান সহ এলকার মাতব্বরদের পরামর্শে ও সহযগিতায় গত ২৫/১১/২০১৫ তারিখে বাজিতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু ২ মাস অতিবাহিত হলেও এ অভিযোগটি কোন কুল-কিনারা পাওয়া যাচ্ছেনা বলে কন্যার পিতা মোঃ ছেতু মিয়া সাংবাদিকদের নিকট বিচার প্রার্থী হন। এদিকে কাজী মোঃ আল-আমিনের সহকারী মোঃ সালা উদ্দিনকে জিজ্ঞাসা করিলে এ সংবাদদাতাকে জানান, গত বছরের আগষ্ট মাসের উত্তর সরারচর গ্রামের মোঃ দ্বীন ইসলামের পিতা মোঃ মুছা মিয়া কাজী আল- আমিনকে নগদ ২৫ হাজার টাকা রফাদফার মাধ্যমে প্রদান করেন এবং আমাকে দিয়ে আগের দেনমোহর ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার স’লে ১ লক্ষ টাকা লেখে বাকি ৫০ হাজার টাকা উসল দেখান। কাবিনের একখানা নকল কপি মুছা মিয়াকে প্রদান করেন। এছাড়া ঐ কাজী গত ৫ বছরে নিজ এলাকা ছাড়াও অন্য আশে-পাশের এলাকার বহু বাল্য বিবাহ মোটা অংকের উৎকোচের মাধ্যমে নিবন্ধন করেন। অল্প দিনের মধ্যে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বুনে গেছেন। কাজী আল-আমিনের এ সকল প্রতারনার কর্মকান্ড আমি মেনে নিতে পারিনি বিধায় তার কাছ থেকে সরে এসেছি। সরকারের নিকট আবেদন তার নামিয় লাইসেন্স বাতিল সহ তাহার বিরোদ্ধে আইন গত বিশেষ ভাবে দৃষ্টি আকর্ষন করা গেল। কাজী আল-আমিনের বিরুদ্ধে জৈনক ব্যাক্তি আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয় বরাবরে গত ২৯/১১/২০১২ইং তারিখে ২টি বাল্য বিবাহের অভিযোগ দায়ের করেন। এ অভিযোগের ভিক্তিতে সিনিয়র সহকারি সচিব ( মোঃ মাহমুদুল করিম) গত ২৮/০১/২০১৩ইং তারিখে নং বিচার -৭/২ এন- ৬৩/৮৭ স্মারকে অভিযোগটি তদন্তের জন্য সাব রেজিষ্ট্রার বাজিতপুরের বরাবরে প্রেরণ করেন। সাব রেজিষ্ট্রার সাহিন হাসান গত ১১/০২/২০১৩ ইং তারিখে ৪৩(৬) নং স্মারকে জৈনক ব্যাক্তিদেরকে নোটিশ প্রদান করেন ও গত ১৮/০২/২০১৩ ইং তারিখে সরজমিনে ও গোপনে তদন্ত করেন। তদন্ত প্রতিবেদনটি ৫৭ নং স্মারকে সিনিয়র সহকারী সচিব আইন ও বিচার শাখার ৭ এ(৩/৩/২০১৩ইং) প্রেরণ করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বাল্য বিবাহের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয় হতে সিনিয়র সহকারী সচিব (মোঃ রবিউল আলম) নং বিচার-৭/২এন -৬৩/৮৭ -১৮১ স্মারকে কাজী আল-আমিনের বিবাহ রেজিষ্ট্রির লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না তৎ মর্মে নোটিশ প্রদান করেন। এখনও পর্যন্ত কাজী আল-আমিন দেদারছে বাল্য বিবাহ নিবন্ধন করে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যবসায়ি জানান, কাজী আল-আমিন গত ০২/০৫/২০১৫ইং তারিখে পাশ্ববর্তী হালিমপুর ইউনিয়নের সুজাতপুর গ্রামের, কটিয়াদি থানার মসল্লা গ্রামের, কটিয়াদি পাইলট স্কুলের ৮ম শ্রেণীতে পড়-য়া ছাত্রী নাজমা আক্তার ওরুফে বৃষ্টি আক্তারের বিবাহ রেজিষ্ট্রি করেন। যাহার জন্ম তারিখ ১১/০৭/১৯৯৯ইং। গত ১৩/০১/২০১৩ইং তারিখে দক্ষিন সরারচর গ্রামের  শিবনাথ বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীতে পড়-য়া ছাত্রী মোছাঃ সাকিয়া আক্তারের বিবাহ রেজিষ্ট্রি করেন। যাহার স্কুল সার্টিফিকেট অনুযায়ী জন্ম তারিখ ০৫/০৮/১৯৯৮ইং। এ বিষয়ে কাজী আল-আমিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার আমলে কোন বাল্য বিবাহ হয়নি বলে উল্লেখ করেন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৮:০১ অপরাহ্ণ | জানুয়ারি ৩০, ২০১৬