ফুলবাড়ীয়ায় ঐতিহ্যবাহী হুমগুটি খেলায় লাখো মানুষের ঢল
আব্দুস ছাত্তার, ফুলবাড়ীয়া ব্যুরো ঃ ১৩ জানুয়ারি ২০১৬, বুধবার,
আজ বুধবার পৌষের শেষ বিকেলে ফুলবাড়ীয়ায় জমিদার আমলের তালুক-পরগনার সীমানায় আড়াইশ বছরের ঐতিহ্যবাহি হুমগুটি খেলা লাখো মানুষের ঢল নামে।
২৫৫তম হুমগুটি খেলা বিকেলে উপজেলার লক্ষিপুর বড়ইআটা গ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে আয়োজকরা ৪০ কেজি ওজনের পিতলে গুটি হাজার হাজার খেলোয়াড়ের মাঝে ছেড়ে দেয়। “জিততই আবা দিয়া গুটি ধররে … হেইও” শ্লোগানে দিয়ে সবাই একসাথে ঝাঁপিয়ে পরে গুটির উপর।
মুক্তাগাছা জমিদার রাজা শশীকান্তের সাথে ত্রিশাল উপজেলার বৈলরের হেম চন্দ্র রায় জমিদারের জমির পরিমাপ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। জমিদার আমলের শুরু থেকেই তালুকের প্রতি কাঠা জমির পরিমাপ ছিল ১০ শতাংশে পরগনার প্রতি কাঠা জমির পরিমাপ ছিল সাড়ে ৬ শতাংশে। একই জমিদারের ভূ-খন্ডে দুই নীতির প্রতিবাদে তীব্র্র প্রতিবাদ গড়ে ওঠে। জমির পরিমাপ নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ মিমাংসা কল্পে লক্ষীপুর গ্রামের বড়ইআটা নামক স্থানে যেখানে শুরু তালুক-পরগনার সীমানা সেখানে এ গুটি খেলার আয়োজন করেছিল জমিদাররা। গুটি খেলার শর্ত ছিল গুটিটি যে দিকে যাবে তা হবে তালুক পরাজিত অংশের পরগনা। জমিদার আমলের সে গুটি খেলায় মুক্তাগাছা জমিদারের প্রজারা বিজয়ী হয়। আজও তালুক-পরগনার জমির পরিমাপ একইভাবে চলছে।
প্রতি বছর পৌষের শেষ বিকেলের এ খেলাকে ঘিরে অতি প্রাচীনকাল থেকেই লক্ষীপুর, বড়ইআটা, ভাটিপাড়া বালাশ্বর, শুভরিয়া, কালীবাজাইল, তেলিগ্রাম, সারুটিয়া, গড়বাজাইল, বাসনা, দেওখোলা, কুকরাইল, বরুকা, আন্ধারিয়াপাড়া, দাসবাড়ী, কাতলাসেন সহ আশে পাশের ১০/১২টি গ্রামে চলে উৎসবের আমেজ। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা পড়ে নতুন নতুন জামা কাপড়, শতাধিক গরম্ন জবাই হয় গ্রামের বিভিন্ন স্থানে। গুটি খেলা এক নজর দেখার জন্য দূরদূরান্তের আত্নীয় স্বজন ভীড় করে গ্রামে। ঐতিহ্যবাহি হুম গুটি খেলা এক নজর দেখার জন্য সকাল থেকে পার্শ্ববর্তী, মধুপুর, মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহ সদর, ত্রিশাল, ভালুকা উপজেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ জমে খেলার স’ানে।