| সকাল ১০:১৬ - শনিবার - ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২০শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

গফরগাঁওয়ে ১২ কোটি টাকা মুল্যের বেগুন চাষ বদলে দিয়েছে চার শতাধিক কৃষকের ভাগ্য

আজহারুল হক, গফরগাঁও,৭ জানুয়ারি ২০১৬ঃ    ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরআলগী, দত্তের বাজার, টাঙ্গাব ও পাঁচবাগ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গোল ও লম্বা বেগুন চাষ করে বদলে গেছে চার শতাধিক চাষীর ভাগ্যের চাকা। এখন উপজেলার দিগন্ত জুড়ে বেগুন ক্ষেতের সবুজের সমারোহ। আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় এবার বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। শুধুমাত্র ধান চাষের উপর নির্ভরশীল কৃষি জমিতে বেগুন চাষ এনে দিয়েছে নতুন গতি। কৃষকদের জীবন-জীবিকার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে কৃষির এই সফল বিবর্তন। এই চার ইউনিয়নের উৎপাদিত বেগুন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানী হচ্ছে।
উর্বর দো-আঁশ মাটির প্রাচুর্যের কারণে উপজেলার চরআলগী, দত্তের বাজার, টাঙ্গাব ও পাঁচবাগ এই চার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ধানের চেয়ে রবিশস্য ও সবজি আবাদ বেশি হয়। বর্তমানে উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের নয়াপাড়া, চরমছলন্দ, জিরাতিপাড়া, কাচারীপাড়া, কুড়-তলীপাড়া, বোরাখালী, নিধিয়ারচর ভাটিপাড়া, চরকামারিয়া, চরমছলন্দ উত্তর নয়াপাড়া ও চরআলগী গ্রামে, টাঙ্গাব ইউনিয়নের ব্রাহ্মনখালী, দুবাশিয়া, বারইহাটি ও টাঙ্গাব গ্রামে, পাঁচবাগ ইউনিয়নের চরশাঁখচূড়া, খুরশিদ মহল, গাভীশিমুল গ্রামে এবং দত্তের বাজার ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপকভাবে বেগুন উৎপাদিত হচ্ছে। রাজধানী ঢাকাসহ আশেপাশের উপজেলার বেগুন ব্যবসায়ীদের কাছে পৌছে যাচ্ছে এতদাঞ্চলের রবি শস্যের অন্যতম গোল ও লম্বা বেগুন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম দৈনিক লোকলোকান্তরকে জানান, চরআলগী, টাঙ্গাব, ও দত্তের বাজারসহ কয়েকটি ইউনিয়নে এবার বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ১৬৫ হেক্টর জমিতে বেগুন আবাদ করে লাভবান হয়েছেন অসংখ্য কৃষক। আশা করছি এবার উপজেলায় ১২ কোটি টাকার অধিক বেগুন উৎপাদিত হবে।
বিভিন্ন ইউনিয়নে দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চরআলগী, টাঙ্গাব, পাঁচবাগ ইউনিয়নের অন্তত চার শতাধিক কৃষক বেগুন চাষ করে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা আয় করছে।
চরআলগী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের বেগুন চাষী মাসুদ মিয়া  দৈনিক লোকলোকান্তরকে জানান, এবার সে এবার ৫০ শতাংশ জমিতে জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। এতে তার সর্বসাকুল্যে খরচ হয়েছে প্রায় ১১ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত তিনি বেগুন ক্ষেত থেকে বেগুন তুলে পাইকারের কাছে প্রায় ৮০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন। আশা করছেন আরো অন্তত ৭০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করতে পারবেন। বোরাখালী গ্রামের লাল মিয়া এবার এক একর জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত তিনি ক্ষেতে বেগুন তুলে বাজারে এনে খুচরা ও পাইকারদের কাছে প্রায় দেড় লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন। অপরদিকে কাচাড়ীপাড়া গ্রামের খোকন মিয়া, ৪০ শতাংশ, কুড়-তুলী পাড়া গ্রামের বাহার উদ্দিন ৬০ শতাংশ, নয়া গ্রামের নূরুল ইসলাম ৫০ শতাংশ, গিয়াস উদ্দিন মুন্সি ৫০ শতাংশ, জিরাতিপাড়া গ্রামের আঃ রেজ্জাক ৫০ শতাংসসহ আরো অনেক চাষী বেগুন চাষ করেছেন। এছাড়াও চরআলগী ইউনিয়নে বেগুন চাষ করে যাদের ভাগ্য বদলে গেছে এদের মধ্যে মাহতাব উদ্দিন, দুলাল উদ্দিন, জমির উদ্দিন, শাহজাহান, সুলতান, জীবন মিয়া, জিয়ানতের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় কৃষি বিভাগের অনুপ্রেরনায় প্রায় অনাবাদি জমিতে বেগুন চাষ করেছেন তারা। তাদেরকে ছাড়াও টাঙ্গাব, দত্তের বাজার, পাঁচবাগসহ আরো কয়েকটি ইউনিয়নের চাষীরা যুগপৎ এই মৌসুমী ফসল আবাদ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৭:২৭ অপরাহ্ণ | জানুয়ারি ০৭, ২০১৬