| সকাল ৮:৫৭ - শুক্রবার - ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

তাড়াইলে উন্মুক্ত জলাশয়ে পোনামাছ অবমুক্ত করার নামে জালিয়াতি রুখে দিয়েছে এলাকাবাসি

আমিনুল ইসলাম বাবুল : ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সোমবার,
কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে সরকারি অর্থায়নে উন্মোক্ত জলাশয়ে নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে নামমাত্র পোনামাছ অবমুক্ত করার নামে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা রম্নখে দিয়েছে এলাকাবাসি।  সোমবার বিকালে উপজেলা মৎস্য অফিসের ব্যবস্থানায় তাড়াইল সদরের কালীবাড়ি সংলগ্ন খেয়াঘাট থেকে নরসুন্দা নদীতে পোনামাছ অবমুক্ত করার কথা ছিল। কিন’, ঠিকাদার কর্তৃক সরবরাহকৃত মাছের পোনা পরিমাণে কম ও তালিকাবিহীন হওয়ায় স্থানীয় লোকজন তা অবমুক্ত করতে আপত্তি জানায়। এ সময় ঘটনাস’লে উপসি’ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) অন্নপূর্ণা দেবনাথ পোনামাছ অবমুক্তকরণ কর্মসূচি স’গিত ঘোষণা করেন এবং নীতিমালা অনুযায়ী পোনামাছ সরবরাহ না করার অভিযোগে ঠিকাদারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদানের জন্য মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় প্রথম পর্যায়ে ১০৩৩ কেজি পোনামাছ অবমুক্ত করার কথা ছিল।
উপজেলা মৎস্য অফিস সুত্রে জানা গেছে, উপজেলা মৎস্য অফিসের আওতায় উন্মোক্ত জলাশয়ে ‘হাওর অঞ্চলে মৎস্য চাষ ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের’ অর্থায়নে ৪-৬ ইঞ্চি আকারের ১৭৬০ কেজি রম্নই, কাতল, মৃগেল ও কালোবাউশ পোনামাছ ক্রয়ের জন্য গত ২৩ আগস্ট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কোটেশন (দরপত্র) আহবান করেন। প্রতি কেজি পোনামাছ ১১৬ টাকা দরে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে তালজাঙ্গা ইউনিয়নের আড়াইউড়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল হাশেম মাসুদ কার্যাদেশ পান। এত কম মূল্যে ওই জাতীয় মাছের পোনা দেয়া সম্ভব নয় এমন কথা বলাবলি করছিলেন এলাকার মৎস্যচাষিরা।
গতকাল তাড়াইল সদর বাজার সংলগ্ন নরসুন্দা নদীর খেয়াঘাটে এসব পোনামাছ অবমুক্ত করা হবে এমন খবর পেয়ে এলাকার মৎস্যচাষিসহ স’ানীয় লোকজন ওই ঘাটে গিয়ে উপসি’ত হন। তাঁরা ঠিকাদার কর্তৃক সরবরাহ করা অধিকাংশ মাছের পোনা সিলভারকার্প, ইলিশভাটা ও বৃগেট হিসেবে নিশ্চিত করে তা অবমুক্ত না করার জন্য প্রশাসনের নিকট আপত্তি জানান। এসময় ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) অন্নপূর্ণা দেবনাথ, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাবিব ফরহাদ আলম উপসি’ত ছিলেন। পরে এসব পোনামাছ বাতিল করে ঠিকাদারকে কারণদর্শানোর চিঠি প্রদানের সিদ্ধানত্ম নেয়াসহ পরবর্তী সময়ে কোটেশনের শর্তানুযায়ী পোনামাছ সরবরাহের পর তা অবমুক্ত করার সিদ্ধানত্ম হয়। স’ানীয় মৎস্যচাষি আবুল কাশেম জানান, কোটেশন অনুয়ায়ী শতকরা ৩০ ভাগ রম্নই, ৩০ ভাগ কাতল, ৩০ ভাগ মৃগেল ও ১০ ভাগ কালোবাউশ মাছের পোনা সরবরাহ করার কথা। কিন’, ঠিকাদার প্রভাব কাটিয়ে ১০৩৩ কেজি পোনামাছের মধ্যে সরকারি অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে মাত্র ২০০ কেজির মতো ইলিশভাটা ও বৃগেট মাছের পোনা অবমুক্ত করায় আমরা বাঁধা দেই এবং নীতিমালা অনুযায়ী মাছের পোনা ছাড়ার দাবি জানালে প্রশাসন পোনা অবমুক্ত করার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
ঠিকাদার আবুল হাশেম মাসুদ বলেন, পুকুরে পানি বেশী থাকায় প্রয়োজনীয় মাছ ধরতে পারিনি। তাই, এমনটি হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাবিব ফরহাদ আলম বলেন, দরপত্রে রম্নই, কাতল, মৃগেল ও কালোবাউশ মাছের পোনা দেওয়ার কথা রয়েছে। তালিকার বাইরে ঠিকাদার পোনা নিয়ে আসায় এসব পোনা গ্রহণ করিনি।
ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) অন্নপূর্ণা দেবনাথ বলেন,‘দরপত্রে উলেস্নখিত পোনামাছ ছাড়াও অন্যান্য মাছের পোনা থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। এ জন্য ঠিকাদারকে কারণ দর্শানোর চিঠি প্রদান করা হবে। উপযুক্ত জবাব পাওয়া না গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৬:৫৭ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৫