| সকাল ১০:৪৯ - বুধবার - ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ২৮শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

শেরপুরে পৌর মেয়রের ভাই ও ছাত্রলীগের নেতাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যানের ওপর হামলা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ

 

শেরপুর প্রতিনিধি: ০৩ আগস্ট ২০১৫, বৃহস্পতিবার,
শেরপুরে পৌর মেয়রের ভাই ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ নয় জনের বিরুদ্ধে সদর উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মো. বায়েজিদ হাসানের ওপর হামলা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। পৌর মেয়রের বিভিন্ন কর্মকান্ডের সমালোচনা করে বক্তব্য দেওয়ার জের ধরে হামলার এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত বায়েজিদ শেরপুর জেলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। গত ২ সেপ্টেম্বর বুধবার রাতে জেলা শহরের কসবা মাজার রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও মামলায় দায়ের করা এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে শেরপুরের পৌর মেয়র মো. হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান বায়েজিদ হাসানের মনস্তাত্বিক দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। বায়েজিদ বিভিন্ন সভা-সমাবেশে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে শহরের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন কাজ না করাসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডের সমালোচনা করে আসছিলেন। এতে মেয়রের ভাইসহ অন্যরা তাঁর (বায়েজিদ) ওপর ড়্গুব্ধ হন। এর জের ধরে গত ২ সেপ্টেম্বর বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ভাইস-চেয়ারম্যান বায়েজিদ হাসান তাঁর কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নে জনসংযোগ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় শহরের কসবা এলাকায় পৌর মেয়রের ছোট ভাই ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মতিন, জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম সম্রাট, যুবলীগের সদস্য মো. ওয়াসিম ও মো. কামাল হোসেনসহ আরও কয়েকজন তাঁর (বায়েজিদ) ওপর হামলা করেন। এসময় তাঁরা কসবা এলাকার একটি দোকানে আটকিয়ে তাঁকে কিল ও ঘুষি মারেন এবং তাঁর (বায়েজিদ) শরীরে পিস্তল ঠেকিয়ে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। ভবিষ্যতে মেয়রের বিরম্নদ্ধে কোন বক্তব্য না দেওয়ার জন্যও তাঁরা তাঁকে (বায়েজিদ) শাসিয়ে দেন। এসময় তাঁরা তাঁর (বায়েজিদ) সঙ্গে থাকা শহর যুবলীগের সদস্য আকরামুল ইসলাম লিটনকেও মারধর করেন। আহত লিটন বর্তমানে শেরপুর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ ৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেল চারটায় উপজেলা পরিষদের নিজ কার্যালয়ে বায়েজিদ এক সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তিনি বলেন, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যেই তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছিল। বর্তমানে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এ ঘটনায় সদর থানায় মামলাদায়ের করেছেন বলে তিনি জানান। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বায়েজিদ হাসানের অভিযোগ অস্বীকার করে পৌর মেয়রের ভাই মো.আব্দুল মতিন বলেন, তিনি বা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কোন নেতা-কর্মী তাঁকে (বায়েজিদ) হামলা করেননিবা প্রাণনাশের হুমকিও দেননি। উপজেলা নির্বাচনে ভাইস-চেয়ারম্যান পদে বায়েজিদের মনোনয়নের ব্যাপারে তাঁর (মতিন) বড় ভাই মেয়র হুমায়ুন কবীরের যথেষ্ঠ অবদান ছিল। কিন’ তিনি (বায়েজিদ) বিষয়টি ভুলে গিয়ে বর্তমানে মেয়রের বিরুদ্ধে বিভিন্নস্থানে বিষোদগার করছেন। এতে দলের ইমেজ ড়্গুন্ন হওয়ার এবং নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হওয়ার আশংকা রয়েছে। সামনে পৌরনির্বাচন। তাই মেয়রের বিরম্নদ্ধে কোন মনত্মব্য না করতে তিনি তাঁকে (বায়েজিদ) অনুরোধজানিয়েছিলেন মাত্র। অপরদিকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম সম্রাট বলেন, তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। ভাইস-চেয়ারম্যান বায়েজিদ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে যড়যন্ত্রমূলকভাবে এ মামলায় তাঁকে জড়িয়েছেন। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় পৌর টাউন হলের সামনে জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলামের বিরম্নদ্ধে দায়ের করা মামলাটিকে মিথ্যা, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও বানোয়াট হিসেবে আখ্যায়িত করে এটি প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারম্নল করিম আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বলেন, এ ঘটনায় বায়েজিদ হাসান বাদী হয়ে আব্দুল মতিনকে প্রধান আসামি করে নয়জনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জনের বিরম্নদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৮:৫৪ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৫