| সকাল ১১:০২ - শুক্রবার - ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

কটিয়াদীতে শিক্ষক নিয়োগে বাণিজ্য চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ, নিরাপত্তা চেয়ে জিডি

সিম্মী আহাম্মেদ, কিশোরগঞ্জ,৩০ আগস্ট ২০১৫, রবিবার: কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ব্যাপক নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠেছে। অনেক চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ডোনেশনের নামে উৎকোচ নেওয়ার পরও বেশি টাকা পেয়ে আরেকজনকে নিয়োগ দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। উৎকোচ দেয়ার পরও চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চেয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন এক চাকরিপ্রার্থীর অভিভাবক। আর এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে চাকরিপ্রার্থীর পরিবারের ওপর হামলা ও এলাকাছাড়া করার হুমকি প্রদান করেছেন গোলাম মোস্তাফা ও শফিকুর রহমান মোগল নামে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দুই সদস্য। এ অবস্থায় নিরাপত্তা চেয়ে কটিয়াদী মডেল থানায় জিডি করেছেন অভিভাবক অ্যাডভোকেট সেলিম উদ্দিন।
লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম মাহফুজ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির আর্শিবাদে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ের মালামাল চুরি, আত্মসাৎ ও নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছেন। বিদ্যালয়ের ১০টি সৃষ্ট পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রদানের পর গত ২৩ আগষ্ট প্রহসনমূলক একটি নাম মাত্র নিয়োগ পরীক্ষা দেখিয়ে ১০টি সৃষ্ট পদে তিনি নিয়োগ চূড়ান্ত করেন। নিয়োগ পরীক্ষার পূর্বে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম মাহফুজ নিশ্চিত চাকরির আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন প্রার্থীর নিকট থেকে মোটা অংকের ডোনেশন (চাঁদা) আদায় করেন। এদের মধ্যে মো. মোস্তাকিম নামে এক প্রার্থীর নিশ্চিত চাকরির অঙ্গিকার করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার আগের দিন গত ২২ আগস্ট মোস্তাকিমের পিতা অ্যাডভোকেট সেলিম উদ্দিনের নিকট থেকে ৩ লাখ টাকা ডোনেশন আদায় করেন। ২৩ আগষ্ট অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষায় মোস্তাকিমের চাকরি না হওয়ায় পরদিন ২৪ আগষ্ট এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তাকে উল্টো ভয়ভীতি দেখিয়ে আরও ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ অবস্থায় গত ২৭ আগস্ট মোস্তাকিমের পিতা ডোনেশনের ৩ লাখ টাকা ফেরত চেয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। অন্যথায় প্রতারণা, আত্মসাৎ, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করা হবে বলেও তিনি লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করেন। এছাড়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় দায়ের করা একটি চুরির মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে টাকা ফেরত চেয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নিকট লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির কো-অপট সদস্য গোলাম মোস্তাফা ও অভিভাবক সদস্য শফিকুর রহমান মোগল ক্ষিপ্ত হয়। এর জের ধরে গত ২৮ আগস্ট বিকাল ৫টার দিকে চাকরিপ্রার্থী মোস্তাকিমের বড় ভাই ফজলুল করিম ওয়াসিম কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে গেলে গোলাম মোস্তাফা ও শফিকুর রহমান মোগল পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং তার উপর হামলা করতে উদ্যত হয়। এ সময় তারা অ্যাডভোকেট সেলিম উদ্দিনের বাসাবাড়িতে হামলা করে তাদের কটিয়াদী থেকে তাড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেয়। এ ঘটনার পর অ্যাডভোকেট সেলিম উদ্দিন নিরাপত্তা চেয়ে কটিয়াদী মডেল থানায় একটি জিডি (নং-১৩৬০) করেন।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম মাহফুজ বলেন, আমি কোন নোটিশ পাইনি। এ ধরণের কোন লিগ্যাল নোটিশ দিয়ে থাকলে তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বানোয়াট।
কটিয়াদী মডেল থানার ওসি মো. আব্দুছ ছালাম দৈনিক লোকলোকান্তরকে জানান, জিডির অভিযোটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের ভিত্তিতে এ ব্যাপারে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ১১:৫২ অপরাহ্ণ | আগস্ট ৩০, ২০১৫