মুক্তিযোদ্ধার অনন্য ভালোবাসা কটিয়াদীতে বঙ্গবন্ধুর নামে ৪৩ বছর ধরে কোরবানী দিচ্ছেন
ছাইদুর রহমান নাঈম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি ঃ ১৫ আগস্ট ২০১৫, শনিবার:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-জাতির জনক। আমাদের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় জড়ানো একটি নাম। তবে এ ক্ষেত্রে যুদ্ধাহত মুক্তিযুদ্ধা নিবু মিয়া (৭৪) অনেককেই ছাড়িয়ে । কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামে তিনি বসবাস করেন। নিবু মিয়ার নিজের কোন বসত ভিটা নেই, থাকেন অন্যের বাড়িতে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রেমে টানা ৪৩ বছর ধরে পশু কোরবানী দিয়ে আসছেন।
টাকার অভাবে নিজের বসত ভিটা, জায়গা জমি বিক্রি করে কোরবানী দিয়েছেন।
বসতভিটাহীন অন্যের বাড়িতে থেকে মুক্তিযুদ্ধা হিসাবে যে সম্মানি ভাতা পান তা থেকে টাকা বাঁচিয়ে প্রতিবছর কোরবানীর ব্যবস্থা করেন। সরকারী ভাতা পাওয়ার আগে তিনি কাঠ মিস্ত্রীর কাজ করে এক বেলা খাবার কম খেয়ে কোরবানীর টাকা সংগ্রহ করতেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতি এমনিভাবে তিনি অভিনব ভালবাসার প্রকাশ ঘটিয়ে চলেছেন। নিবু মিয়া বলেন, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে মাসে যে টাকা ভাতা পাই তা থেকে সঞ্চয় করে প্রতি কোরবানী ঈদে পশু কোরবানী দেন। কোন স্বীকৃতির আশায় নয় বঙ্গবন্ধুর প্রতি অকৃএিম ভালবাসা থেকে প্রতি বছর এই কোরবানী দেই । তিনি আরো বলেন, মৃত্যুর আগে আমার জীবনের শেষ ইচ্ছা স্বাধীনতার মহা-নায়ক বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করার। সরেজমিনে নিবু মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ৭৪ বছর বয়সী নিবু মিয়া বয়সের ভারে অনেকটা নুয়ে পড়েছেন, ঘরে বঙ্গবন্ধুর ছবি ফুলের মালা দিয়ে সু-সজ্জিত করে সাজিয়ে রেখে ছেন। কথা হয় এলাকাবাসীর সাথে, তারা বলেন, নিবু মিয়াকে আমরা বঙ্গবন্ধু প্রেমী বলে ডাকি। তবে অসুস’তার কারনে ঘর থেকে তিনি এখন বের হতে পারেন না । এলাকাবাসীর দাবী বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন নিবু মিয়ার শেষ ইচ্ছা পুরন করেন।
নিবু মিয়া সেক্টর কমান্ডার জেনারেল শফিউলস্নার অধীনে ৩নং সেক্টরে যুদ্ধকালীন সময়ে শক্রপক্ষের গুলিতে আহত হয়েছিলেন। এখনও তার ডান পায়ের হাঁটুতে পাক বাহিনীর গুলির আঘাতের দাগ রয়েছে। বর্তমানে তিনি উপজেলা চান্দপুর কোনাপাড়া গ্রামে সুরুজ আলী ভুঁইয়ার বাড়ীতে বসবাস করেন।