| সকাল ১১:৩২ - শনিবার - ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

এক বছর পার হয়ে গেল গাজা যুদ্ধের…

অনলাইন ডেস্ক,| ৮ জুলাই ২০১৫, বুধবার:

দেখতে দেখতে এক বছর পার হয়ে গেল গাজা যুদ্ধের। আজকের দিনেই ফিলিস্তিনের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইল। সে হামলায় নিহত হয় ২২৫১ জন ফিলিস্তিনি। যাদের সিংহভাগই ছিলেন শিশু, নারী কিংবা বেসামরিক নাগরিক। আহত হন হাজার হাজার মানুষ। গত গ্রীষ্মের ওই যুদ্ধের এক বছর পরের গাজার চিত্র কেমন? এখনও ধ্বংসস্তুপ থেকে উঠে দাঁড়াতে পারেনি গাজা। অবকাঠামো খাত ভেঙ্গে চুরমার, এখনও ঠিক হয়নি সেসব। লাখো মানুষ আজও মৌলিক অধিকার পেতে লড়াই করছে অবিরত। অনেকে এখনও যুদ্ধের ভয়াবহতা দূর করতে পারছে না নিজের চোখের সামনে থেকে। আতঙ্ক দখল করে আছে মনের ভেতরটা। ১০ বছরের নিচের বেঁচে যাওয়া বহু শিশুই প্রত্যক্ষ করে ফেলেছে ৩টি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের নৃশংসতা। মানসিক ট্রমা এখন তাদের সঙ্গী। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে আল জাজিরা। বহু ফিলিস্তিনির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুব অল্প ক’জনই সামলে উঠেছেন ধকল কিংবা কাটাতে পারছেন স্বাভাবিক জীবন। ইব্রাহিম আবদেলদাএম যুদ্ধে বেঁচে গেলেও হারিয়েছেন নিজের পা জোড়া। তার পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছে গাজার একটি জাতিসংঘ চালিত বিদ্যালয়ে। হামলায় নিহত হয়েছে তার পিতা ও ভাই। যুদ্ধের এক বছর পর ইব্রাহিম বলছেন, জীবন আরও ভালো হবে, এমন কোনো আশা তার আর নেই। তার ভাষায়, আমি স¤পূর্ন বিধ্বস্ত। আমি আমার পা হারিয়েছি, চাকরি খুইয়েছি। আমি আর গাজাতে থাকতে পারবো না। কারণ পুরো অঞ্চল চারপাশের অবরোধে ঘেরা। আমি এখন শুধু একটি নকল প্রত্যঙ্গ চাই, যাতে করে নিজেকে আবারও আমি স্বাভাবিক মানুষ ভাবতে পারি। গাজার পুনরুদ্ধারে ৫০০ কোটি ডলার দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, আরব উপসাগরীয় দেশগুলো সহ দাতাসংস্থাসমূহ। কিন্তু কয়েক বছর ধরে বিদ্যমান থাকা ইসরাইলের অর্থনৈতিক অবরোধের কারণে সিমেন্টের মতো খুবই প্রয়োজনীয় নির্মান সামগ্রীও প্রবেশ করতে পারছে না গাজায়। জাতিসংঘ পুরো প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষনের প্রস্তাব দিলেও রাজী হয়নি ইসরাইল। প্রায় ২০ হাজার ফিলিস্তিনি এখনও বিভিন্ন ধরণের সাময়িক আশ্রয়ে রয়েছে। কার্গো কন্টেইনার্স থেকে শুরু করে তাবু ও বোমায় বিধ্বস্ত বাড়ির অবশিষ্টাংশে বসবাস করছে মানুষ।
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের বিশেষ ত্রাণ ও কর্ম সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) পরিচালক রবার্ট টার্নার গাজায় গত বুধবার একটি শান্তি সম্মেলনের সময় বলেন, এখনও ৭ সহস্রাধিক বাড়িঘর পুনরায় বানাতে হবে। তিনি বলেন, এখন আমরা যা করতে পারি তা হলো, গাজার ফিলিস্তিনিদের আরও ভালো ভবিষ্যৎ প্রাপ্য – এ বার্তা ছড়িয়ে দেয়া। আন্তর্জাতিক সকল ত্রাণ ও সাহায্য সংস্থা গত বছরে যুদ্ধের প্রভাবকে ‘ধ্বংসাত্মক’ বলে আখ্যা দিয়েছে। ৭টি হাসপাতাল, ৫৬টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য স্থাপনা, ৪৫টি অ্যামবুলেন্স স¤পূর্ন অথবা আংশিক ধ্বংস হয়েছে। এর ফলে গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ৫ কোটি ডলার। সে যুদ্ধে ২ সহস্রাধিক ফিলিস্তিনি ছাড়াও নিহত হয়েছে ৭৩ ইসরাইলি নাগরিক। তাদের মধ্যে ৬৭ জনই অবশ্য সামরিক বাহিনীর সদস্য। গত বছরের যুদ্ধের অজুহাত হিসেবে ইসরাইল বলেছিল, হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠির রকেট হামলার ইতি ঘটাতেই ওই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৪:৫৫ অপরাহ্ণ | জুলাই ০৮, ২০১৫