| বিকাল ৪:০৯ - সোমবার - ২২শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৯ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১২ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

 
অনলাইন ডেস্ক,২ জুলাই ২০১৫, বৃহস্পতিবার,
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করে বলেছেন, এই বিমানবন্দরটি হবে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে একটি কেন্দ্র।

শেখ হাসিনা বলেন, বিবিআইএন (বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল) সড়ক কানেকটিভিটি প্রতিষ্ঠার পর ট্রান্স-এশিয়া রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা হবে। এর ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার চার দেশ যথাক্রমে বাংলাদেশ, চীন, ভারত-মিয়ানমার (বিসিআইএম) তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে একটি অর্থনৈতিক করিডোর গড়ে উঠবে।
প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার এয়ারপোর্ট চত্বরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীবর্গ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।
এ সময় কক্সবাজার থেকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। বেসামরিক বিমান মন্ত্রণালয়ের সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী ৫৭৮ কোটি টাকার প্রকল্পটি সম্পর্কে ব্রিফকালে বলেন, কক্সবাজার এয়ারপোর্টের বর্তমান রানওয়ে সম্প্রসারণ করে ৬,৬৭৫ ফিট থেকে ৯০০০ ফিট দীর্ঘ করা হবে। অপরদিকে প্রশ্বস্থ ১৫০ ফিট থেকে ২০০ ফিট করা হবে।
পাশাপাশি রাতে ফ্লাইট উঠা-নামা করার জন্য এযার ফিল্ড লাইটিং সিস্টেম স্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, বিমানবন্দরটি থেকে বোয়িং-৭৭৭ ফ্লাইট চলাচল সুবিধা থাকবে। তিনি আরো বলেন, কক্সবাজারের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সুবিধা প্রদানে বাকখালি নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হবে। ৩০ মাসে প্রকল্প কাজ সম্পন্ন হবে।
শেখ হাসিনা বিবিআইএন সড়ক ট্রানজিট সুবিধা ছয় মাসের মধ্যে পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তখন চার দেশ তাদের সীমান্ত দিয়ে যাত্রিবাহী ও পণ্যবাহী যান চলাচলের সুবিধা পাবে।
প্রধানমন্ত্রী দেশের নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের আয়ে বাংলাদেশের সফলতা সম্পর্কে বিশ্ব ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনের উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ পরবর্তী দু’থেকে তিন বছরের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশ হবে।
তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে নানা ষড়যন্ত্রসহ নানামুখী বাধার মুখেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত রেখেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় একটি সমৃদ্ধিশালী ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে এগিয়ে যাবার লক্ষ্যভ্রষ্ঠ কেউ করতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী পর্যটন কেন্দ্র ও ভৌগোলিক অবস্থান থেকে কক্সবাজারের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, দেশী এবং বিদেশী পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় করতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকতের আরো উন্নয়ন করা হবে। তিনি আরো বলেন, বঙ্গোপসাগরে নতুন সমুদ্র সীমানা সংক্রান্ত বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠার পর কক্সবাজার এখন আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত স্থান। তিনি বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দর পরিবহন বিমানের জ্বালানি সংগ্রহের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের গুনধুমের মধ্যে প্রস্তাবিত রেল যোগাযোগ খুব শিগগির স্থাপিত হবে। প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই ও ভূমি অধিগ্রহণ কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার জেলায় তাঁর সরকার গৃহীত প্রকল্পসমূহের উল্লেখ করে বলেন, মাতারবাড়িতে আল্ট্রা-সুপার ক্রিটিক্যাল থারমাল পাওয়ার প্লান্ট এবং একটি অর্থনৈতিক জোন গড়ে উঠলে পর্যটন নগরীর সামগ্রিক উন্নয়ন চিত্র বদলে যাবে এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এটি ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের পুনর্বাসনের জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এতে তারা বসবাসের, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার সকল মৌলিক সুবিধা ভোগ করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, কক্সবাজার দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল। কক্সবাজারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি ডিভিশন করা হয়েছে। তিনি বলেন, কক্সবাজারে একটি ম্যারিন এ্যাকুয়ারিয়াম নির্মাণ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যের শুরুতে সাম্প্রতিক বন্যায় জনজীবনের ক্ষতি হওয়ায় কক্সবাজারে জনগণের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, সরকার বন্যার্তদের জন্য সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, সরকার বর্ষা মওসুম শেষে খুব শিগগির ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পুনর্নির্মাণ করবে।(বাসস)

সর্বশেষ আপডেটঃ ৯:১৯ অপরাহ্ণ | জুলাই ০২, ২০১৫