| বিকাল ৪:৩৪ - শুক্রবার - ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

বিশ্ব খাদ্য পুরস্কারে ভূষিত হলেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ

অনলাইন ডেস্ক,২ জুলাই ২০১৫, বৃহস্পতিবার:

বিশ্ব খাদ্য পুরস্কারে ভূষিত হলেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ। বিশ্বব্যাপী ১৫ কোটিরও বেশি মানুষকে দারিদ্র্যতার কষাঘাত থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করার জন্য তাকে বুধবার এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এ খবর দিয়েছে বার্তাসংস্থা এপি। এছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে ফজলে হাসান আবেদকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। সেখানে বলা হয়, যাদের যুগান্তকারী অর্জন বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার অগ্রগতি ও ক্ষুধা নিরসনে সহায়তা করেছে, তাদের জন্য এ পুরস্কার সবচেয়ে মর্যাদাবান। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি চার্লস এইচ রিভকিন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিষয়ক মন্ত্রী থমাস ভিলস্যাক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেনেথ এম. কুইন বিজয়ী হিসেবে ফজলে হাসান আবেদের নাম ঘোষণা করেন। এ বছর ১২তম বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হলো। তবে বিশ্ব খাদ্য পুরস্কারের ২৯ তম বছর এটি। পুরস্কারের হিসেবে স্যার আবেদ আড়াই লাখ ডলার পাবেন।
তার প্রতিষ্ঠিত ব্র্যাক বা বাংলাদেশ রুরাল অ্যাডভান্সডমেন্ট কমিটি ১৯৭০ সালের টাইফুনের পর থেকে সাময়িক ত্রাণ সংগঠন হিসেবে সারাদেশে কাজ করে। দারিদ্র্যতা দূরীকরণের দিকেই এরপর থেকে মনোযোগী হয় ব্র্যাক। ক্রমেই বিশ্বের সর্ববৃহত এনজিও’তে পরিণত হয় সংগঠনটি। ধারনা করা হয়, এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ জুড়ে ১৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যতার হাত থেকে মুক্ত হতে সহায়তা করেছে সংস্থাটি। বাংলাদেশ থেকে টেলিফোনে এপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আবেদ বলেন, দারিদ্র্যতা একটি বহুমাত্রিক বিষয়। কেবলমাত্র আয় বা কর্মসংস্থানের অভাবই দারিদ্র্যতা নয়। দারিদ্র্যতার মানে সুযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবার অভাবও।
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট কেনেথ কুইন বলেন, যেটা স্যার ফজলেকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করে, তা হলো, তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন বিশ্বের সর্ববৃহত ও কারো কারো মতে সবচেয়ে কার্যকরী ও দূরে পৌঁছানো অলাভজনক এনজিও। যেটির কর্মীর সংখ্যা লক্ষাধিক।
ব্র্যাকের মতে, সারাবিশ্বে এখনও প্রায় ১০০ কোটি মানুষ দরিদ্র, যাদের দৈনিক আয় ১.২৫ ডলারের চেয়ে কম। কিন্তু আরও কোটি কোটি মানুষও আছে যারা ওই অর্থের অর্ধেরকেরও কম আয় করে। তারা চরম দারিদ্র্যসীমার আওতাভুক্ত। আবেদ বলেন, অনেক দেশে দরিদ্র মানুষদের সমস্যা হিসেবে দেখা হয়। অথচ তাদেরও সংগঠিত করা যায়। তারা নিজেরাই দারিদ্র্যতার সমাধান হতে পারে। যা করতে হবে, তা হলো, তাদেরকে সুযোগ, পরিবেশ ও সরঞ্জাম দিতে হবে। জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির প্রতিবেদন মতে, ১৯৯১-৯২ অর্থবছরে যেখানে বাংলাদেশের দারিদ্র্যতার হার ছিল ৫৬.৭ শতাংশ, ২০১০ সালে তার ৩১.৫ শতাংশে অবনমন ঘটে।
আগামী অক্টোবর মাসে দেস মোইনেসে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ফজলে হাসান আবেদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার তুলে দেয়া হবে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ২:২০ অপরাহ্ণ | জুলাই ০২, ২০১৫