পাকুন্দিয়া-মঠখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ
সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়, ১ জুলাই ২০১৫, বুধবার,
রাজধানী ঢাকার সাথে কিশোরগঞ্জ জেলার সহজ ও সরাসরি যোগাযোগের অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক পাকুন্দিয়া টু মঠখোলা। ১০ কিলোমিটারের এ সড়কের উপর দিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক যান চলাচল করে থাকে। এছাড়াও এ সড়কটি নরসিংদী-মনোহরদী-ভৈরব যাতায়াতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
কিন’ দীর্ঘদিন থেকে এ সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল হচ্ছে। এতে যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। সড়কের দু’পাশের মাটি সরে গিয়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আর ওই গর্তে পানি জমে ভয়ংকর ওয়ে ওঠেছে। একটি বাস অন্য বাস কিংবা অন্য কোন পরিবহনকে সাইড বা ক্রসিং করতে গিয়ে একদিকে যেমন ঝুঁকি নিচ্ছে তেমনি দীর্ঘক্ষণ সময় লাগায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রিরা।
পাকুন্দিয়া-মঠখোলা সড়ক ছাড়াও একই উপজেলার অপর সড়ক পাকুন্দিয়া-মির্জাপুর সড়কে সংস্কার কাজ হওয়ায় ওই সড়কের বাসসহ ভারী যানবাহনগুলোও বাধ্য হয়ে পাকুন্দিয়া টু মঠখোলা সড়ক ব্যবহার করছে। এতে একদিকে সড়কটি যেমন আরও ব্যস-তম হয়ে ওঠেছে তেমনি ঝুঁকির মাত্রাও বেড়ে যাচ্ছে।
পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামি ৬৫-৭০টি অনন্যা পরিবহন, ৩৫-৪০টি অনন্যা ক্লাসিক পরিবহন এবং নান্দাইল থেকে বন্যা পরিবহন ৩৫-৪০টি ও জলসিঁড়ি পরিবহনের ৩৫-৪০টি বাস আসা-যাওয়া করে থাকে। এছাড়াও এ সড়কদিয়ে পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহ, নান্দাইল কিশোরগঞ্জ থেকে ভারী পরিবহন চলাচল করে থাকে।
সড়কের গর্তে পড়ে গিয়ে ছোট খাটো দুর্ঘটনাও ঘটার সংবাদ পাওয়া গেছে। সড়কটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় সাধারণ পথচারি ও স’ানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের আগে রাস-াটি সংস্কার না হলে দুর্ভোগের মাত্রা বাড়ার পাশাপাশি বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। বাড়তি যানজটের ভোগানি- তো থাকবেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পাকুন্দিয়া পৌরসদর বাজার থেকে মঠখোলা বাজার পর্যন- দু’পাশের মাটি সরে গেছে। এতে রাস-ার দু’পাশে বড়বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে পৌরসদর বাজারের রামকৃষ্ণ মিষ্টান্ন ভান্ডার ও হাপানিয়া প্রাণী সম্পদ হাসপাতালের সম্মুখে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পথচারিসহ যানবাহনে চলাচলরত যাত্রিরা। এছাড়াও মঠখোলা বাজারের প্রবেশ মুখ ও খামা নামক স’ানে বড় গর্তে পানি জমে ভয়ংকর আকার ধারণ করছে। দেখে মনে হয় সড়ক নয়, যেন পুকুর।
তাই এ সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে পথচারিসহ যাত্রিসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে কাজ করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমনটাই প্রত্যাশা সাধারণ নাগরিকদের।
পৌরসদরের দুইটি অংশে বড় গর্তের ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যাপারে পাকুন্দিয়া পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট মো.জালাল উদ্দিন বলেন, সড়কটি পৌরসভার আওতাভূক্ত নয়। কাজেই এতে কোন বরাদ্দ দেওয়ার এখতিয়ার পৌর কর্তৃপক্ষের নেই। তবে তিনি ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকার পিকেট ওই দুই অংশে খরচ করেছেন বলে জানান।
কিশোরগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, সড়কটি সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে গত জানুয়ারি মাসে এলজিইডি’র আওতাভুক্ত হয়েছে। তাই এ নিয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কিছইু করার নেই।
এ ব্যাপারে এলজিইডির কিশোরগঞ্জ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মাওলার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সড়কটি সবেমাত্র এলজিইডির আওতায় এসেছে। আগামি শুষ্ক মৌসুমে সংস্কার করা হবে।
সড়কটির সাময়িক কোন সংস্কার করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তারা।