| সকাল ১০:৪৩ - বৃহস্পতিবার - ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সমকাম সমর্থনের ছয়রঙ নিয়ে ফেসবুকে বিতর্ক

সমলিঙ্গের মানুষের বৈবাহিক বৈধতা প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের রায়ের প্রভাব পড়েছে বিশ্বজুড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক রঙিন হয়ে গেছে সমকামী-পতাকার ছয় রঙে। বাইরে নেই বাংলাদেশও। এখানকার অনেকেই সমকামী বিয়ের প্রতি সমর্থন জানিয়ে নিজেদের প্রোফাইল পিকচার রঙিন করেছেন। তবে অনেকেই আবার জানেন না, এই রঙিন করার মানে কী।

প্রোফাইল ছবির উপর রংধনু ফিল্টার করতে ফেসবুক নতুন একটি টুল ‘সেলিব্রেটি প্রাইড’ চালু করেছে। ফেসবুক সিইও মার্ক জাকারবার্গ নিজের প্রোফাইল ছবিতে রংধনু দেওয়ার মাধ্যমে সবার কাছে এই টুলের খবর তুলে ধরেন। আর এরপরই দেখা যায় প্রোফাইল ছবিতে রংধনু ফিল্টার বসানোর হিড়িক।

প্রসঙ্গত, ২৬শে জুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদালত এক ঐতিহাসিক রায়ে সমলিঙ্গের মধ্যে বিয়ের বৈধতা প্রদান করে। ফেসবুক এই আইনের সমর্থকদের জন্য চালু করে ‘সেলিব্রেটি প্রাইড’ নামের বিশেষ টুলটি। টুলটি ব্যবহারের পক্ষে-বিপক্ষে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

বাংলাদেশি এক ফেসবুক ব্যবহারকারী কচি রেজা তার ওয়ালে লিখেছেন, ‘বুঝি না , আমেরিকা যে সমকামীদের বিয়ের অধিকার আইনসম্মত করে নিল , এর কী দরকার ছিল ‘ তিনি লিখেছেন, ‘ইতিহাসে যেটা পাই , সন্তানের বৈধতা মানে সেই আদিম যুগে নারী এবং পুরুষ যখন বহুগামী ছিল ( এখনও আছে ) কিন্তু সন্তান যেহেতু ধারণ করতে হয় নারীকেই সেইহেতু পিতৃত্ব ( নাকি কার বীর্যে ) নির্ধারক হিসেবে এই নর নারীর বিবাহ জরুরী ছিল । কিন্তু সমকামীদের বিয়ের দরকার পড়লো কিসে ???? বুঝিনা –আমি বুঝিনা—’

চন্দন রিমু নামের একজন নিজের স্ট্যাটাসে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সমকামের বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে কেন বলাৎকার করছেন?
সমাজ ও ধর্মসংস্কার, লোকলজ্জার ভয় বেশকিছু সমকামীকে সমকামের বিপক্ষে বলতে বাধ্য করছে। সমকামের বিপক্ষে বলা সমকামীদের দেখে স্বল্পবুদ্ধির আমি নিজেও বুঝি যে সমকামিতার পক্ষে বললে কেউ সমকামী হয়ে যায় না।’ তিনি লিখেছেন, ‘সমকামী না হয়েও যারা সমকামের পক্ষে বলছেন তাদের মানবিক মুল্যবোধ আর সংবেদনশীলতা নিয়ে আমার প্রশ্ন নেই কিন্তু যারা না বুঝেই, পৈতৃক রেষ, ধর্মের বানী দিয়ে এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করছেন তাদের মানুষ পরিচয় নিয়ে আমি সন্দিহান।’

মাধবীলতার মৌ লিখেছেন, ‘প্রোপিক দিয়া সাপোর্ট করার কিছু নাই। সেদিন মায়েরে বলছি আমার ছেলে কিংবা মেয়ে গে অর লেসবিয়ান হলে আমি অবশ্যই মেনে নিবো। কারণ, একটা মেয়ের একটা ছেলেকে ভালোলাগা যেমন স্বাভাবিক, তেমনি একটা ছেলের একটা ছেলেকে ভালো লাগা খুবই স্বাভাবিক ‘ তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, মানসিক গঠন যার যেমন সে তার বাইরে যাবে কেমনে? কেনো? ‘

সারোয়ার তুষার নামের একজন লিখেছেন, প্রেম যে একটা সুস্থ চর্চা সেই দাবি তুলতে হবে আগে। প্রেম যে একটা স্বাভাবিক চর্চা সেই শোরগোল করতে হবে আগে। ‘কেউ প্রেম করলে তাকে নিয়ে গুজুর গুজুর ফুসুর ফুসুর করবোনা সেই শপথ করতে হবে আগে, কোন প্রেমময় জুটিকে দেখে ‘কপোত কপোতী’ বা এই ধরনের ঠাট্টাতামাসা, তাচ্ছিল্যমূলক কথাবার্তা বলবো না সেই পণ করতে হবে আগে।দুটি ছেলে মেয়ে কে একসাথে দেখলেই ‘গসিপ’ শুরু করে দিবোনা সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে হবে আগে।দুটি মানুষ তাদের সম্পর্কে যতটুকু রিভিল/প্রকাশ করে ততটুকুই জানবো, এর বেশি নিজে স্ব:প্রণোদিত হয়ে কোন সিদ্ধান্তে যাবো না সেই কথা মাথায় রাখতে হবে আগে ‘

তিনি মনে করেন, প্রায়োরিটি ফিক্স করতে হবে আগে। ‘প্রেম খুব স্বাভাবিক প্রবৃত্তি, এ’কে আলাদা করে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখার কিছু নেই এই চর্চা শুরু করতে হবে আগে।এরপর যখন আমরা কথা বলবো, বলবো যে প্রেম যে কারোর মধ্যেই হতে পারে, দুজন সমলিঙ্গীয়দের মধ্যেও হতে পারে, আবার বিপরীত ধর্মের নর নারীর মধ্যেও হতে পারে তখন আমাদের কথা বলাটা অর্থবহ হবে, প্রাসঙ্গিক হবে ‘ তিনি মনে করেন, সবার আগে তাই প্রেমের চর্চাকে প্রতিষ্ঠিত করা জরুরি’। সুত্রঃ প্রিয়

সর্বশেষ আপডেটঃ ৮:২০ পূর্বাহ্ণ | জুন ২৯, ২০১৫