| সকাল ৬:০৫ - শুক্রবার - ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

গরিবের টাকা কর্মকর্তার পকেটে

সিম্মী আহাম্মেদ, কিশোরগঞ্জ ● ২৭ জুন ২০১৫, শনিবার,
কিশোরগঞ্জে সমাজসেবা বিভাগের অনুদানের অর্থ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। দুস’ রোগী, হতদরিদ্র, দরিদ্র মেধাবী ছাত্র ও ছাত্রী এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ড়্গতিগ্রস’দের সমাজসেবা বিভাগের অনুদান পাওয়ার বিধান থাকলেও তা উপেড়্গা করা হচ্ছে। কমিশনের বিনিময়ে সুবিধাভোগীদের তালিকা তৈরি করে অনুদানের অর্থ বিতরণ দেখিয়ে গরিবের টাকা পকেটে পুরছেন খোদ জেলা সমাজসেবা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলম। যে কারণে সুবিধাভোগীর তালিকা তৈরিতে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে না জেলা সমাজকল্যাণ পরিষদের কর্মকর্তাদেরও। উপ-পরিচালকের উৎকোচ বাণিজ্যের কারণে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা এ খাত জেলায় মুখ থুবড়ে পড়েছে।
জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের নির্বাহী সদস্য ও জেলা সমাজকল্যাণ পরিষদের সহ-সভাপতি বাদল রহমান জানান, উপ-পরিচালক সামছুল আলমের স্বে”ছাচারিতামূলক কর্মকা- ও অনিয়মের কারণে জেলায় সমাজসেবা বিভাগের কার্যক্রমে স’বিরতা নেমে এসেছে। প্রতি বছর দুস’ রোগী, হতদরিদ্র, দরিদ্র মেধাবী ছাত্র ও ছাত্রী এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ড়্গতিগ্রস’দের মাঝে সমাজসেবা বিভাগের অনুদানের অর্থ বিতরণের কথা থাকলেও ২০১৩ সালের বরাদ্দের অর্থ আজো বিতরণ করা হয়নি। এছাড়া ২০১৪ সালের টাকাও তিনি বিতরণে আগ্রহী হননি। এতে সরকারের এ সেবামূলক অনুদান থেকে দুস’ সহায়তা প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়ে আসছিলো। এ অবস্থায় তড়িঘরি করে একটি মনগড়া তালিকা তৈরি করে উপ-পরিচালক সামছুল আলম অনুদানের অর্থ বিতরণের উদ্যোগ নিলেও তাকেসহ পরিষদের অধিকাংশ কর্মকর্তাকেই বিষয়টি অবহিত করেননি। পরে সে তালিকা অনুযায়ী শনিবার (২৭শে জুন) সকালে তিনি অনুদানের অর্থ বিতরণ করেন।
বাদল রহমান অভিযোগ করে বলেন, তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া এবং অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়টিও আমার নিকট গোপন রাখা হয়। অথচ আমি জেনেছি, অনুষ্ঠানের ব্যানারে আমার নাম বিশেষ অতিথি হিসেবে রাখা হয়েছে। গোপনে আমার নাম ব্যবহারের মাধ্যমে উপ-পরিচালক তার অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার (২৭শে জুন) সকালে জেলা কালেক্টরেট সম্মেলন কড়্গে সমাজকল্যাণ পরিষদ কর্তৃক এককালীন ব্যক্তি অনুদানের অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলা সমাজসেবা বিভাগের উপ-পরিচালক সামছুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক এসএম আলম। অনুষ্ঠানে সমাজসেবা বিভাগের ৩-৪জন কর্মকর্তা/কর্মচারী ছাড়া আর কাউকে দেখা যায়নি। ব্যানারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাদল রহমানের নাম থাকলেও তিনি অনুপসি’ত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকের হাত থেকে সর্বো”চ ৫০ জন সুবিধাভোগী অনুদানের অর্থ গ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে উপ-পরিচালক সামছুল আলম জানান, আবেদনের ভিত্তিতে ১৩৫ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। বদলিজনিত কারণে জেলা প্রশাসক মহোদয় অন্য জেলায় চলে যাবেন, এ জন্যে কম সময়ের মধ্যে অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আয়োজনের বিষয়টি জেলা সমাজকল্যাণ পরিষদের সহ-সভাপতি বাদল রহমানসহ সংশিস্নষ্টদের আগেই অবগত করা হয়েছিল। কিন’ অজ্ঞাত কারণে বাদল রহমান অনুদানের অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপসি’ত ছিলেন না। তিনি তালিকা তৈরি ও বিতরণে কোন অনিয়ম হয়নি দাবি করে বলেন, ২০১৩ সালের কিছু টাকা ছিল। ২০১৪ সালের টাকাসহ সব মিলিয়ে ১২ লাখ টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে। পরবর্তিতে আবেদনের মাধ্যমে সেসব অর্থ যোগ্যদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ১১:০৫ অপরাহ্ণ | জুন ২৭, ২০১৫