| দুপুর ২:২১ - শুক্রবার - ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

আমরা নিজেদের ভূমিকাটুকু মাঠে প্রয়োগ করবো :নাসির

অনলাইন ডেস্ক,২৪ জুন ২০১৫, বুধবার:

সংবাদ সম্মেলনে বারবার ঘুরেফিরে আসছিল বাংলাওয়াশ শব্দটি। বিশেষ করে ভারতীয়দের আগ্রহ ভীষণ বেশি। তবে ভারত যে ছেড়ে কথা কইবে না তাও তারা মনে করিয়ে দিলেন। কিন্তু নির্ভার নাসির হোসেনের জবাব শুনে হয়তো একটু অবাকও হলেন তারা। নাসির বলেন, ‘ভারত আমাদের ওপর তাদের সর্বোচ্চ আক্রমণ করবে এটা আমরা জানি। কে কি পরিকল্পনা করে আমাদের উপর আক্রমণ করলো এটা দেখার বিষয় নয়। আমরা কি করছি- সেটাই আমাদের কাছে অনেক বড় ব্যাপার। প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই আলাদা আলাদা ভূমিকা আছে, আমরা নিজেদের ভূমিকাটুকু মাঠে প্রয়োগ করার চেষ্টা করবো।’ ভারতকে পরপর টানা দুই ম্যাচে হারানোর পর নিজে নিজেই কি বড় দল হিসেবে ভাবছে বাংলাদেশ। না সেই আত্মতুষ্টি এখনও আসেনি দলের ক্রিকেটারদের। এত অর্জনের পর পা মাটিতে রেখেই নাসির বললেন, আমি এখনও বলবো না, আমরা বড় দল হয়ে উঠছি। এখনও পুরোপুরি আমরা বড় দল হয়ে উঠতে পারিনি। কারণ আমরা হোম কন্ডিশনে খেলছি। এটা বড় ব্যাপার। এখনও বলতে পারছি না আমরা বড় দল কিনা।’ তবে মুখে বিনয় থাকলেও হোয়াইটওয়াশ করার প্রসঙ্গটি আসতে একটি বাক্যেই বুঝিয়ে দিলেন আত্মবিশ্বাস-‘ইনশাআল্লাহ।’
এরপর ভারতীয় সংবাদকর্মীদের শুরু হলো নাসিরকে নিয়ে কাটাছেঁড়া। ‘যে বনে বাঘ নেই সেই বনে বিড়ালও বাঘ।’- নাসির হোসেনের কথাটি শুনে সংবাদ সম্মেলনে হাসির রোল পড়লো। নাসির হোসেনকে যখন দেশের সেরা অফ স্পিনার বলা হচ্ছিল তখন তার উত্তর এ রকমই। আসলে নিজে যে ব্যাটসম্যান হিসেবেই থাকতে চান বোলার নয়। তাই বলেন, ‘আসলে ১১ জনের মধ্যে কোন ডানহাতি অফ স্পিনার নেই তো তাই আমি সেরা।’ দ্বিতীয় ম্যাচে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময় অধিনায়ক মাশরাফি তার হাতে বল তুলে দেন। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই ভারতের ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যান বিরাট  কোহলিকে পরিষ্কার এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলে দেখান সাজঘরের পথ। দুই ম্যাচে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে দেখিয়েছেন অসাধারণ ফিল্ডিং। ভারতীয় এক সাংবাদিক প্রশ্নও করে বসলেন, তুমি ব্যাটিং অলরাউন্ডার নাকি বোলিং অলরাউন্ডার? নাসির হোসেনের সরল সোজা জবাব, ‘আমি ব্যাটিং অলরাউন্ডার।’
এক সময় ব্যাট হাতে দলে নাসির হোসেনের পরিচয় ছিল মিস্টার ফিনিশার। কিন্তু অধিনায়ক মাশরাফি তাকে বোলার বানিয়েছেন। মাঝে জিম্বাবুয়ে সফরে ফর্মের কারণে বাদ পড়ার পর যখন বিশ্বকাপে মাঠে ফিরেন, তখন অধিনায়ক তার বোলিংয়ে এতটাই আস্থা রাখেন যে, বিশ্বকাপেও তাকে দিয়ে ১০ ওভার বল করানো হয়। তাহলে কি দল থেকে বাদ পড়ার পর বোলিংটা নিয়েও আলাদাভাবে কাজ করেছেন নাসির? কিন্তু নাসির শোনালেন অন্য কথা। তিনি বলেন, ‘আমি আগে থেকেই বোলিং করি। জাতীয় দলে যেহেতু রিয়াদ ভাই, সোহাগ গাজীসহ আরও স্পিনার ছিল তখন আমার সুযোগ হয়নি। আসলে মাশরাফি ভাই আমাকে সব সময় বলেন এবং বলতেন, তুই কিন্তু  বোলিং করবি। তুই যখন বোলিং করবি কখনই মনে করবি না তুই পার্টটাইম বোলার। যখন বোলিং করবি তখন চিন্তা করবি তুই মেইন বোলার। এমন প্রেরণা সব সময় আত্মবিশ্বাস যোগায়।’ তবে ব্যাট দিয়ে দায়িত্ব পালন করতে দলে এসেছেন সেটি করার সুযোগ হচ্ছে না। বিশ্বকাপ থেকেই দলের টপঅর্ডার আর মিডল অর্ডার এতটাই ফর্মে যে, নাসিরের হাতে ব্যাট উঠতে উঠতে খেলা শেষ। কিন্তু এ নিয়ে কোন আক্ষেপ নেই নাসির হোসেনের। সুযোগ পেলে দেখিয়ে দেবেন তাও স্পষ্ট করে বললেন, ‘দেখেন- পাকিস্তান সিরিজে আমি একটা খেলায়ও ব্যাট করিনি। ভারতের বিপক্ষে সিরিজেও এক ম্যাচ সুযোগ পেয়েছি। আমি আসলে সেই রকম সুযোগ পাচ্ছি না। তার আগেই দেখা যাচ্ছে  খেলা শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে সুযোগ পেলে অবশ্য কাজে লাগাবো।’
অন্যদিকে নাসির মাঠে ফিল্ডিং ইনজয় করে সাফল্য পাচ্ছেন। তেমনি মাঠে দু’দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের লড়াই দেখেও খুব মজা পাচ্ছেন। ভারতের এক সংবাদকর্মী জানতে চাইলেন বাংলাদেশ কি খুব রাগ নিয়ে খেলছে? নাসিরের সরল উত্তর-‘রাগ নিয়ে খেলবো কেন? টিভিতে অ্যাডগুলো দেখতে ভালই লাগে। আমরা কী কম্পিটিশন করবো; দুই দেশের মানুষই তো আমাদের চেয়ে বেশি কম্পিটিশন করে! এ বিষয়ে আর বিশেষ কিছু বলার নেই।’

সর্বশেষ আপডেটঃ ১২:৫২ অপরাহ্ণ | জুন ২৪, ২০১৫