| রাত ২:৫৩ - শনিবার - ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

অর্থমন্ত্রী সংসদে বাজেট উপস্থাপন করবেন আগামীকাল

অনলাইন ডেস্ক, ০৩ জুন, বুধবার,

 অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আগামীকাল বিকাল সাড়ে ৩টায় জাতীয় সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন।
এটি হবে বাংলাদেশের ৪৪তম বাজেট এবং আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬তম। আর অর্থমন্ত্রী হিসাবে আবুল মাল আবদুল মুহিতের নবম বাজেট। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতই প্রথম অর্থমন্ত্রী যিনি ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছর পর্যন্ত একনাগাড়ে ৭টি বাজেট পেশ করছেন। অবশ্য তিনি ১৯৮২-৮৩ ও ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরে আরো দুটি বাজেট পেশ করেছিলেন।
গত বছরের বাজেট পেশের সময় তিনি ঘোষণা করেছিলেন, বাজেটে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং আয় বৈষম্য কমিয়ে এনে জনগণকে দারিদ্রর বৃত্ত থেকে বের করার গতিশীল প্রক্রিয়া থাকবে।
দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রেখে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়ন, অবকাঠামো খাতের আরো উন্নয়ন এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতে বিশেষ মনোযোগ প্রদান চলতি অর্থবছরের বাজেটে মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
আর অর্থমন্ত্রী যখন আগামী অর্থবছরের বাজেটের কৌশল নির্ধারণ করছিলেন, তখন রাজনীতির নামে সারা দেশে সংঘটিত নজিরবিহীন সহিংসতার ফলে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির বিষয়ে তিনি ছিলেন শংকিত । তারপরও অর্থমন্ত্রী তখনকার পরিস্থিতিতে দৃঢ়তার সাথে আশা পোষণ করেছিলেন যে, রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি অর্জনে তেমন প্রভাব ফেলবে না।
সে অনুযায়ী অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান এবং বিশ্বব্যাংক ও সিপিডিসহ থিং ট্যাংদের প্রক্ষেপণে প্রমাণিত হচ্ছে যে অর্থমন্ত্রীর আশাবাদ সঠিক ছিল।
সকল সংশয় এবং পূর্বাভাস অসত্য প্রমাণিত করে চলতি অর্থবছরে (২০১৪-১৫) ৬.৫১ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, দেশের অর্থনীতি বর্তমানে এমন শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে , যা বাইরের প্রতিঘাত সহ্য করার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ প্রতিকূলতাও সহ্য করার ক্ষমতা অর্জন করেছে।
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আগামী অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তিনি বাজেট ও আর্থিক নীতিমালায় বেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপ রেখেছেন।
অর্থমন্ত্রী ইতোমধ্যে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.২ থেকে ৭.৩ ভাগ নির্ধারনের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
অর্থমন্ত্রী পরিস্কার করেছেন যে, উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সরকার অবকাঠামো উন্নয়ন, গ্যাস ও বিদ্যুত উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, শিক্ষা,স্বাস্থ্যএবং অন্যান্য সামাজিক ও মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতকেও বাজেটে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে।
মুহিত সাংবাদিকদের বাজেট প্রসঙ্গে বলেন, আগামী অর্থবছরে বিদ্যুৎ ও পরিবহন খাতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার থাকবে। তবে মানবসম্পদ উন্নয়নে বিশেষ মনোযোগ দেয়া হবে।
মুহিত বলেছেন, আসন্ন বাজেটে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের মতো চলমান বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেটে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সামাজিক নিরাপত্তাবলয় খাতে উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ দিয়ে দারিদ্রতা হ্রাসের চলমান পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা হবে। ইতোমধ্যে দেশে দারিদ্র হার ২০ ভাগ হ্রাস পেয়েছে। অর্থমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন আগামী অর্থবছরের বাজেট ও আর্থিক নীতি অদূর ভবিষ্যতে দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সহযোগী ভূমিকা পালন করবে।
অর্থমন্ত্রী অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের দ্রুত বৃদ্ধি ঘটবে বলেও আশাবাদী। গত ৫ বছর ধরে এটি দুই শতাংশের ওপরে রয়েছে, যা পূর্ববর্তী বছরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি।
এর আগে তিনি বাজেট-পূর্ব আলোচনায় সাংবাদিকদের বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির ফলে ২০১৮ সালে বাজেটের আকার ৫ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছে যাবে। অবশ্য আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা হতে পারে। আর এটা চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ৫৬০ কোটি টাকা বেশী।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক) ইতোমধ্যে আগামী অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ৯৭ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করেছে। এটি চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক কর্মসূচির চেয়ে ২৯.৩৩ ভাগ এবং মূল বাজেটের বার্ষিক কর্মসূচির তুলনায় ২০.৭৭ ভাগ বেশী।
অর্থমন্ত্রী আগামী শুক্রবার বিকাল ৪টায় বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৯:০২ অপরাহ্ণ | জুন ০৩, ২০১৫