‘সড়ক কই দেখলাইন, সবটাইতো গাতা’
আজহারুল হক, গফরগাঁও ঃ ২৭ মে ২০১৫, বুধবার:
সড়ক কই দেখলাইন, সবটা জুইড়াইতো গাতা (গর্ত)। কিছুটা ছাড়াইয়া ছাড়াইয়া এহেকটা (একেকটা) গাতা যেন গাতা নয় মনে অয় (হয়) এহেকটা (একেকটা) পুসকুনি। এই গাতা গুলাতে যহন কোন গাড়ী পড়ে তহন (তখন) গাড়ীর সব পেসেনজার (যাত্রী) নামাইয়া ১০/১২ জনে মিইল্যা (মিলে) গাড়ীডারে ঠেইল্লা তুলতে অয়। আমগর (আমাদের) এলাকার নেতারা ইলেকশন আইলে তাদের চোহে খালি আমগর ভোটগুলাই বাসে। সড়হের এই বড় বড় গাতা গুলান তাদের চোহে বাসেনা। এভাবেই কথাগুলো বললেন উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের নূতন মিয়া।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গফরগাঁও-হোসেনপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ১১ কিলোমিটার জুড়ে একটু পর পর সীলকোট, কংকর, ইট, পাথর উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য বড় বড় গর্তের। সৃষ্ট গর্তগুলো সামান্য বৃষ্টিতেই ছোট ছোট পুকুরের আকার ধারণ করে। সড়কটির পৌর শহরের উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন ইমামবাড়িতে পাশাপাশি ৩টি, টিএনন্টি অফিস সংলগ্ন এলাকায় ৪টি, তেতুলিয়া বাজারে ৩টি বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সৃষ্ট গর্তে পড়ে প্রতিনিয়ত উল্টে যাচ্ছে, ভেঙ্গে যাচ্ছে, বিকল হচ্ছে যাত্রী ও মালবাহী গাড়ি। ঘটছে দুর্ঘটনা, আহত ও নিহত সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। নিত্যদিন চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন শ্রমিক, ড্রাইভার, গাড়ীর মালিক ও ব্যবসায়ীরা। বিকল্প আর কোন সড়ক না থাকায় মৃত্যুর ঝুকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে গফরগাঁও, হোসেনপুর, পাকুন্দিয়া ও কিশোরগঞ্জ জেলার একাংশের হাজারো যাত্রী প্রতিদিন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করে থাকেন।
ইমামবাড়ি এলাকার হাফিজুল ইসলাম বলেন, যাত্রীবাহী গাড়ি দিয়ে গফরগাঁও থেকে হোসেনপুর কিংবা কিশোরগঞ্জে যাওয়ার সময় দোয়া কালাম ও আল্লাহর নাম জব করতে করতে যেতে হয়।
উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের আবুল কালাম বলেন, গফরগাঁও-হোসেনপুর সড়কের এমন করুন দশা যে, অল্প বৃষ্টিতে সৃষ্ট বড় বড় গর্তগুলো ভরে গিয়ে পানি জমে থই থই করে।
গফরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামছুল আলম খোনক বলেন, গফরগাঁও থেকে খুরশিদ মহল সেতু পর্যন- ১১ কিলোমিটার রাস্তা তমধ্যে ৭/৮ কিলোমিটার রাস্তা খুবই ঝুঁকিপূর্ন। এই ৭/৮ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার হলে প্রতিদিন এ সড়কে চলাচলকারী হাজারো মানুষের দূর্ভোগ লাঘব হবে।
গফরগাঁও-হোসেনপুর সড়কের বেহাল দশার কথা স্বীকার করে ময়মনসিংহের সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আল মামুন বলেন, সড়কটি মেরামতে আমরা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আগামী অর্থবছরের সড়কটির ২১ কিলোমিটার নতুন করে মেরামত করা হবে।