| সকাল ১০:০৯ - শনিবার - ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

৯২ দিন ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফুটাতে পারেনি খালেদা—–ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির এমপি

সাজ্জাতুল ইসলাম সাজ্জাত,২১ মে, বৃহস্পতিবার,
সাবেক স্বাস’্য প্রতিমন্ত্রী ও গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব ডা, ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির এমপি বলেছেন, ৯২ দিন ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফুটাতে না পেরে খালেদা জিয়া শূন্য হাতে ঘরে ফিরেছেন। তার আন্দোলন ভেসে- গেছে। আজ  বৃহষ্পতিবার গৌরীপুর উপজেলার অচিন-পুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলণে শাহগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে বঙ্গবন্ধু মঞ্চে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এখন বেইল নাই। কারণ সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। খালেদা জিয়ার নির্দেশে ২০১৩ সালব্যাপী ছাত্রদল-ছাত্রশিবির সন্ত্রাসীদের দেশব্যাপী জ্বালাও-পোড়াও কর্মকান্ড, মানুষ হত্যা, সংখ্যালঘু হিন্দু সমপ্রদায়ের মানুষকে হত্যা, নারী নির্যাতন, তাদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ- ৯ মাস এমনি আত্মঘাতী কর্মকান্ড চালানো হয়। শেখ হাসিনা সংবিধান অনুযায়ী ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়ে ৫৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেয়, খালেদা জিয়ার সন্ত্রাসীরা প্রিসাইডিং অফিসার হত্যা, পুলিশ হত্যার মতো ঘটনা ঘটিয়েও নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি। এ বছরের জানুয়ারিতে নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে আবার সন্ত্রাস শুরু করে। এবার শুরু করে পেট্রোলবোমা। নিজেকে গুলশান কার্যালয়ে স্বেচ্ছা অবরোধ করে প্রতিনিয়ত পেট্রোলবোমায় ৯২ দিনে দেড় শতাধিক মানুষ হত্যা, দেড় সহস্রাধিক গাড়ি পোড়ানোসহ হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস করেও কোন সুফল ঘরে তুলে নিতে ব্যর্থ হয়ে রণে ভঙ্গ দেন এবং স্বেচ্ছা অবরোধ তুলে ঘরে ফিরে যান। চৌকস রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এবার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন দিলে খালেদা জিয়া নাকে খত দিয়ে তাতে অংশ নেন, কিন’ জনগণ সন্ত্রাসিনীকে প্রত্যাখ্যান করে। নির্বাচিত তিনটি সিটি কর্পোরেশনেই হন শেখ হাসিনার প্রার্থীরা জয়ী হন। খালেদা আরেকটি ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে ঘরে ফেরেন। ৯২ দিন কী ভয়াবহ পরিসি’তি ও আতঙ্ক গোটা দেশকে সহ্য করতে হয়েছে। তারপরও খালেদা জিয়া দিব্যি রাজনীতি করছেন! কী বিচিত্র এই দেশ, সেলুকাস? এমনি অনেক কাহিনী আছে। বিশেষ করে খালেদা জিয়া বাংলাদেশ ও বাঙালী জনগণের জন্য দুষ্টগ্রহ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, কিন’ অর্জন বলুন, সাফল্য বলুন, ব্যাগ শূন্য। পক্ষানত্মরে রাষ্ট্র পরিচালনায় তথা দেশের আর্থ-সামাজিক, সংস্কৃতিচর্চা ও উন্নয়নে শেখ হাসিনা দৃপ্ত পদভারে এগিয়ে চলেছেন। আর খালেদা জিয়া চেয়ে চেয়ে দেখছেন আর জ্বলছেন। জ্বলতে তো হবেই। এক মেধাবী সুশিক্ষিতা ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সুশীল পরিবেশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এবং সর্বোপরি আন্দোলনের মধ্যে বড় হওয়া শেখ হাসিনার সঙ্গে খালেদা জিয়ার তুলনা হয় না। তার বুদ্ধির ফেরিওয়ালারাও এখন ক্লানত্ম।

বর্তমান সরকারের সফলতা উলেস্নখ করে এমপি মজিব বলেন, শেখ হাসিনার সাফল্যের তালিকা অনেক অনেক দীর্ঘ, যার কয়েকটি এখানে উলেস্নখ করতে চাই- এক. আজ বাংলাদেশ চাল রফতানি করছে শ্রীলঙ্কায়। খাদ্য উৎপাদনে অনেক বেশী। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এবং মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। এখন একজন শহুরে রিক্সাওয়ালা বা গ্রামীণ দিনমজুরও দিনে যথাক্রমে ৬০০-৮০০ টাকা রোজগার করে। শিক্ষার হার বেড়ে ৭০% এ উন্নিত। বছরের প্রথম দিন ৩৪ কোটি পাঠ্যবই বিতরণ। জাতীয় প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। দেশে একটি মানুষও এখন আর না খেয়ে থাকে না। শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা (পুত্র) সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশ এরই মধ্যে ডিজিটালাইজড হয়ে গেছে। এখন ঘরে ঘরে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে কম্পিউটার। ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১২ কোটি সেলফোন ব্যবহার করছে। জনবহুল রাজধানী ঢাকায় নান্দনিক হাতিরঝিল নির্মাণ। যানজট হ্রাসে মহানগরব্যাপী একটার পর একটা ফ্লাইওভার, শাহজালাল আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মূল ঢাকার দিকে চলার পথে হাত-পা ছড়িয়ে ফ্লাইওভারগুলো যেভাবে এদিকে-ওদিকে চলে গেছে, তাতে ঢাকার চেহারা পাল্টে দিয়েছে, মনে হয় কোন উন্নত দেশে আছি। এখন হচ্ছে এলিভেটেডওয়ে, মেট্রোরেলের কাজ। কিছু মানুষের চক্রানেত্ম পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ করার উপক্রম হয়েছিল। কিন’ সাহসী বাবার সাহসী কন্যা শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংকের রক্তচক্ষু তোয়াক্কা না করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করছেন, কাজ এগিয়ে চলছে। সর্বোপরি শেখ হাসিনা যে কাজটি সফলভাবে করেছেন তা হলো- মুক্তিযুদ্ধের ধারায় বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনা। চক্রান- আছে, হয়ত ভবিষ্যতেও হবে। কিন’ দেশের নেতা যেখানে শেখ হাসিনা, সেখানে মানুষ স্বপ্ন দেখবে, স্বপ্ন বাসত্মবায়ন করবে, দেশ এগিয়ে যাবে, যাচ্ছে, এটাই স্বাভাবিক। ব্যক্তি জীবনেও শেখ হাসিনা ও স্বামী অণুবিজ্ঞানী ড. এম ওয়াজেদ মিয়ার দুই সনত্মান আজ আনত্মর্জাতিকমানের ব্যক্তিত্ব। পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় আনত্মর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন তথ্য প্রযুক্তিবিদ, কন্যা সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল জাতিসংঘের অটিস্টিক বিশেষজ্ঞ। একমাত্র ছোট বোন শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক আজ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নির্বাচিত সদস্য। ছেলে ববিও উচ্চশিক্ষিত। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা-শেখ রেহানার সনত্মানরা আজ বাঙালী তো বটেই, বিশ্বব্যাপী তরুণ-তরুণীদের অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব।
তিরি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র ও জীবনের ঝুঁকি মোকাবেলা করেও নিরলস কাজ করে চলেছেন এবং আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও মানব উন্নয়নে তাঁর সাফল্য গগনচুম্বী। ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় এসে কয়েকটি বড় কাজ করেছেন- বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করে জাতিকে পাপমুক্ত করা, ৪০ টন খাদ্য ঘাটতি নিয়ে শুরম্ন করে তখনই কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে ঘাটতি পূরণ করে দেশকে খাদ্য উদ্বৃত্ত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা, ১৯৯৮-এর ভয়াবহ বন্যায় ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা’ বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে ‘রোল মডেল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
উক্ত সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়াম লীগের সাধারণ সম্পাদক বিধু ভুষণ দাস, সিনিয়র সহসভাপতি ডা, হেলাল উদ্দিন আহম্মদ, অধ্যক্ষ রুহুল আমিন, যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক ম.নুরম্নল ইসলাম, ইকবাল হোসেন জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল মুন্নাফ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জসিম উদ্দিন আহম্মদ, কৃষকলীগের সভাপতি আবুল হাশেম, সিরাজুল ইসলাম সরকার, আবুল কাশেম লস্কর বেপারী, সুহেল আহম্মদ, শহীদুল ইসলাম অন-র, সোমনাথ সাহা, মনিরুজ্জামান বিপ্লব, সাহাবুল আলম প্রমুখ। সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় আব্দুর রাজ্জাক সভাপতি ও শহিদুল ইসলাম অন-র সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৯:৪০ অপরাহ্ণ | মে ২১, ২০১৫