অন লাইন ডেস্ক, ২০ মে ২০১৫, বুধবার,
গত রবিবার ১৭ই মে নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটানে আপার ওয়েষ্ট সাইডে একটি বহুতল ভবনের জানালার কার্নিশ ভেঙ্গে নীচে পরে গেলে রাস্তায় থাকা দুই বছরের কন্যাশিশু গ্রিটা গ্রীন ও তাঁর নানী ৬০ বছর বয়স্কা সুসান ফ্রিয়ারসন মারাত্বকভাবে আহত হন। জরুরী দমকল বাহিনী তাদের নিকটতম নিউইয়র্ক প্রেসবাইটেরিয়ান উইএল কর্নেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। প্রচন্ড আঘাত লাগার কারণে জরুরী অস্রপচার করা হয়েছিল গ্রিটা গ্রীনের মাথায় কিন্তু ১৮মে সোমবার সকালে তাকে বাচানো সম্ভব নয় বলে ডাক্তার জানালে গ্রীটার স্মৃতি বাচিয়ে রাখতে পিতামাতা তাঁর “কিডনি, লিভার ও হার্ট” সহ অন্যান্য অংগ মানবতার কল্যানে দান করার সিদ্ধান্ত নেন। এমন ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের কারণে গতকাল নিউইয়র্কের সকল সংবাদ মাধ্যম গ্রিটা গ্রীনের সংবাদটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বারংবার প্রচার করতে থাকে। অনেক শিশু অকালে মারা গেলেও গ্রিটা গ্রীনের মত এমন মর্মান্তিক মৃত্যু এবং পিতামাতার এমন সিদ্ধান্তের কথা শুনে অনেকেই অঝোরে কেদেছেন! ব্রুকলীন নিবাসী শিশুকন্যা গ্রীটা গ্রীন তাঁর নানীর কাছে ম্যানহাটানে বেড়াতে এসে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন। গ্রিটার বাবা জেইসন গ্রীন পিচফর্ক ডটকম নামের একটি সংগীত ওয়েবসাইটের সম্পাদক ও মাতা স্টেইসি ফ্রিয়ারসন গ্রীন একটি প্রাইভেট কম্পানীর কনসালটেন্ট হিসাবে কাজ করেন।
শিশু কন্যা গ্রিটা গ্রীনের শরীরের অংগ মানবতার কল্যানে দান করলেন ষ্টেইসি ও জেইসান!
গ্রীটাকে হাড়িয়ে পায়ে প্রচন্ড আঘাত প্রাপ্ত নানী সুসান ফ্রিয়ারসন পিবিসি টুয়েন্টিফোর ডটকম সম্পাদক মতিউর রহমান লিটুকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেনঃ “আমার অন্তরে যে আঘাত পেয়েছি সে তুলনায় পায়ের আঘাত কিছুই না! আমার কোলে থাকা গ্রিটা এভাবে চলে যেতে বাধ্য হবে কোনদিন ধারনা করিনি। আমার মেয়ে ষ্টেইসি ও জামাতা জেইসন গ্রিটার শরীর মানবতার কল্যানে দান করে দিয়ে আমাকে গর্বিত করেছে। আমার মেয়ে বলে নয় ওদেরকে আমি এখন থেকে মহামানব ও মহামানবী বলে সম্মান করব। আমার নাতীর কারণে বেশ কয়েকজন শিশু পৃথিবীতে নতুনভাবে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবে এটাই এখন আমার বড় সান্তনা!” সকল মিডিয়া এড়িয়ে গেলেও পিবিসি সম্পাদকের সাথে খোলামেলা কথা বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নানী সুসান ফিয়ারসন। আজ বুধবার নিউইয়র্কের বিভিন্ন গির্জায় গ্রিটার আত্মার জন্য প্রার্থনা করা হবে বলে জানানো হয়।
উল্লেখ্য বহুতল ভবন থেকে জিনিষপত্র নীচে পড়ে যাওয়ার কারণে শুধু ম্যানহাটানেই গড়ে প্রতিবছর ৯ ব্যক্তির প্রানহানী হয়ে থাকে বলে জানাগেছে।পিবিসি নিউজঃ