মুরসির মৃত্যুদণ্ডে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন
অনলাইন ডেস্ক,১৭ মে ২০১৫, রবিবার:
মিশরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির বিরুদ্ধে দেশটির আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
শনিবার (১৬ মে) কায়রোর অপরাধ আদালত (ক্রিমিনাল কোর্ট) ওই আদেশ দেওয়ার পর রোববার (১৭ মে) এ উদ্বেগ জানায় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর।
২০১১ সালে কারাগার ভেঙে বন্দি ছিনতাইয়ের মামলায় মুরসিসহ ১০৬ জনকে শনিবার মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। ঘোষণার পরপরই এ দণ্ডাদেশের নিন্দা জানান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তায়্যিব এরদোয়ান। নিন্দা জানায় মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও। তাদের নিন্দার একদিন পর এ সমালোচনা করলো যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট মুরসিসহ শতাধিক আসামির বিরুদ্ধে মিশরের আদালতের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই গণবিচার ও গণদণ্ডের অনুশীলনের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছে, যেটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি মিশরের দায় ও তাদের আইনের শাসনের প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাবিরোধী’।
স্থানীয় আইন অনুযায়ী, ঘোষণার পর এখন এ বিষয়ে মতামত চাইতে সর্বোচ্চ ধর্মীয় কর্তৃত্বধারী গ্র্যান্ড মুফতির কাছে রায় পাঠানো হবে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে তার অনুমোদন নিতে হয়। রায়ের বিষয়ে মতামতের পাশাপাশি রাষ্ট্রের করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেবেন তিনি। তার পরামর্শের পর আগামী ২ জুন মামলার চূড়ান্ত দণ্ড ঘোষণা করা হবে। অবশ্য, প্রাথমিক ও চূড়ান্ত উভয় রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ থাকছে মুরসিসহ দণ্ডপ্রাপ্তদের জন্য।
এদিকে, মুরসিসহ নিষিদ্ধঘোষিত কট্টরপন্থি ব্রাদারহুডের ১০৬ জনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের এ রায়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনারই সমালোচনা করছেন বিশ্লেষকরা। অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের এ উদ্বেগকে লোক দেখানো বলেও উল্লেখ করছেন।
তারা বলছেন, রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনার অভিযোগে মিশরের ইতিহাসের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসিকে সেনাবাহিনী যখন অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত করে, তখন তার তাৎক্ষণিক নিন্দা জানালেও সামরিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেই কাজ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় ওয়াশিংটন। উপরন্তু মিশরীয় সেনা কর্তৃপক্ষকে সৌদি সরকারসহ বিভিন্ন পশ্চিমা মিত্রদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নানামুখী সহযোগিতার খবর পাওয়া যায় সংবাদমাধ্যমে এবং সেসব খবর এখনও আসছে।
মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করা সেনাপ্রধান ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবেদল ফাত্তাহ এল-সিসির সরকারের সময়ে আদালতের এ দণ্ডাদেশে উদ্বেগ জানানো যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখী আচরণেরও বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করছেন কেউ কেউ।