| রাত ৯:৪৭ - শুক্রবার - ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

গৌরীপুরে জনবল সংকটে দুটি রেল স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ,নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার সম্পদ

সাজ্জাতুল ইসলাম সাজ্জাত, গৌরীপুরঃ
জনবল সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে ময়মনসিংহ-গৌরীপুর রেলপথের বিসকা রেল-স্টেশন ও ভৈরব-চট্টগ্রাম রেলপথের বোকাইনগর রেল স্টেশনটি। দীর্ঘদিন ধরে ওই দু’স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে রেলওয়ের সম্পদ। নষ্ট হয়ে হচ্ছে কোটি টাকার মূল্য জিনিসপত্র। আর এলাকার প্রভাবশালীরা দখলে নেমেছেন রেলের সম্পত্তি দখলের প্রতিযোগীতায়। অফিস আছে, কোয়াটার আছে নেই শুধু কোন জনবল। রেলওয়ে ওই ভবনগুলো এখন গাঁজাখোর, জুয়ারী, মাদকসেবী আর ভাসমান পতিতাদের আবাসস’লে পরিণত হয়েছে। এ দুটি স্টেশনে ট্রেন থামে। যাত্রী উঠা-নামা করে। কিন্তু নেই টিকেট।
গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর রেলওয়ে স্টেশনে প্রতিদিন ভৈবর ও ময়মনসিংহগামী চারটি ট্রেন যাত্রা বিরতি দেয়। রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের জন্য বসার আসন, রেলের স্লিপার, রেললাইন ইতিমধ্যে চুরি হয়ে গেছে। লুটপাট চলছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবন, রেলওয়ে জংশনের অফিস ভবনের মূল্যবান জিনিসপত্র। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, স্টেশনের মাস্টার, বুকিং মাস্টারের রুমগুলো এখন ভাসমান পতিতা আর নেশাখোরদের আবাসস’ল। দিনের বেলাও এখানে চলে গাঁজা, মাদক বিক্রিসহ নানা অপকর্ম।
তারাকান্দা উপজেলার বিসকা রেলওয়ে স্টেশনের কক্ষগুলোতে ঝুলছে তালা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবনগুলো অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। এ স্টেশনে জারিয়া, মোহনগঞ্জ, ভৈরবগামী ১৬টি ট্রেনের যাত্রী উঠানামা করে। আন্তঃনগর হাওর ও আন্তঃনগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন অতিক্রমের সময় উড়ে না লাল-সবুজের পতাকা। যাত্রীদের টিকেট ছাড়া উঠতে বাধ্য হচ্ছেন। আবার ট্রেনে উঠে ভ্রামমাণ আদালত বা টিকেট চেকারদের নিকট দিতে হচ্ছে দ্বিগুনের বেশী ভাড়া। জনবল সংকটে এ স্টেশনে রেলক্রসিং না হওয়ার কারণে প্রতিটি ট্রেন প্রায় একঘন্টা গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন বা শম্ভুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে আটকে থাকতে হচ্ছে। এ দু’টি স্টেশনে নেই কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মোঃ তারেক দৈনিক লোক লোকান্তরকে জানান, বোকাইনগর রেলওয়ে স্টেশনে বুকিং মাস্টার তিনজন, পোর্টার ম্যান একজন, সুইপার একজন ও বিসকা স্টেশনে মাস্টার তিনজন, পয়েসম্যান ছয়জন, পোর্টার ম্যানে দুইজন ও দুইজন সুইপারের পদ রয়েছে। তবে শুধুমাত্র বিসকা স্টেশনে একজন পয়েসম্যান আছে। জনবল সংকটের কারণে দু’স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে সিএসএম দুইজন, পয়েসম্যান পাচঁজন, পোর্টার তিনজন, বুকিং ক্লার্ক তিনজন, সুইপার দুইজন, টিসি সাতজন, সাংটিং ছয়জনের পদ শূন্য থাকায় যাত্রীসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে।
দু’টি স্টেশনে জনবল নিয়োগের দাবিতে মানব বন্ধন, ট্রেন অবরোধসহ নানা কর্মসূচী পালন করেছে এলাকাবাসী। গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি আব্দুল মতিন মাস্টার জানান, দু’টি স্টেশনে জনবল সংকটের কারণে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে আর যাত্রীরা চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ২:৪৬ অপরাহ্ণ | মে ১৭, ২০১৫