| সন্ধ্যা ৬:০৭ - শুক্রবার - ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

৩২৮ রানে পরাজিত হলো বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক |৯ মে ২০১৫, শনিবার:

পরাজয়টা ছিল অবধারিত। তবে কত ব্যবধানে আর কত সময়ের মধ্যে ঘটে সেটাই ছিল দেখার বিষয়। শেষ পর্যন্ত দেড়দিন হাতে রেখেই ঢাকা টেস্টে জয় তুলে নিল পাকিস্তান। আর পুরো ম্যাচজুড়ে একের পর এক ভূলের খেসারত দিয়ে বাংলাদেশ পরাজিত হলো ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে। দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের জন্য ৫৫১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশ অলআউট হলো ২২১ রানে।

৫৭তম ওভারের পঞ্চম বলে জুনায়েদখানের ওভারে শুভাগত হোম বোল্ড হওয়ার সাথে সাথেই যবনিকাপাত ঘটলো ঢাকা টেস্টের। পুরো সফরে শেষটা জিতে ১-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ জিতে দেশে ফিরবে মিসবহা-উল হকের পাকিস্তান। আর পুরো সিরিজে অসম্ভব দাপট দেখানো বাংলাদেশ, মিরপুর টেস্টে এসে দেখাল খুবই বাজে পারফরম্যান্স। যার খেসারত দিতে হলো ৩২৮ রানের বিশাল পরাজয়ের মধ্য দিয়ে।

বিশাল রানের পাহাড়ে চাপা পড়ে বলতে গেলে দিশেহারা মুশফিকুর রহিমের দল। তৃতীয় দিন শেষেই পাকিস্তানের চেয়ে ৪৮৭ রান পিছিয়ে বাংলাদেশ। জিততে হলে রীতিমত অসাধ্য সাধন করতে হবে। সে প্রত্যয় তৃতীয় দিন বিকালেই দেখিয়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। কিন্তু চতুর্থ দিন শুরুতেই তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়তে শুরু করলো টাইগারদের ব্যাটিং লাইন।

তৃতীয় দিনের সঙ্গে আজ সকালে মাত্র ২৩ রান যোগ করেই আউট হয়ে গেলেন তামিম ইকবাল। পাকিস্তানি পেসার ইমরান খানের বল খেলতে গিয়ে ঠিকভাবে ব্যাটেই লাগাতে পারেননি। কানায় লাগিয়ে উইকেটের পেছনে তুলে দিলেন সরফরাজ আহমেদের হাতে। ৬৭ বলে থেমে গেল তামিমের ৪২ রানের ইনিংস।

আশা ছিল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ওপর। বিশ্বকাপে অসাধারণ পারফরম্যান্সের পর পাকিস্তান সিরিজে তার কাছ থেকে ভালো কিছুরই প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু পুরো সিরিজেই যেভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিলেন, তা রীতিমত অবিশ্বাস্য। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান সিরিজের শেষ ইনিংসেই কিছু করে দেখানোর সুযোগ ছিল তার সামনে।

কিন্তু ৮৬ রানে ২ উইকেট পড়ার পর রিয়াদ মাঠে নেমে কোন দায়িত্বশীলতাই দেখালেন না। টেস্ট ম্যাচ আর ওয়ানডি কিংবা টি২০’র কোন পার্থক্যই তার কাছে যেন নেই। প্রতিটি বলেই খেলতে হবে। এমন কি, ভালো বল, খারাপ বল যাছাই করারই যেন কোন মানসিকতা তার মধ্যে নেই। যে কারণে মাত্র ২ রান করেই ইমরান খানের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে স্লিপে ইউনিস খানের হাতে ক্যাচ দিলেন রিয়াদ।

মুমিনুল হকের সঙ্গে জুটি গড়তে ক্রিজে আসেন সাকিব আল হাসান। প্রথম ইনিংসে ৮৯ রানে অপরাজিত থাকার কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে দায়িত্বশীল ব্যাটিংই সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশা তার কাছে।কিন্তু একি করলেন সাকিব! উইকেটে নেমেই যেন আউট হওয়ার জন্য ছটফট করা শুরু করেদিলেন। ফল যা হওয়ার তাই হলো। মাত্র ২০ বল খেলে ১৩ রান করেই আউট হয়ে গেলেন তিনি। মোহাম্মদ হাফিজের ঘূর্ণি বল ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন আকাশে। ওয়াহাব রিয়াজ তালুবন্দী করেন সেটা।

বাংলাদেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যানের প্রশ্ন উঠলে সবাই একবাক্যে রায় দেবেন মুশফিকুর রহিমের কথা। কিন্তু ঢাকা টেস্টে তিনিও কেমন যেন ব্শে ছটফটে। উইকেটে টিকে থাকারই কোন চেষ্টা নেই যেন তার মধ্যে। যে কারণে বিশাল রানের নীচে চাপা পড়ার পরও অধিনায়কের তাড়াহুড়া এবং ৯ বল খেলে কোন রান না করেই আউট হয়ে গেলেন তিনি। ইয়াসির শাহের বল বুঝতেই পারেননি। বোল্ড হয়ে গেলেন।

৪০ ওভারে ১৩৪ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় মুমিনুল হক এবং সৌম্য সরকার। লাঞ্চ থেকে এসে প্রথম ওভারেই আউট হয়ে গেলেন সৌম্য সরকার। পরের ওভারেই আউট ইনফর্ম মুমিনুল হক। ১০২ বলে ৬৮ রান করা মুমিনুলের অবশ্য দুর্ভাগ্য। ইয়াসির শাহকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে যান মুমিনুল। কিন্তু শট কভারে নীচু হয়ে আসা ক্যাচটি ঝাঁপিয়ে পড়ে তালুবন্দী করে নেন আসাদ শফিক।

শুভাগত হোমের সাথে ৩৪ রানের ৩৪ রানের জুটি গড়ে ভালোই জবাব দিচ্ছিলেন তাইজুল ইসলাম। কিন্তু স্পিনার ইয়াসির শাহের ঘূর্ণি বলে অবশেষে ক্যাচ তুলে দিলেন সামি আসলামের হাতে। ২৮ বলে ১০ রান করে ফিরে গেলেন তিনি।

মোহাম্মদ শহিদকে নিয়ে ৪৪ রানের জুটি গড়ে তোলেন শুভাগত হোম। কিন্তু ৩৯ রানে নিজেকে উইকেটে সেট করে ফেলার পরও জুনায়েদের ইয়র্কার বুঝতে না পেরে খেলতে যান। কিন্তু বল ফাঁকি দিয়ে তার স্ট্যাম্পে আঘাত হানে। সঙ্গে সঙ্গে শেষের পর্দাও টেনে দেয় ঢাকা টেস্ট।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৫:০৪ অপরাহ্ণ | মে ০৯, ২০১৫