| বিকাল ৩:৩৪ - শুক্রবার - ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

কুষ্টিয়ায় বেসরকারী উদ্যোগে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হবে-তথ্যমন্ত্রী ইনু

কুষ্টিয়া, ৮ মে, ২০১৫ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, কুষ্টিয়ায় বেসরকারী উদ্যোগে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষণার পরও কুষ্টিয়ার শিলাইদহে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী আজ এ কথা বলেন।
শিলাইদহ কুঠিবাড়ি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত স্থান উল্লেখ করে ইনু বলেন, জাতির পিতা রবীন্দ্রনাথকে কেন্দ্র করে শিলাইদহে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে ঘোষণার আলোকে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশেই সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বেসরকারী উদ্যোগে এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে। সেটাকেই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আজ শুক্রবার কবি গুরুর ১৫৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বেলা ১১টায় কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে তিন দিনব্যাপী জন্মজয়ন্তীর উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার আগে সাংবাদিকদের কাছে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
কুঠিবাড়ির আঙ্গিনায় স্থাপিত রবীন্দ্র মঞ্চে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্সেস টু ইনফরমেশন প্রকল্পের পরিচালক ও মহাপরিচালক কবির বিন আনোয়ার।
রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য ও জীবনাদর্শ নিয়ে স্বারক বক্তৃতা প্রদান করেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও গবেষক অধ্যাপক ড. আবুল আহসান চৌধুরী। শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথের অবস্থান ও তাঁর সাহিত্যকর্ম নিয়ে আলোচনা করেন বিশিষ্ট গবেষক এ্যাডভোকেট লালিম হক।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেন জাতীয় নারী জোটের আহবায়ক আফরোজা হক রিনা, পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম, জাসদ সভাপতি গোলাম মহসিনসহ স্থানীয় নেত্রীবৃন্দ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহেলা আক্তার।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চেতনা এ দেশ থেকে যেন মুছে না যায়, সে জন্য আগুণ সন্ত্রাসী খালেদা জিয়ার জঙ্গি ও আগুন সন্ত্রাসের কর্মকান্ডকে স¤পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে হবে।
তিনি বলেন, কবিগুরু আপাদমস্তক বাঙ্গালী ছিলেন বলেই তিনি বাংলাদেশের সম্পদ। কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ী একটি বিখ্যাত স্মৃতিবিজড়িত জায়গা এ জন্য যে, এখানে বসেই কবি তাঁর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কালজয়ী সৃষ্টিশীল কর্মগুলো সম্পন্ন করেছেন।
তিনি বলেন, এই বাংলার মাটিতে কবির অবস্থান এবং তাঁর সৃষ্টি কর্মে এখানকার রূপ-সৌন্দর্য তুলে ধরার মধ্যদিয়েই তিনি বিশ্ববাসীর কাছে নিজেকে বিশ্বকবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। আর এ কারণেই বঙ্গবন্ধু এখানে রবীন্দ্রনাথের স্মরণে একটি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষণা করেছিলেন। সে ঘোষণা মোতাবেক তাঁর সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এখানে বেসরকারী উদ্যোগে একটি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিন্ধান্ত নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘হে নতুন দেখা দিক আরবার প্রথমও জন্মেরও ক্ষণে’ কালজয়ী গানিটি পরিবেশিত হয়। পরে কুষ্টিয়া শিল্পকলা একাডেমী, কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমী, দৌলতপুর উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গান ও নাচ। সন্ধ্যার পরে রবীন্দ্রনাথের নাটক ও গীতিআলেখ্য মঞ্চায়িত হবে।
তিন দিনব্যাপী উৎসবে কুঠিবাড়ি আঙ্গিনা দর্শনাথী ও রবীন্দ্র ভক্তদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে।
কুঠিবাড়ীর বাইরেও বিশাল জায়গা জুড়ে বসেছে গ্রামীণ মেলা। সেখানে খই, মুড়ি, গরম জিলাপি, নাগোরদোলা, রবীন্দ্রনাথের ছবি সম্বলিত গেঞ্জি, টুপি, সিডি, গৃহসামগ্রী, কাঠের তৈরি নানা ঘরসাজানো জিনিসপত্র, শিশুদের খেলনাসহ হরেক রকম জিনিসের পসরা বসেছে।
এর আগে সকাল ৭টায় কুষ্টিয়া শহরের টেগর লজে কুষ্টিয়া পৌরসভার উদ্যোগে রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, গান, কবিতা পাঠের আসর বসেছিল। এতে পৌর মেয়র আনোয়ার আল সভাপতিত্বে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সরোয়ার মুর্শেদ রতনসহ আরো অনেকে বক্তৃতা দেন।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৬:২৮ অপরাহ্ণ | মে ০৮, ২০১৫