করিমগঞ্জে অগ্নিদগ্ধ গৃহবধু পাপিয়া মৃত্যু

আমিনুল ইসলাম বাবুল,
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নোয়াবাদ ইউনিয়নের উলুখলা গ্রামের গৃহবধু পাপিয়া আক্তার (২০) গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস’ায় মারা গেছেন। পাপিয়ার পারিবারিক সূত্র ও করিমগঞ্জ থানার ওসি মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাতে ঢাকায় লাশের ময়নাতদনত্ম করা হয়।
গত ২ মে (শনিবার) পাপিয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুনে ওই গৃহবধুর শরীরের প্রায় ৬৫ শতাংশ পুড়ে যায়। ওই দিন তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। ছয়দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লরে গত বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান। এ ব্যাপারে ২ মে রাতে পাপিয়ার বড় ভাই সিরাজুল ইসলাম বাদি হয়ে পাপিয়ার স্বামী,শ্বশুর-শ্বাশুরিসহ পাঁচজনকে আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ পাপিয়ার দেবর মাশেকুল হককে গ্রেপ্তার করেছে।
পারিবারিক সূত্র, পুলিশ ও স’ানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন প্রায় দুই বছর আগে মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে জেলার মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের বাসিন্দা নজির মিয়ার মেয়ে পাপিয়া আক্তারের সাথে করিমগঞ্জ উপজেলার নোয়াবাদ ইউনিয়নের উলুখলা গ্রামের আনোয়ারম্নল হকের পুত্র আশিকুল হকের। দেড় বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়।
পাপিয়ার শ্বশুড়বাড়ির লোকজন এ বিয়ে মেনে নেননি। ফলে প্রায়ই দেবর, শ্বাশুরিসহ অন্যান্যরা পাপিয়াকে মারপিট করতেন। এ নিয়ে পাপিয়া একাধিকবার তাঁর বাবা-মার কাছে অভিয়োগ করেন। ওইদিন পাপিয়ার শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে মারপিটের ঘটনা নিয়ে সালিশ হওয়ার কথা ছিল। কিন’, সালিশের আগেই পাপিয়ার শ্বশুরি,দেবরসহ কয়েকজন মিলে তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় এমন অভিযোগ করেন পাপিয়ার বাবা নজির মিয়া।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে পাপিয়ার বড় ভাই নজরম্নল ইসলাম গতকাল শুক্রবার বিকেলে বলেন,‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার আগে আমার বোন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা গেছে। রাতে লাশের ময়নাতদনত্ম করা হয়েছে। আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যার পর পাপিয়ার লাশ ঘাগড়া গ্রামে আমাদের পারিবারিক কবরস’ানে দাফন করা হবে’।
যোগাযোগ করা হলে করিমগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মো. বজলুর রহমান বলেন, পাপিয়ার পরিবারের পড়্গ থেকে তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। আগের দায়ের হওয়া মামলাটি হত্যা মামলায় রূপানত্মরিত করা হবে। পুলিশ ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের অচিরেই গ্রেপ্তার করা হবে’।