মুক্তাগাছার ঘোগা ইউনিয়নে কর্মসৃজন কর্মসূচীর ননওয়েজ খাতের অর্থ লোপাট

সিরাজুল হক সরকার, মুক্তাগাছা(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: মুক্তাগাছার ৭নং ঘোগা ইউনিয়নে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে কিংবা সামান্য কাজ করে কর্মসৃজন কর্মসূচীর ননওয়েজ খাতের অর্থ লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। কালভার্টের সামান্য কাজ করে ফেলে রেখেই সব টাকা নিয়ে নিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান। দীর্ঘদিন ধরে চলাচল অযোগ্য হয়ে রয়েছে রাস্তা। প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে সই করেও কিছুই জানেন না ইউপি মেম্বাররা। সঠিক তদন্ত পূর্বক সরকারী অর্থ আত্মসাতের বিচার দাবী এলাকাবাসীর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, উপজেলার ৭নং ঘোগা ইউনিয়নের হতরপাড়া-কালিকাপুর হয়ে জামগড়া রাস্তার কালিকাপুর গ্রামের ইয়াকুব আলীর বাড়ি সংলগ্ন দামছাইলা খালের ওপর একেবারে নিচু করে অর্ধ-নির্মাণ অবস’ায় একটি বক্সকালভার্ট দাড়িয়ে আছে। এর দুই পাশে মাটি না থাকায় কালভার্টটি চলাচলে অযোগ্য। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে কর্মসৃজন কর্মসূচীর ননওয়েজ প্রকল্পে ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা মঞ্জুর হয় কালভার্টটি নির্মাণে। ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লেবু প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য কানন বালাকে সভাপতি করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করান। সেখানে অতি নিম্নমানের কিছু ইট ও সামান্য কিছু রড ব্যবহার করে কোনমতে একটি কালভার্ট দাড় করানো হয়। কিন’ দুই পাশে মাটি না দেয়ায় দীর্ঘদিন ধরে তা চলাচলে অনুপযোগি হয়ে পড়ে আছে। ঐ ইউপি মেম্বারকে সভাপতি করা হলেও তিনি নিজেই ননওয়েজ খাত কি তা জানেন না এবং বুঝেন না বলে জানান। ফলে ইউপি চেয়ারম্যান নিজেই সকল টাকা নিয়ে শুধুমাত্র তাকে দিয়ে সই করিয়ে নিয়েছেন বলে তিনিসহ একাধিক মেম্বার জানান। চেয়ারম্যানের ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক লোক জানান রাস্তাটি দিয়ে আগে কষ্ট করে হলেও চলাচল করা যেতো কিন’ এখন সেটিকে অকেজো করে রাখা হয়েছে। এজন্য তারা ইউপি চেয়ারম্যান, পিআইও এবং প্রকল্প সভাপতিকে দায়ী করে তদনত্মপূর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ঠিকাদার জানান যে ধরনের কাজ করা হয়েছে তাতে সর্বোচ্চ ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। বাকি টাকা লোপাট হয়েছে। একই অবস্থায় ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ে ৭ নং ও ৩ নং ওয়ার্ডেও পৃথক দুটি ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে প্রায় ৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়াগেছে। বাসত্মবে মাঠে প্রকল্পের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার হেলাল উদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন প্রকল্পের কথা জানেন না বলে জানান। নাম গোপন রাখার অনুরোধ জানিয়ে অপর তিন ইউপি সদস্য জানান চেয়ারম্যান কাউকে তোয়াক্কা না করে যাচ্ছে তাই করে যান। বর্তমানে জেলে থেকেও মহিলা মেম্বার কানন বালাকে দিয়ে নিজের ইচ্ছা মতো কাজ করিয়ে যাচ্ছেন তাদের করার কিছুই নেই। এব্যাপরে উপজেলা প্রকল্প বাসত্মবায়ন কর্মকর্তা বলেন, সামনের সময়ে কর্মসৃজন কর্মসূচির মাধ্যমে কালভার্টের দুই পাশে মাটি ভরাট করে রাস্তা চলাচল উপযোগি করা হবে। সহিংসতা ও মুরগির বাচ্চাসহ গাড়ী পোড়ানো মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লেবু জেলে থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।