| সকাল ৬:০৯ - শনিবার - ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ - ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

মুক্তাগাছায় ব্যক্তি মালিকানা গভীর নলকূপ সমিতির নামে সংস্কার দেখিয়ে সরকারি ৪ লাখ টাকা তছরূপ

 

সিরাজুল হক সরকার: মুক্তাগাছা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার, সমিতির ম্যানেজার ও এলাকা পরিদর্শক যোগসাজসে গড়বাজাইল পূর্বপাড়া কৃষক সমবায় সমিতি লিঃ এর গভীর নলকূপ সংস্কারের নামে সরকারি ৪ লাখ ২ হাজার টাকা তফরূপ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা সেচ কমিটি সভাপতির বরাবরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে জানা যায়, গড়বাজাইল পূর্বপাড়া কৃষক সমবায় সমিতি লিঃ ১০৮নং গভীর নলকূপটি উক্ত মৌজায় ১২৯৭ দাগে স্থাপন করা হয়েছিল। সমিতির ম্যানেজার হিসাবে ২০০৫ সালে হাসমত আলী দায়িত্ব পাওয়ার পর জাল স্বাক্ষর মূলে ভূয়া রেজুলেশন দেখিয়ে জায়িয়াতির মাধ্যমে উপজেলা সেচ কমিটি বরাবরে পুনঃ খননের প্রস-াব পাঠায়। সে প্রেক্ষিতে ০৪/১২/২০০৫ ইং তারিখ অত্র মৌজায় ৭৯৪ দাগে পুনঃ খননের জন্য উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার মতামত পেশ করেন। এদিকে সেচ কমিটির অনুমোদনের পূর্বেই ম্যানেজার হাসমত আলী গভীর নলটি বিক্রির উদ্দেশ্যে অফিসকে না জানিয়ে উত্তোলন করে অন্যত্র বিক্রির পায়তারা চালায়। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার অবহিত হয়ে পল্লী উন্নয়ন অফিসারকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার স্মারক নং- মুক্তা/৫১২ তাং- ২০/১২/২০০৫ ইং তারিখ ওসি মুক্তাগাছা কে গভীর নলকূপটি উত্তোলনের কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন। কিন’ ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন উত্তোলন করা শেষ। পরবর্তীতে উত্তোলনকৃত গভীর নলকূপটির মালামাল জব্দ করে স্থানীয় ফজলুল হক মেম্বারের হেফাজতে রেখে আসেন। পরবর্তীতে গভীর নলকূপটি ৭৯৪ দাগে স্থাপন করার কথা বলে তা গোপনে বিক্রি করে দেন। প্রকৃতপক্ষে ৭৯৪ দাগে কোন গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয় নাই। সমপ্রতি গড়বাজাইল পূর্বপাড়া কৃষক সমবায় সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে গভীর নলকূপটি মেরামত ও সংস্কারের নামে ৪ লাখ ২ হাজার টাকা উত্তোলনের পায়তারা করছে। এলাকায় ঘুরে জানা যায় প্রকৃতপক্ষে সমিতির গভীর নলকূপটি বিক্রি করা হয়েছে। সমিতির নামে বাস-বে কোন গভীর নলকূপ নাই। তবে অত্র এলাকা হাসমত আলী গংদের নামে ৬ ইঞ্জি ব্যাসার্ধের পাইপের একটি মিনি গভীর নলকূপ ব্যক্তি মালিকানায় রয়েছে যাহা সাব মার্সেবল দ্বারা পানি উত্তোলন করে এলাকায় কিছু জমি আবাদ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে এ মিনি গভীর নলকূপটি ব্যক্তি মালিকানায় পরিচালিত যাহার অংশীদার ফজলুল হক মেম্বার, আব্দুল হাই, মিজানুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান ও হাসমত আলী। একটি চক্রের যোগ সাজুসে ব্যক্তি মালিকানা গভীর নলকূপটিকে বিআরডিবি’র আওতাভুক্ত দেখিয়ে সরকারি ৪ লাখ ২ হাজার টাকা তসরূপ করছে। এ ব্যাপারে তদন্ত উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসারের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, সেচ সমপ্রসারণ প্রকল্প কর্মসূচির আওতায় প্রকল্প পরিচালকের মাধ্যমে গভীর নলকূপের সংস্কারের কাজ চলছে। তিনি জানান, ০২ ডিসেম্বর, ২০১৪ সালে আমি এখানে যোগদান করি। আমি ২ বার প্রকল্পের কাজ দেখতে গেছি। আরও জানান, সমিতির কাগজপত্র অনুসারে ঠিক আছে। রেজুলেশনে গভীর নলকূপের স্থানের দাগ নম্বর উল্লেখ নেই। উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ এর চেয়ারম্যান জানান, ২০০৫ সালে আমি অত্র ইউসিসিএ লিঃ এর চেয়ারম্যান ছিলাম। তখন এ গভীর নলকূপটি বিক্রি করার পায়তারা হয়েছিল পরে পুলিশ গিয়ে মালামাল জব্দ করে রেখে আসে। পরবর্তীতে সেখানে গভীর নলকূপ স্থাপন হয়েছে বলে আমার জানা নাই। তবে বর্তমানে যে মিনি গভীর নলকূপটি দেখানো হচ্ছে এটা ব্যক্তি মালিকানা। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতেও মিনি গভীর নলকূপ হিসেবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। সংস্কার কাজ করতে হলে সমিতির নামে রেজিস্ট্রি করা জমি থাকার বিধান থাকলেও এখানে তা মানা হয়নি। অথচ সরকারি ভাবে ব্যক্তি মালিকানায় মিনি গভীর নলকূপকে গভীর নলকূপ দেখিয়ে সরকারি অর্থে সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন- করলে প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে।

সর্বশেষ আপডেটঃ ৯:২২ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ২৯, ২০১৫